সুস্থ হোন, সুস্থ থাকুন

ঢাকা থেকে জেবুন নেসা

“ভবিষ্যতের চিকিৎসক রুগীকে ওষুধ না দিয়ে তাকে শেখাবেন শরীরের যত্ন নেয়া, সঠিক খাদ্য নির্বাচন, রোগের কারণ নির্ণয় ও তা প্রতিরোধের উপায়।” -টমাস আলভা এডিসন, মার্কিন আবিষ্কারক
এডিসন যে ভবিষ্যদ্বানী করেছিলেন তা আজ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলেও শরীরের যত্ন, খাদ্যাখাদ্য বিচার ও রোগ ঠেকানোর ব্যাপারে আমরা এখনও যথেষ্ট সচেতন নই। তাই বিভিন্ন মানবদরদী চিকিৎসক ও গবেষকের পরামর্শেে ওপর ভিত্তি করে কিছু লেখার এ ক্ষুদ্র প্রয়াস।
১. উপযুক্ত ব্যায়াম ও খাদ্যাভ্যাস এবং প্রফুল্ল মনই হচ্ছে সুস্থ থাকার চাবিকাঠি। আসলে আমাদের জীবনে এত দুশ্চিন্তা বা টেনশন থাকে যে, আমরা হাশিখুশি থাততে পারি না। অথচ কথায় আছে, ক্যান্সারে যত না কবর ভরেছে তার চেয়ে বেশী ভরেছে টেনশনে। সুতরাং ভালভাবে বঁচতে চাইলে মনকে প্রফুল্ল রাখতে হবে। এজন্য ভাল চিন্তা ও ভাল কাজের কোনো বিকল্প নেই। সেই সাথে নিজেকে জড়াতে হবে কোনো না কোনো সৃজনশীল কাজের সাথে।
২. চার বছর বয়স থেকেই ব্যায়াম শুরু করা উচিত। ব্যায়্যাম অনেক রকম। যেমন হাঁটা, সাঁতার কাটা ও দৌড়-ঝাঁপ ইত্যাদি ব্যায়াম, সাইকেল কিংবা অন্যান্য যন্ত্রপাতি চালিয়ে ও ভারি কিছু ওপরে তোলার মাধ্যমে ব্যায়াম, দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ মালিশের দ্বারা ব্যায়াম এবং দেহকে বিশেষ ভঙ্গিমায় স্থির রেখে যোগ ব্যায়াম। সব ব্যায়ামেই উপকার হবে। তবে বয়স, শারীরিক অবস্থানুযায়ী প্রয়োজন, পরিবেশগত সুবিধাম সময়ের সীমাবদ্ধতা ও মানসিক প্রবণতার কথা ভেবে ব্যায়াম বেছে নেয়া ভাল। কিন্তু কিছু ব্যায়াম আছে যা একবারে শয্যাশায়ী বা চলাফেরায় অক্ষম না হলে সকলের পক্ষেই করা সম্ভব। এ লেখায় সেগুলোর ওপরেই জোর দেয়া হয়েছে।
৩. প্রতিদিন ৪৫ মিনিট হাঁটুন। একবারে না পারলে কয়েকবারে। এত দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নমনীয থাকে ও মগজে প্রচুর অক্সিজেন ঢোকার দুশ্চিন্তা কমে। হাঁটায় মহিলাদের ঋতুবন্ধজনিত হাড়ক্ষয় এবং অন্যান্য জটিলতাও রোধ হয়।
৪. অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নড়াচড়া এবং মালিশ করা ভালো ব্যায়াম। কারণ এতে রক্ত সঞ্চালন সহজ হওয়ায় চর্বি জমতে পারে না। এখানে দেহের কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মালিশের উল্লেখ করা হল যার দ্বারা কাছের তো বটেই, দূরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও উপকৃত হয়।
(ক)যখনই সম্ব পুরো মাথা মালিশ করলে মাথায় ভালভাবে রক্ত চলাচল করে বলে মগজ তথা ¯স্নায়ুকেন্দ্র ভাল থাকে ও সহজে চুল পড়ে না কিংবা পাকে না। (খ) প্রত্যহ ১০ মিনিট হাত ঘুরিয়ে ভেজা কপাল মালিশ করলে শারীরিক বৃদ্ধির জন্য দায়ী পিটুইটারি গ্রন্থি সতেজ থাকে। (গ) কানের সামনে- পিছনে মালিশ করলে এবং কানের লতিসহ কান মোচড়ালে পাকস্থলী ভাল থাকে। (ঘ) নাকের ডগা হাতের তালু দিয়ে ঘুরিয়ে ডললে কিডনি সবল থাকে। (ঙ) শরীর ও মনের যে কোন চাপের প্রথম শিকার হচ্ছে ঘাড়। কাজেই ঘাড় মালিশ করলে এবং মাথা ওপর-নিচ ও চারপাশে হেলিয়ে ঘোরালে ঘাড় নমনীয় থাকে। (চ) চোয়ারের নিচে গলার দু’পাশে মালিশ করলে থাইরয়েড ও টনসিল গ্রন্থি ভালো থাকে। (ছ) কনুইয়ের জোড়ায় হালকা চাপ দিয়ে এবং কনুই ও কব্জির মাঝখানে স্বাভাবিকভাবে মালিশ করলে হাত খুব সচল থাকে। (জ) নাভির চারপাশে মালিম করলে দুশ্চিন্তা কমে এবং চিৎ হয়ে শুয়ে এটি করলে সহজে আন্ত্রিক গোলযোগ হয় না। (ঝ) কুঁচকির ব্যায়ামে (চবষারপ ঊীবৎপরংব) মেরুদন্ড ও তলপেটের মাংশপেশী মজবুত থাকে; ফলে বয়সকালে অন্ত্রবৃদ্ধি (ঐবৎসরধ) হয় না এবং মূত্রের বেগ সামাল দেয়া সহজ হয়।
৫. শুয়ে পেটের ওপরে দু’হাত রেখে গভীরভাবে নাক দিয়ে শ্বাস নিয়ে পেট ফুলিয়ে মুখ দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়লে ফুসফুসের শক্তি বাড়ে এবং দিনে ২০ মিনিট এটি করলে ভাল ঘুম হয়। দেহের সার্বিক শক্তি বৃদ্ধি ও তারুন্য ধরে রাখার জন্য একটানা যতক্ষণ পারা যায় মলদ্বার সংকোচন করা ও ছেড়ে দেয়া খুবই ভাল একটি ব্যায়াম।
৬. স্নায়ুতন্ত্রের একটি বড় অংশ শেষ হয়েছে হাতের তালুতে এবং পায়ের তলায়। এ জন্য হাততালি দিলে চোখের ছানি দূর হয়, উচ্চ রক্তচাপ কমে এবং স্মরণশক্তি বাড়ে। পায়ের তলায় কর্কশ কোনো কিছু, যেমন ধুন্দলের ছোবড়া এবং প্লাস্টিকের ব্রাশ দিয়ে দিনে মোট ২০ মিনিট ঘষলে দেহের সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গই উদ্দীপ্ত হয়, সতেজ থাকে এবং রোগাক্রান্ত হলে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়। বিশেষত অনিদ্রা, হৃদরোগ ও স্ট্রোক প্রতিরোধে এবং মহিলাদের গর্ভবস্থায় খুব উপকার পাওয়া যায়। পায়ের তলা ঘষার পর আঙ্গুলগুলো উপর-নিচ করে টানুন।
৭. মুখ ধোয়ার সময়ে চোখে ২৫ বার পানির ঝাপটা দিন। নাক দিয়ে পানি যতটা পারা যায় টানুন এবং ছাড়ুন। এত সহজে সর্দি-কাশি হবে না। উপরন্তু এটি মাথাব্যাথা, সাইনাসাইটিস ও মাইগ্রেনে খুব উপকারী।
৮. আমাদের উপমহাদেশে উদ্ভাবিত যোগ ব্যায়াম আজ সারা পৃথিবীতে সমাদৃত, অথচ আমরা অনেকে এ বিষয়ে অজ্ঞ। তবে যোগ ব্যায়ামের ওপরে সুলিখিত অনেক বই আজকাল পাওয়া যায়। এসব পড়ে এবং সম্ভব হয়ে কোনো বিশেষজ্ঞের কাছ থেক সঠিক ধারণা পেতে পারেন। এ ব্যায়ামের মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে বিভিন্ন দেহভঙ্গিমা যাকে আসন বলা হয়। এক-এক আসনে দেহে এক-একভাবে চাপ পড়ে যা দেহের এক-এক অংশের উপকার সাধন করে। এসব আসনে কিছুক্ষণ থাকার পর একটি আসনে বিশ্রাম নিকে হয় যাকে বলে শবাসন।
৯. মনকে চিন্তামুক্ত রেখে বালিশ ছাড়া চিৎ হয়ে হাত-পা ছড়িয়ে শুয়ে শবাসন করতে হয়। সকালে ঘুম ভাঙলে লাফিয়ে বিছানা থেকে না উঠে কিছুক্ষণ শবাসন করুন। এত শক্তি এবং আত্ম বিশ্বাস বাড়ে। প্রতিদিন আধঘন্টা শবাসন করলে মেরুদন্ড ভাল থাকে, অনেক পরিশ্রম ও মানসিক চাপ সহ্য করা যায় এবং দেহের যে কোন ব্যথা ও লুকানো সমস্যা দূর হয়। উল্লেখ্য, মেরুদন্ড ও পাঁজরের মজ্জা থেকে বেশির ভাগ রক্ত উৎপন্ন হয়।
১০. সকালে নাস্তার আগে আরও ৪টি যোগাসন করুন: সিংহাসন, পদ্মাসন, পবনমুক্তাসন এবং ভুজঙ্গাসন। রাতে খাবার হজম হওয়ার সময়ে পেটে জমে ওঠা বায়ু যাবতীয় রোগের এক-তৃতীয়াংশের জন্য দায়ী। এই আসনগুলো পেট বায়ুমুক্ত করে ও হজমশক্তি বাড়ায়। তা ছাড়া সিংহাসন চোখ, নাক, কান, গল ও ফুসফুসের রোগ প্রতিরোধের জন্য এবং পদ্মাসন মস্তিষ্কের জন্য ভাল। অন্য আসন দু’টি হাঁপানি, পিঠ ও কোমর ব্যাথ্যা, উচ্চ রক্তচাপ, বহুমূত্র বা ডায়বেটিস ও স্ত্রীরোগের উপকারী। তবে খাওয়ার পরে বজ্রাসন ছাড়া আর কোন যোগাসন করা যায় না। এ আসনটি সুনিদ্রারও সহায়ক এবং কোমর থেকে পা পর্যন্ত দেহাংশ মজবুত রাখে।
১১. এবার খাদ্য প্রসঙ্গ (এটি খুব স্পর্শকাতর বিষয়, কারণ আমরা অনেকে বাঁচার জন্য না খেয়ে খাওয়ার জন্য বাঁচি।):
(ক) খাদ্যবিজ্ঞানীরা বলেন, “আপনি যা খান আপনি তাই।” আজকাল যে অনেক জটিল রোগ আমাদের পিছু নিয়েছে তার একটি বড় কারণ হল কৃত্রিম সার ও কীটনাশক বিষ ব্যবহারের এ যুগে খাদ্যের আদি বিশুদ্ধতা অনেকটাই হারিয়ে গিয়েছে। তার ওপরে রয়েছে নানারকম প্রক্রিয়াজাত, ভেজাম মিশ্রিত ও রাসায়নিক উপায়ে সংরক্ষিত খাদ্য যা কোনভঅবেই খাঁটি ও টাটকা খাবারে সমকক্ষ হতে পারে না।ফ্যিজে দীর্ঘদিন রাখা খাদ্যও ক্ষীতকর। অথচ সুস্থ জীব কোষের জন্য বিশুদ্ধ রক্ত দরকার যা শুধুমাত্র খাঁটি ও টাটকা খাবার থেকেই তৈরি হয়।
(খ) খাদ্যের একটি গুণগত উপাদান হচ্ছে আঁশ যা অন্ত্রনালী পরিষ্কার রাখে বলে ক্যান্সার প্রতিরোধ সহজ হয়। গমের আটায় আঁশ আছে, ময়দায় নেই। ময়দা একটি প্রক্রিয়াজাত মৃত খাদ্য যা কোষ্ঠ্যকাঠিন্য ও ক্যান্সারের সহায়ক। এ রকম আরেকটি প্রক্রিয়াজাত খাবার হচ্ছে চিনি। কারণ এটি রক্তের ঘনত্ব বাড়িয়ে অনেক রোগ ডেকে আনে এবং হাড় পর্যন্ত ক্ষয় করে। সুতরাং ময়দা ও চিনির তৈরি খাদ্য পুরোপুরি বর্জন করা ভাল। সেই সাথে তেল, লবণ ও মশলা নামমাত্র পরিমাণে ব্যবহার করা উচিত।
(গ) প্রতিদিনের আহার্যের শতকরা ৪০ ভাগ শ্বেতসার, ১৫ ভাগ আমিষ এবং ৪৫ ভাগ শাকসবজি ও ফল দিয়ে পূরণ করুন। তবে শ্বেতসার জাতীয় খাদ্য যথা ভাত-রুটি-আলু ইত্যাদির সাথে ফল খাবেন না; অন্তত অধঘন্টা পার্থক্য রেখে খাবেন। শ্বেতসারের সাথে আমিষ জাতীয় খাদ্য যথা মাছ-মাংস-ডিম খাওয়া ভাল নয়। সবজিই হচ্ছে একমাত্র খাদ্য যা আমিষ কিংবা শ্বেতসার- উভয়ের সাথেই খাওয়া যায়। দিনে অন্তত আধ কেজি সবজি খান। সকাল শুরু করুন বেশ খানিকটা কাঁচা পেঁপেঁ ও ফল খেয়ে। এতে যকৃত ভাল থাকবে। প্রতিদিন সাতরকম ফল ও সাত রকম সবজি খাওয়া উচিত। অংকুরিত গম, ছোলা, মুগ, সিমবীচি প্রভৃতি এবং আটা ও যবের তৈরি খাদ্য নাস্তা হিসেবে ভাল। শাক, সিম ও কপি রাতের বেলায় পেটে বায়ু তৈরী করে বলে এগুলো দিনে খাওয়া উচিত।
(ঘ) আমিষ হিসেবে ডাল চমৎকার। বিশেষত মুগ, মসুর ও মাসকলাই। তা ছাড়া ছোলার ডাল ও অংকুরিত ছোলা সব বয়সের মানবদেহে আমিষের ঘাটতি পূরণ করে এবং ডায়বেটিকস ভাল। সেদ্ধ সয়াবিন ডায়বেটিসে এবং পুরুষের প্রোস্টেট গ্রন্থি ও নারীর জরায়ু রক্ষায় উপকারী। প্রাণিজ আমিষের জন্য মাছ, দেশি মুরগীর মাংস ও ডিমের শ্বেতাংশ ভাল। লাল মাংস অর্থাৎ গরু-খাসির মাংস উপাদেয় হলেও ক্ষতিকর চর্বি থাকায় তা অনেক ভয়াবহ রোগের উৎস।
(ঙ) সকালে দাঁত মাজার আগে ৬৫০ গ্রাম কুসুম গরম পানি পান করার পর ৪৫ মিনিট পানাহার বন্ধ রাখুন। এতে কোষ্ঠ পরিষ্কার হয় ও অম্লতাসহ বহু জটিল রোগ সারে। দিনে ৮/১০ গ্লাস পানি পান করুন। মেয়েরা কখনও দাঁড়িয়ে পানি পান করবেন না, এত জরায়ুর ক্ষতি হয়। স্বাস্থ্যকর পানীয় হিসেবে দুধ-চিনি ছাড়া হালকা চা ভাল। ডাবের পানিও ভাল। তবে দিনে একটির বেশি নয়। গরমে প্রাণ জুড়াতে লেবুজলে মধু বা অল্প গুড় মিশিয়ে পানি পান করুন এবং কোলাজাতীয যাবতীয় কোমল পানীয থেকে দূরে থাকুন। কারণ এগুলো মুনাফালোভী ফর্মুলায় বাজারজাত এবং ঝলমলে বিজ্ঞাপনে দেখানো সুদৃশ্য বোতলে ভরা, প্রচুর চিনিগোলা ও সুস্বাদু শরবত ডায়াবিটিসসহ অনেক বড় রোগের কারণ। (এগুলোর সাথে এখন ফাষ্টফুড যোগ হওয়ায় ফাস্ট ডেথ বা দ্রুত মৃত্যুর ভিত্তি তৈরি হয়েছে।)
(চ) খাওয়ার পরিমাণ এবং সময়ও গুরুত্বপুর্ণ। কখনও পেট পুরে খাবেন না। প্রতিদিন একই সময়ে খাওয়া উচিত। রাতে খাওয়া আটটার মধ্যে চুকিয়ে ফেলা ভাল। কারণ বিকেল থেকে হজম শক্তি কমতে থাকে।
১২. রোগ প্রতিরোধক খাদ্য ও পানীয়ের একটি ছোট তালিকা: যব ডায়বেটিসে উপকারী, কোলেস্টেরল কমায় এবং ত্বক ও মলাশয় ভাল রাখে। গমাংকুর ক্যান্সার প্রতিরোধক। দৈনিক কিছু পরিমাণ টক দই খেলে এবং সকালে পানি মিশিয়ে তৈরি করে ছেঁকে নেয়া এক গ্লাস সবুজ পাতার রস (বাঁধাকপি, কলমি, তুলসী, থানকুনি লেটুস, অ্যলোভেরা, তেলাকুচা, পাথরকুচি ইত্যাদি) সম্ভব হলে মধু, আদার রস ও ত্রিফলা অর্থাৎ শুকনো আমলকি, হরিতকি ও বহেরার গুঁড়ো মিশিয়ে পান করলে শরীর সতেজ থাকে। একই ভাবে পান করা ভাল কাঁচা পেঁপেঁ, গাজর ও লাউয়ের মত সবজি এবং কামরাঙা ও জাম্বুরার মতো ফলের রস। ক্যামোমাইল (ঈধসড়সরষব) চা হজম শক্তি ও স্নায়ুতন্ত্র ভাল রাখে। কাঁচা বেল ফালি করে রোদে শুকিয়ে তৈরি বেলশুট ভিজিয়ে বা সেদ্ধ করে পানিসহ নিয়মিত খেলে পেটের অনেক পুরোনো অসুখ, যেমন অজীর্ণ ও আমাশয় সেরে যায়। কলমি শাক ত্বক ভাল রাখে ও ঘা সারায়। কচু শাক রক্ত তৈরি ও পরিষ্কার করে। থানকুনি পাতা পেট, চোখ ও চুল ভাল রাখে। পুদিনা পাতা ফুসফুস, হৃৎপিন্ড ও পেট ভাল রাখে। আদা বাত ও মাথাব্যথা কমায় এবং হজম শক্তি বাড়ায়। আমলকি ভিটামিন ‘সি’- এর সবচেয়ে ভাল উৎস। তির তারুণ্য ধরে রাখে। কাঁচা হলুদ রক্ত পরিষ্কারক এবং ঠান্ডা প্রতিরোধক। কালোজিরাকে প্রাচীন কাল থেকেই বলা হয় হাজার রোগের ওষুধ। স্পিরুলিনা (ঝঢ়রৎঁষরহধ) শরীরের ক্ষয় পূরণ করে এবং উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়বেটিসসহ অনেক রোগে উপকরী। রসুন সেদ্ধ পানি খেলে সর্দি-কাশি সারে।
১৩. মুখের অপরিচ্ছন্নতা থেকে অনেক রোগ হয়। তাই রাতে শোয়অর আগে অবশ্যই দাঁত মাজুন এবং মোটামোটি শক্ত বিছানায় ঘুমানোর আগে শবাসন করতে করতে মনের যত দুশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেলুন।
১৪. এত অল্প কথায় যা বলা হল তা স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিশাল জ্ঞান ভান্ডারের একটি ক্ষুদ্র অংশ। তবে অনেকটা স্বচিকিৎসার দ্বারা রোগ প্রতিরোধের মাধ্যমে সুস্থ্য থাকার উদ্দেশ্যে সংক্ষেপে ও সহজে এ বিষয়ে আরও জানতে চাইলে চিন্ময় সেনগুপ্তের “বিনা ওষুধে রোগ নিরাময়/প্রিটিকস প্রোগ্রাম” এবং দেবেন্দ্র ভোরার “আপনার স্বাস্থ্য আপনারই হাতে/অ্যাকিউপ্রেশার ও অন্যান্য প্রাকৃতিক চিকিৎসা” নামক বইগুলো পড়তে পারেন।

লেখক পরিচিতি: প্রাক্তন চীফ পার্সার, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স্

একটি স্বেচ্ছাসেবী সমাজ কল্যাণ সংস্থা: (হীল)-এর পক্ষে প্রকাশিত লিফলেট থেকে।

happy wheels 2

Comments