নদী ও প্রাকৃতিক জলাধার সুরক্ষায় এখনই কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক
বরেন্দ্র অঞ্চল থেকে শহিদুল ইসলাম
বিশ^ নদী দিবস উপলক্ষে রাজশাহীর লালন শাহ মুক্ত মঞ্চ এবং পদ্মা নদীর পাড়ে রাজশাহী তথা বরেন্দ্র অঞ্চলের নদীগুলো সুরক্ষা করাসহ, দখল দূষণ বন্ধের দাবিতে মানবন্ধন ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বরেন্দ্র অঞ্চলের নাগরিক সমাজ, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিগণসহ মৎসজীবী ও মাঝিগণ অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধনে বক্তরা বলেন, ‘আমাদের পদ্মা নদীকে ঘিরে এই বরেন্দ্র অঞ্চলের অনেকগুলো ছোট ছোট নদী বয়ে গেছে। পদ্মায় পানি না থাকায় আজ সেই নদীগুলোও শুকিয়ে মরে গেছে। পদ্মার উজানে পাশ^বর্তী দেশ বাঁধ দেয়ায় অযাচিতভাবে পানি আটকে রেখে তারা ব্যবহার করছে। আমাদের প্রাপ্য পানি তারা দিচ্ছেনা। যার ফলে ভরা মৌসুমেও পদ্মায় পানি থাকেনা। অন্যদিকে বরেন্দ্র অঞ্চলের নদী শিব বারনই, মহানন্দা, পুনর্ভবাসহ নদীগুলো দিনে দিনে দখল দূষণসহ ভরাট হবার মৌসুমেও পানি থাকেনা। নদীর নব্যতা ফিরে আনতে এবং সবসময় পানি ধরে রাখতে কার্যকর পদক্ষেপের দাবি করা হয়।’
মানবন্ধনে অংশগ্রহণ করে আদিবাসী সংগঠক সুভাষ হ্রেমম বলেন, ‘আমাদের নদীগুলো শুকিয়ে যাবার কারণে, দখল হবার কারণে আমাদের পানির সংকট আরো বেড়ে গেছে। একই সাথে এ সকল নদী কেন্দ্রিক জীবন জীবিকা সংকটে পড়েছে।’ নদী দিবসের সহ আয়োজক বরেন্দ্র অঞ্চল যুব সংগঠন ফোরামের সদস্য সচিব শাইখ তাসনীম জামাল বলেন, ‘আমাদের নগরায়নের ফলে নদীগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু পরিবেশ ধ্বংস করে কোনো কর্মকান্ড পরিচালনা করলে তার ফলাফল শূন্যই থেকে যায়। আমরা ধীরে ধীরে নদী দূষণ করছি ও দখল করছি। এখন যদি এসব বন্ধ করতে না পারি, তবে সামনে আমাদের দূর্দিন আসছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘ক্ষমতার দাপটে নদী দখল করছে মানুষ। কিন্তু এই নদী তো জনজীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। আমাদেরকে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে শক্তিশালী ও গতিশীল করতে হবে। সর্বোপরি বৈশ্বিক জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় অমূল্য সম্পদ আমাদের নদীগুলো রক্ষার্থে সবাইকেই এগিয়ে আসতে হবে আর সেটা এখনই। বরেন্দ্র অঞ্চলের নদীগুলো রক্ষা জরুরি হয়ে পড়েছে।’

উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক’র অঞ্চল সমন্বয়কারি শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বরেন্দ্র অঞ্চল একটি পানি সংকটাপন্ন এলাকা, প্রাকৃতিক জলাধারগুলো ধ্বংস হয়ে যাবার ফলে এখানে পানির সংকট আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। বরেন্দ্র অঞ্চলের প্রাকৃতিক জলাধারগুলো সুরক্ষা হলে এখানে প্রান্তিক মানুষের পানির অধিকার কিছুটা হলেও প্রতিষ্ঠা পাবে। এ ছাড়া এসকল জলাধার লিজ প্রথা বাতিলের দাবি করেন তিনি। নদী এবং প্রাকৃতিক জলাধার, বিল পুকুরগুলো লিজ প্রথার বাইরে রাখলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রবেশাধিকারে কোন বাধা থাকবেনা।’
সংবাদ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন – ই্যাসের সভাপতি শামীউল আলীম শাওন, সাধরণ সম্পাদক আতিকুর রহমান, যুব সংগঠন সামাজিক কল্যাণ সংস্থার সভাপতি স¤্রাট রায়হান, আদিবাসী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রিয় কমিটির সহ সভাপতি সাবিত্রী হে¤্রম। বারসিকের তহুরা খাতুন লিলি, অমিত কুমার সরকারসহ স্থানীয় তরুণ যুব সমাজ।