কন্যাশিশুর প্রতি বৈষম্য নয়, সমঅধিকার চাই
মানিকগঞ্জ থেকে রাশেদা আক্তার
“মেয়েদের অধিকারে বিনিয়োগ, আমাদের নেতৃত্ব, আমাদের মঙ্গল”-এ প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে গতকাল ১১ অক্টোবর মানিকগঞ্জ জেলার মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চরমত্ত গ্রামে আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে প্রত্যয় কিশোরী সংগঠনের আয়োজনে এবং বারসিক’র সহযোগিতায় আলোচনা সভা, কিশোরী বন্ধন ও উন্মুক্ত গল্পের আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রত্যয় কিশোরী সংগঠনের সভাপতি মারুফা আক্তারের সভাপতিত্বে বারসিক’র প্রোগ্রাম অফিসার রাশেদা আক্তারের সঞ্চালনায় আলোচনা সভার শুরুতেই দিবসের প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্য বিষয়ে ধরণাপত্র পাঠ করেন প্রত্যয় কিশোরী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হাবিবা আক্তার।
প্রত্যয় কিশোরী সংগঠনের সভাপতি মারুফা আক্তার সভাপতির বক্তব্যে বলেন, “আজ আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে এখানে আসার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কন্যা শিশুদের বাল্যবিয়ে দেয়। লেখাপড়ার সুযোগ কম দেয়, পুষ্টি পায় না। আমরা সবাই মিলে কন্যা শিশুর সমঅধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করবো।”
ধারণাপত্র পাঠ শেষে গ্লোবাল একশন অন এগ্রোইকোলোজি বিষয়ে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বারসিক’র আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বিমল চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, “বর্তমান সময়ে কুষিজমি কমে যাচ্ছে। কৃষিতে ব্যাপকভাবে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে। ভুট্টা জাতীয় ফসল চাষ হচ্ছে যেখানে প্রচুর পরিমাণে পানি ব্যবহার করতে হচ্ছে। শিশুরা নানা ধরণের জাঙ্কফুড জাতীয় খাবারের প্রতি আসক্ত হচ্ছে। আমরা মনে করছি এগুলো বন্ধ করতে হবে। কৃষিকে বাঁচাতে হবে। কৃষি জমি বাঁচাতে হবে।’ আলোর পথিক নারী সংগঠনের সভাপতি সুমি আক্তার বলেন, “আজ ১১ অক্টোবর আন্তর্জাতিক ক্যাশিশু দিবস। আমাদের সমাজে মেয়েদের লেখা-পড়া করাতে চায় না। বাল্য বিয়ে দিয়ে দেয়। মেয়েদের বোঝা মনে করে। আমরা ছেলে-মেয়ের সমান অধিকার চাই।”
আলোচনা শেষে কিশোরীদের অংশগ্রহণে উন্মুক্ত গল্পের আসর অনুষ্ঠিত হয়। গল্পের আসরে কিশোরীরা চারটি দলে বিভক্ত হয়ে বর্তমান সময়ে আমাদের সমাজে কন্যাশিশুরা কী ধরণের বৈষম্য ও নির্যাতনের শিকার হয়, কন্যাশিশুরা কী ধরণের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে, ছেলেরা কী ধরণের বৈষম্য বা নির্যাতনের শিকার হয় এবং কী ধরণের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকে সে বিষয়গুলো তুলে ধরে।
এরপর নারীদের অংশগ্রহণে গ্রামীণ খেলা অনুষ্ঠিত হয় এবং অংশগ্রহণকারীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। পুরস্কার বিতরণ শেষে কিশোরী ও নারীদের অংশগ্রহণে কিশোরী বন্ধনের মাধ্যমে বাল্য বিবাহ রোধ, কন্যা শিশুর শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও বিনোদনের সমসুযোগ ও সমঅধিকারের দাবি তুলে ধরা হয়।