মানিকগঞ্জে তারেক মাসুদ মিশুক মনিরের দুর্ঘটনাস্থলে মানববন্ধন নিরাপদ সড়কের দাবী
মানিকগঞ্জ থেকে আব্দুর রাজ্জাক:
সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও বিশিষ্ট সাংবাদিক মিশুক মনির স্মরণে স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পন, মানববন্ধন, আলোচনাসভা ও বৃক্ষরোপন করা হয়েছে। গত ১৩ আগষ্ট, সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জোকা এলাকার দুর্ঘটনাস্থলের স্মৃতিস্তম্ভের পাশে যৌথভাবে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাব, তারেক মাসুদ-মিশুক মুনীর স্মৃতি সংসদ, বারসিক, প্রথম আলো বন্ধু সভাসহ বিভিন্ন সংগঠন এসব কর্মসূচী পালন করে। সংগঠন গুলোর পক্ষ থেকে প্রথমে তারেক মাসুদ-মিশুক মনির স্মৃতি ফলকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। এরপর দুর্ঘটনাস্থলে নিরাপদ সড়কসহ বিভিন্ন দাবীতে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম ছারোয়ার ছানুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট দিপক কুমার ঘোষ, মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব চক্রবর্তী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহঙ্গীর আলম বিশ্বাস,তারেক মাসুদ-মিশুক মনির স্মৃতি সংসদের সাধারন সম্পাদক সাংবাদিক রিপন আনসারী, আজাহারুল ইসলাম আরজু,ইকবাল হোসেন কচি, নাট্য পরিচালক গিনি আলম, সাবেক ফুটবলার হাফিজুর রহমান ফিরোজ,বারসিক প্রতিনিধি সুবীর কুমার সরকার প্রমুখ। মানববন্ধনে বক্তরা বলেন, আজ সারা দেশের মানুষের প্রধান দাবীই হচ্ছে নিরাপদ সড়কের। আর এই নিরাপদ সড়কের দাবী আদায়ে কোমল মতি শিক্ষার্থীরা সরকারের চোখ খুলে দিয়েছে। যা এদেশে দেশে ইতিহাস হয়ে থাকবে।
মানববন্ধনে বক্তরা আরো বলেন, ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক মৃত্যুর ফাঁদ হিসেবে পরিচিত। এই মৃত্যুর ফাঁদ ঘোঁচাতে হলে গুরুত্বপুর্ণ এই সকড়টি চার লেনে রুপান্তিত করতে হবে। রোড়ের যেসব জায়গায় বাক রয়েছে তা আরো প্রশস্ত ও সংস্কার করতে হবে। এছাড়া অদক্ষ এবং লাইসেন্সবিহীন চালক যাতে রুটে গাড়ি চালাতে না পারে সরকারকে সে ব্যাপারে আরো কঠোর ভূমিকা রাখতে হবে।
এছাড়া তারেক মাসুদ-মিশুক মুনীরের মামলার রায়ে কোর্ট যে অর্থদন্ড দিয়েছে তা নিহতের পরিবারের কাছে দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়ার দাবী জানান বক্তরা। এদিকে তারেক মাসুদ-মিশুক মুনীরের ৭ম মৃত্যুবর্ষ উপলক্ষে জোকা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রঙ্গণ, পুখুরিয়াও দূর্ঘটনাস্থলে বৃক্ষরোপন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ১৩ আগষ্ট সকালে কাগুজের ফুল সিনেমার শুটিং স্পট দেখে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার শালজানা গ্রাম থেকে ঢাকা ফিরছিলেন প্রখ্যাত চলচিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ, তার স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ, বিশিষ্ঠ সাংবাদিক মিশুক মুনীরসহ ৯ জনের একটি দল। পথিমধ্যে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঘিওর উপজেলার জোকা নামক এলাকায় তাদের বহনকৃত মাইক্রোবাসটি পৌছালে বিপরীত গামী চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স পরিবহনের বাসের সঙ্গে সংর্ঘষ বেধে যায়। এসময় মাইক্রোস বাসটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। মাইক্রো বাসের ভেতরে থাকা তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরসহ প্রডাকশন সহকারী ওয়াসিম,জামাল এবং মাইক্রোবাস চালক মুস্তাফিজুর রহমানসহ ৫জন নিহত হন। সেই দুর্ঘটনায় আহত হন তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিল্পী ঢালী আল মামুন ও তার স্ত্রী দেলোয়ারা বেগম জলি।