উপকুলীয় শ্যামনগরে আম্ফান মোকাবেলায় প্রস্তত ১২৩টি সাইক্লোন শেল্টার
শ্যামনগর থেকে রনজিৎ বর্মন : ঘূর্ণিঝড় ফণি,বুলবুলের পরই ধেয়ে আসছে আম্ফান । উপকুলীয় জেলা সাতক্ষীরার সুন্দরবন ঘেঁষে অবস্থিত উপজেলা শ্যামনগরে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রস্ততি নিয়ে চলছে দফায় দফায় প্রস্ততি সভা। কেমন রুপ নিতে পারে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান এ ধারণা সাধারণ মানুষের মধ্যে না থাকায় জেলা,উপজেলা, ইউনিয়ন দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির চলছে প্রস্ততি সভা।
এদিকে আকাশ পরিস্কার হাস্যেজ্জল রৌদ্র সাধারণ মানুষের মধ্যে কোন প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছেনা। অথচ নদী বেষ্টিত এলাকায় বেড়ী বাঁধগুলি নিয়ে বাঁধ সংলগ্ন এলাকার মানুষের মধ্যে রয়েছে নানান শঙ্কা। এ সকল এলাকার মানুষের মধ্যে রয়েছে এক দিকে করোনা মোকাবেলায় অর্থনৈতিক চাপ আবার নতুন করে সৃষ্টি হতে যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের চাপ। উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার চেয়ারম্যান জি এম মাসুদুল আলম বলেন, গাবুরা ইউপির বেশ কয়েকটি স্থানে বেড়ী বাঁধের অবস্থা ভাল নয়। ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ভয়ংকর রুপ নিলে ক্ষতি হতে পারে ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম।
নদীবেষ্টিত সুন্দরবন লাগোয়া বুড়িগোয়ালিনী ইউপি চেয়ারম্যান ভবতোষ কুমার মন্ডল বলেন, ঘূর্ণিঝড় আসলে আমরা নড়েচড়ে বসি। তিনি বলেন তার ইউপির কলবাড়ী -নওয়াবেঁকী রোডে কলবাড়ী নামক স্থানে চুনা নদীর বেড়ী বাঁধে বড় ধরনের ফাটল দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া দাতিনাখালী, দূর্গাবাটি সহ আরও কয়েকটি স্থানের বেড়ী বাঁধের অবস্থা নাজুক। খোলপেটুয়া নদীবেষ্টিত পদ্মপুকুর ইউনিয়নের বাসিন্দা উত্তম বলেন ইউনিয়নের কামালকাটি,ঝাঁপা ,পাতাখালি এলাকায় বেড়ী বাঁধের অবস্থা ভাল নয়।
এ দিকে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আঘাত হানতে পারে মারাতœক ভাবে এমন আশঙ্কায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গত দুই দিন থেকে দফায় দফায় প্রস্ততি সভা চলছে। সভায় জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
উপজেলা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান ও উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম আতাউল হক দোলন বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আঘাত হানতে পারে এমন আশঙ্কায় উপজেলার ১২৩ টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া পাকা ভবন বিশিষ্ট সকল শিক্ষা প্রতিষ্টান খোলা রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, দুর্যোগে ঝুঁকিপূর্ণ ইউনিয়ন গাবুরা ও পদ্মপুকুরের সাধারণ মানুষের নিরাপদ আশ্রয়ে আনার জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি আব্দুল হাই সিদ্দিকী গাবুরা ইউনিয়ন ও উপজেলা কৃষি অফিসার আবুল হোসেন মিয়া পদ্মপুকুর ইউনিয়নে অবস্থান করছেন। এই দুই ইউপির মানুষকে উপজেলা সদরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সহ সাইক্লোন শেল্টারে রাখা হবে এবং তাদেরকে খাদ্য সরবরাহ করা হবে। এ ছাড়া অন্যান্য প্রস্ততিও গ্রহণ করা হয়েছে।
বর্তমানে আম্ফানের ৪নং সর্তক সংকেত চলায় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সিপিপি কতৃক গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে বা চলছে। এলাকায় এলাকায় চলছে সচেতনতা সৃষ্টিতে মাইকিং। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সাইক্লোন শেল্টারে অবস্থান করার জন্য চলছে মাইকিং। জানা যায় সকল ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসারবৃন্দ স্ব স্ব ইউপিতে অবস্থান করছেন জনসাধারণের নিরাপত্তা রক্ষার্থে। সব মিলিয়ে উপজেলা প্রশাসন,শ্যামনগর থানা পুলিশ,বিভিন্ন এনজিও ও স্বেচ্ছাসেবকবৃন্দ মাঠে নেমে পড়েছেন করোনার ঝুঁকির মধ্যে আম্ফান মোকাবেলায়।