ক্যাকটাস ও ফুলের প্রসারে ভূমিকা রাখছেন কামরুন্নাহার

চাটমোহর, পাবনা থেকে ইকবাল কবীর রনজু

গত ২০ জুন মেসেঞ্জারে কলেজ জীবনের সহপাঠি বর্তমান স্কুল শিক্ষিকা কামরুন্নাহার শিল্পী তার বাগানে সম্প্রতি ফোটা কয়েকটি ক্যাকটাস ফুলের ছবি পাঠালে সেগুলোর সৌন্দর্য আমায় মুগ্ধ করে। মেসেঞ্জারেই কুশল বিনিময়ের পর ফোন নম্বর পেয়ে ফোন করলে তার ক্যকটাসসহ অন্যান্য ফুল সম্পর্কে জানতে পারি। ২২ জুন শিল্পীর নিজ হাতে গড়ে তোলা বাগান দেখতে স্বস্ত্রীক চলে যাই তার বাড়িতে।

kamrunnaher-2

চালাবিহীন পরিত্যক্ত ঘরের মাত্র ৬৪ বর্গফুটের মতো মেঝেতে যে কি মনোরম বাগান করা যায় তা না দেখলে বিশ^াস করা কঠিন। টব, মাটির খুটি, পানি-তেলের পরিত্যক্ত বোতল, বালতি, জগ এসব পাত্রে একটার সাথে আরেকটা প্রায় লাগানো পঞ্চাশের অধিক মনোলোভা ক্যাকটাস ও ফুলের জগত গড়ে তুলেছেন পাবনার চাটমোহর পৌর সদরের আফ্রাতপাড়া মহল্লার মৃত শেখ আব্দুল বাসেদ ওরফে রমজানের মেয়ে ও ভাদ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা কামরুন্নাহার শিল্পী। ২০০৩ সালে বাগান করা শুরু করেন তিনি। ধীরে ধীরে বাড়ছে গাছের সংখ্যা ও জাত। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন পন্থায় পছন্দসই গাছ সংগ্রহ করেন তিনি। কামরুন্নাহারের ক্যাকটাস, বনসাই, অর্কিড, দেশী বিদেশী ফুলের সমাহার ও শৈল্পিক সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করে।

কামরুন্নাহার শিল্পী বলেন, “বি.এ এবং বিএড পাশ করার পর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষিকা পদে চাকুরি করছি। ছোট বেলা থেকেই বাগান করার সখ ছিল। এখন অবসর সময় বাগানের গাছের পরিচর্যা করি। গাছের পরিচর্যা করে আনন্দ পাই। ফুল, গাছ মনের খোরাক জোগায়। তাই এ কাজে আনন্দ ও পাই।” তিনি আরও বলেন, “কক্সবাজার গাজীপুর রাজশাহী পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন প্রজাতির ক্যাকটাস ও দেশী, বিদেশী ফুলের গাছ সংগ্রহ করেছি। কোথাও বেড়াতে গেলে পছন্দসই ক্যাকটাস চোখে পরলে সেটি যেন আমার চাইই। কেনার পরিবেশ থাকলে কিনি। কেনার পরিবেশ না থাকলে চেয়ে নেই। চেয়ে না পেলে চুরিও করি!”

kamrunnaher-3

ক্যাকটাসসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশী ও বিদেশী ফুল গাছের প্রসারে ভূমিকা রাখছেন কামরুন্নাহার। যারা এসব গাছ লাগাতে ইচ্ছুক তাদের চারা কন্দ শাখা দিয়ে সহায়তা করেন তিনি। মানুষ গাছ লাগাক এটা যেন তার ঐকান্তিক চাওয়া। চাটমোহরের বেশ কয়েকটি স্কুল, শিক্ষা অফিস, পাশর্^বর্তী আটঘরিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধব পাড়া প্রতিবেশীকে ক্যাকটাসসহ ফুল বাগান করতে চারা কন্দ শাখা দিয়ে সহায়তা করেছেন তিনি। এখনও করছেন।

kamrunnaher-4

পিতা মাতার সাত সন্তানের মধ্যে পঞ্চম কামরুন্নাহার শিল্পী আরো বলেন, “পঁচিশ প্রজাতির ক্যাকটাস, চার প্রজাতির সেঞ্চুরী, দেশী ও চায়না বটের বনসাই, ডুমুরের বনসাই, কয়েক প্রজাতির পাথরকুচি, অর্কিড, ছয় প্রজাতির গোলাপ, মে ফ্লাওয়ার, ভুঁইচাপা, ফনীমনসা, ঘৃতকুমারী, লবষ্টার হ্যাঙ্গিং ক্ল, বাশরী, নয়টা, গাঁদাসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুল ও ক্যাকটাস গাছ এখন আমার বাগানে রয়েছে। বাগানের কাজে পরিবারের সবাই আমাকে সহায়তা করেন। বাগান প্রসারে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় ঘরের কার্নিশে পর্যন্ত টব দিতে হয়েছে।”

happy wheels 2

Comments