শ্রদ্ধা করি সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য, রক্ষা করি প্রকৃতির প্রতিটি প্রাণ
বৈচিত্র্য সুরক্ষা ও সকল প্রাণ এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞানের লক্ষ্যে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এবং বারসিকের উদ্যোগে গত ২১ মে, ২০১৬, সকাল ১১ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে শ্রদ্ধাজ্ঞপন অবস্থান পালিত হয়। আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক ও প্রাণ-বৈচিত্র্য দিবসের প্রতিপাদ্যকে উপলক্ষ্য করে এই কর্মসূচি পালিত হয় এবং নানান রঙের মুখোশ ও প্ল্যাকার্ড হাতে অংশগ্রহণকারীরা সকল প্রাণের ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। পবার নির্বাহী সদস্য মো: আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে এবং পবার প্রোগ্রাম অফিসার সাকিবুল হাসান সাকিবের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বারসিকের সমন্বয়ক ফেরদৌস আক্তার রিতা, তৌহিদুর আলম, জাহাঙ্গীর আলম, পবার আতিকুর রহমান সুমন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, “মাছ, পাখি, বাঘ বা গাছ নয় বাংলাদেশে মানুষের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য এবং ভিন্নতাও আজ বিপদাপন্ন। বাঙালিবাদে অপরাপর ৪৫ আদিবাসী জাতি তাদের মাতৃভাষা, ভূমি ও সংস্কৃতির সুরক্ষায় লড়ছে। নারী-পুরুষ সহ সকল লিঙ্গীয় ভিন্নতা আজও সমমর্যাদা পায়নি। শিশু-প্রবীণ-তরুণসহ সব বয়সের জন্য তৈরি হয়নি কাঙ্খিত জায়গা। বিশেষভাবে সক্ষম মানুষেরা এখনও মূলধারার তলানিতেই পড়ে আছে। সব কিছু মিলিয়ে বৈচিত্র্য-বৈভবের বাংলাদেশ ক্রমান্বয়েই বৈচিত্র্য বিমুখ ও বৈচিত্র্যহীন হয়ে পড়ছে। সাংস্কৃতিক ভিন্নতাসহ ভিন্ন মতগুলো আজ ভূলুন্ঠিত। এখানে লিচুতে বিষ দেয়া হয় পোকা মারার জন্য। কিন্তু মরে যায় মৌমাছি, এমনকি বিষ দেয়া লিচু খেয়ে মরেছে মানব শিশুও। বৈচিত্র্য আর ভিন্নতা নয়, এখানে বহুজাতিক বাজারই হয়ে উঠছে মূখ্য। প্রকৃতি বিচ্ছিন্ন ভোগবিলাসী জীবনের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে আগামীর প্রজন্মকে।”
বক্তারা আরো বলেন, “প্রাণের বৈচিত্র্য ছাড়া আমরা বাঁচবো না। এমন কি মানুষের সমাজে বিদ্যমান সাংস্কৃতিক ভিন্নতা ও বৈচিত্র্য ছাড়া ও সভ্যতার বিকাশ হবেনা। বৈচিত্র্য জরুরী। প্রাণ, প্রকৃতি ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্য। সকলভিন্নতা ও রূপকে শ্রদ্ধা করে সকলকে নিয়ে সকলের জন্য বেঁচে থাকার রসদ যোগাতে হবে। আর এভাবেই টিকে থাকবে মানুষ, পাখি, মাছ, বাঘ, মাটি, পানি ও গাছ। সকলে মিলেই আমাদের সকলের সংসার।