তলার হাওরে মাছের ডিম ফোটেনি, জেলেরা হতাশ
নেত্রকোনা থেকে মো. অহিদুর রহমান
নেত্রকোনা জেলার মদন ও খালিয়াজুরি হাওর পাড়ের জেলেরা জানিয়েছেন, তলার হাওর জালিয়ার হাওর, গণেশের হাওরে এবছর মাছের ডিম ফোটেনি। জেলেরা বলছেন, দেশের মৎস্যভান্ডার খ্যাত এ অঞ্চলে এবছর মাছের আকাল দেখা দিবে। হাওরে জাল ফেলে কোন পোনা মাছ পাচ্ছেনা জেলেরা। প্রতিবছর জেলেরা এসময় হাওরে ৫০/৬০ জাতের মাছ পাওয়া যেত বলে জানিয়েছেন।
হাওর পাড়ের জেলে যোগেশ চন্দ্র দাস বলেন, ‘হাওরে এসময় বোয়াল,আইড়, গইন্যা, বাইম, টেংরা, কালো বাইশ, সরপুটি, গুজিসহ অনেক মাছে ভর্তি থাকতো কিন্তু জালে কোন মাছ উঠছেনা। মাছে হাওরে ডিম ছেড়েছে কিন্তু ফোটছেনা।’ মদনের প্রবীণ জেলে গোপাল চন্দ্র বর্মন বলেন, ‘মাছের ডিম পারার জায়গা নষ্ট হইছে ও ফোটার জন্য কোন পরিবেশ ন্ইা হাওরে, ট্রলার চলে, বাঁধ দেয়, বিষ দেয়।’
অন্যদিকে খালিয়াজুরির জাহেরপুরের মৎস্যজীবী নওয়াব আলী বলেন, ‘গত বছর বর্ষায় জাল দিয়া টান দিলে জালে মাছের পোনা ও মাছে জাল বইরা যাইত। এই খাওনের জন্যও মাছ পাইনা।’ খালিয়াজুরি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মজিবুর রহমানের সাথে আলাপ করে জানা যায়, প্রতিবছর হাওরে প্রায় ১২ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হয়। এবছর মাছের আকাল হবে বলে আশংকা করছেন। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. রুহুল আমিন বলেন, ‘অতিরিক্ত বিষ ব্যবহার, অপরিকল্পিত বেড়ীবাঁধ তৈরি, মাছের স্বাভাবিক চলাচলের পথে বাধা, প্রাকৃতিক জলাশয় ভরাট, মাছের উৎস স্থল নষ্ট, অভয়াশ্রম না থাকা, বিষ দিয়ে মাছ শিকারও মাছের প্রজনন নষ্ট করেছে।’
আমাদের হাওরের জলে এই ধরনের আগ্রাসন দ্রুত বন্ধ করতে হবে। মাছ সম্পদকে রক্ষার জন্য আমাদের জলাভুমি রক্ষা রক্ষা, অভয়াশ্রম তৈরি, জলাশয়ে বিষ প্রয়োগ কমিয়ে আনতে হবে। হাওর পাড়ের হাজার হাজার জেলে পরিবারে পেশা ঠিকে থাকবে। আমাদের মাছের জাতবৈচিত্র্যও ঠিকে থাকবে।