পুষ্টি সমৃদ্ধ ফল ‘বরই’
ভাঙ্গুড়া, পাবনা থেকে মো. মনিরুজ্জামান ফারুক:
বরই বা কূল। একটি শীতকালিন পুষ্টি সমৃদ্ধ ফল। বরই গাছে ভাদ্র-আশ্বিন মাসে ফুল আসে। ফল ধরে শীতে। এখন আশ্বিন মাসের প্রায় শেষের দিক। প্রকৃতিতে শীতের আমেজ লক্ষ্য করা গেছে। আর সেই সাথে বরই গাছে ফুল ফুটেছে। ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে বরই গাছগুলো। গাছে ফুল আসায় বরই গাছের সৌন্দর্য যেন বেড়ে গেছে। আর কিছুদিন পর গাছে বরই ধরবে।
মুক্ত বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়, বরই গাছ ঝোপাল প্রকৃতির একটি বৃক্ষ। ১২ থেকে ১৩ মিটার এর স্বাভাবিক উচ্চতা। এ গাছ পত্রঝরা স্বভাবী অর্থাৎ শীতকালে পাতা ঝরে আর বসন্তে নতুন পাতা জন্মে। বরই গাছের ডাল-পালা ঊর্ধ্বমুখী। ফল গোলাকার, ছোট থেকে মাঝারি। পাতা সবুজ বর্ণের। ফল পাকলে রঙ হলুদ থেকে লাল বর্ণ হয়। এটি সাধারণত দুই জাতের হয়। একটি নারিকেল কূল ও আরেকটি আপেল কূল। এর বৈজ্ঞানিক নাম Ziziphus zizyphus. ইংরেজিতে বলা হয় Jujube বা Chinese date । সব ধরণের মাটিতেই এ গাছ জন্মে। জানা যায়, বরই গাছের আদি নিবাস আফ্রিকা। বতর্মানে ভারত, মালয়েশিয়া, আফগানিস্তান, চীন, অস্ট্রেলিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় কিছু অঞ্চলে বিস্তার লাভ করেছে।
বরই কাচা ও পাকা উভয়ই খাওয়া যায়। এর স্বাদ টক ও কাঁচামিঠা জাতীয়। আমাদের দেশে বরই রোদে শুকিয়ে চিনি বা গুড় মিশিয়ে আচার তৈরি করা হয়ে থাকে। টক, ঝাল ও মিষ্টি এ তিন ধরণের আচার তৈরি করা যায়। যা খেতে খুবই সুস্বাদু। এ ছাড়া রোদে শুকিয়ে বরই সংরক্ষণ করা যায়। বরই রক্ত শোধন, রক্ত পরিস্কার এবং হজমিকারক হিসেবে ভাল কাজ করে। তাছাড়া খাবারে অরুচি হলে বরই আচার খেলে ভাল ফল পাওয়া যায়। বরইতে বিভিন্ন খনিজ দ্রব্য এবং ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’ রয়েছে। যা মানুষের দেহ গঠনের জন্য বেশ উপকারি। বরই গাছ আমাদের দেশে সাধারণত অবহেলায় যত্রতত্রভাবে বেড়ে ওঠে। তেমন কোন পরিচর্যা ছাড়াই আমাদের ফল দেয়। মৌসুমে শুরুতেই ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বরই বিক্রি হয়। পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা সুস্থির কুমার সরকার বলেন, ‘বরই পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি ফল। বর্তমানে আমাদের দেশে বাণিজ্যিকভাবে এর ব্যাপক চাষ হচ্ছে।’