হরিরামপুর পালিত হলো আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস

হরিরামপুর থেকে মুকতার হোসেন ও সত্যরঞ্জন সাহা
“কমাতে হলে সম্পদের ক্ষতি, বাড়াতে হবে দুর্যোগের পূর্ব প্রস্ততি” এই প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে হরিরামপুর উপজেলা প্রশাসন (দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর) ও বারসিক’র যৌথ আয়োজনে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-২০১৮ পালিত হলো। উক্ত দিবসে অংশগ্রহণ করেন আন্দারমানিক সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকবৃন্দ, হরিরামপুর প্রতিবন্ধী উন্নয়ন পরিষদ, সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, কৃষক সংগঠন, প্রবীণ, মৎস্যজীবী, কৃষক-কৃষাণি, তরু যুবক, সেচ্ছা-সেবক টিমের ২০০ শতাধিক লোকজন। উক্ত দিবসে র‌্যালি, আলোচনা সভা ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজ এলাকার কি ধনেরর দুর্যোগ হয়, তার উপর চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচির শুরুতে র‌্যালি করে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে হরিরামপুর শুকতারা বাসষ্টান্ড পর্যন্ত প্রদক্ষিণ করেন। র‌্যালি শেষে উপজেলা মিলনায়নত হলরুমে আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়।

IMG_20181013_113853
আলোচনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন হরিরামপুর উপজেলা ভূমি কমিশনার রাশেদা আক্তার। আলোচনায় তিনি বক্তৃতায় বলেন, ‘মানিকগঞ্জ জেলার মধ্যে হরিরামপুর উপজেলা একটি দুর্যোগ প্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। প্রতিবছর বন্যা, খরা, অতিবৃষ্টি, নদী ভাঙনসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করে এখানকার মানুষ তাদের জীবন জীবিকায়ন করে থাকে। হরিরামপুর উপজেলা নদী ভাঙন ও বন্যার কারণে ঘরবাড়ি, আবাদী জমি, জমির ফসল ও রাস্তাঘাট, শিক্ষ প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সম্পদের ক্ষতিগ্রস্ত করে থাকে। এ সকল সম্পদের ক্ষক্ষয়তি কমাতে আজকের এই আন্তর্জাতিক দূর্যোগ প্রশমন দিবস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে।’

IMG_20181013_120057
জনপ্রতিনিধি হরিরামপুর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান আবুল বাসার সবুজ বলেন, ‘দুর্যোগ দিবসের পালনের মধ্যে দিয়ে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে। হরিরামপুর উপজেলার সবচেয়ে বড় সমস্যা নদী ভাঙন ইতিমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে বাহাদুরপুর ঘাট থেকে হারুকান্দি পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার নদীর তীর রক্ষা বেড়িবাঁধ দেওয়া মাধ্যমে এলকার মানুষ তার জানমাল, সম্পদ রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে।’ চলমান এই নদী ভাঙনের হাত হতে রক্ষা জন্য সরকারে কাছে সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন হরিরামপুর উপজেলা পি আই ও মো. মনিরুল ইসলাম, আন্ধারমানিক মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষক মেহেদি হাসান ও বারসিক কর্মকর্তা সত্যরঞ্জন সাহা ও মুকতার হোসেন।

আলোচনায় উঠে আসে জলবায়ু পরিবর্তন মোকবেলায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ বজ্রপাত, বন্যা, নদীভাঙন আমাদের পূর্ব প্রস্ততি থাকতে হবে। যাতে আমাদের সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি কম হয়। এছাড়া মানুষ সৃষ্ট দুর্যোগকে রক্ষা জন্য আমাদের সকলের সচেতনাতা বাড়াতে হবে। বারসিক প্রায়োগিক গবেষণার মাধ্যমে পানিসহশীল ধান জাত (কাইশ্যাবিন্নি, মকবুল ধান) বাছাইয়ের মাধ্যমে চাষাবাদ করছেন। বসতবাড়িতে বিষমুক্ত শাকসবজি চাষাবাদের মাধ্যমে পুষ্টি চাহিদা পূরণ দুর্যোগ প্রশমনে ভূমিকা রাখছে। ব্রজপাত রোধে হরিরামপুর উপজেলায় রাস্তার দুই পাশে তাল খেজুর বীজ বপন করা হয়। তাছাড়াও প্রতিবছরের ন্যায় এবছর ২২১৬টি ফলজ (আম, পেয়ারা, ডালিম, জলপাই, কদবেল, বহেরা, লেবু) চারা রোপণ করা হয়। বন্যার সময় শিশু, বয়স্ক, প্রতিবন্ধী ও নারী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেবা প্রদানের আহবান জানান।

কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই দিবসটি পালনের মধ্যে দিয়ে তারা যে চিত্রাংকন তুলে ধরছেন তা থেকে নিজ এলাকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ তথা বন্যা, নদী ভাঙনের চিত্র উঠে এসেছে। চিত্রাংকন প্রতিযোগিদের মধ্যে পুরক্ষার বিতরণ করা হয় ।

happy wheels 2