নিরাপদ খাদ্য গ্রহণ আমাদের সবার প্রত্যাশা
হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ থেকে মুকতার হোসেন
হরিরামপুর উপজেলার লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নে হরিরহরদিয়া গ্রামে জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস উপলক্ষে হরিহরদিয়া কৃষক-কৃষাণী সংগঠনের উদ্যোগে নিরাপদ খাদ্যে নিয়ে গ্রামে মেলার আয়োজন করা হয়েছে। উক্ত মেলায় এলাকার কৃষকরা তাদের বাড়িতে উৎপাদিত রাসায়নিক কীটনাষক সার বিষ ছাড়া উৎপাদিত শাক-সবজি, ধান, গম, ডাল ও মসলা জাতীয় ফসল ষ্টলের মাধ্যমে উপস্থাপন করেন। এ ছাড়াও এলাকায় কুড়িয়ে পাওয়া অচাষকৃত উদ্ভিদ শাক খাওয়া যায় এবং বিভিন্ন ভেষজ উদ্ভিদ এই মেলায় স্থান পায়। কুড়িয়ে পাওয়া শাকের মধ্যে রয়েছে কাটানটা, দেলনটা, হেনছি, গোল হেনসি, ননটাখুরা, কাটা খুরা, কলমি শাক, কচুশাক, তেলাকুচা, বইতাশাক। ভেষজ ঔষুধি উদ্ভিদ এবং চরের আউশ ধান। বিভিন্ন ধরনের বৈচিত্র্যময় শাকসবজি ফসল নিয়ে পাটগ্রামচর, নটাখোলা, গঙ্গাধরদি, নতুনহাট, হরিহরদিয়া গ্রামের কৃষক-কৃষাণী অংশগ্রহণ করেন। কৃষকদের নিরাপদ খাদ্যর মেলার উদ্যোগকে আরোও সম্পসারিত করা। নিরাপদ খাদ্য গ্রহনে সবার প্রত্যাশার জায়গা নিয়ে যাওয়া এই মেলার মূল লক্ষ্য।
হরিরামপুর উপজেলার লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের কৃষি উপসহকারী অফিসার মাসুম আলী, মাঠ প্রশিক্ষক শহীদ বিশ্বাস, সাবেক ইউপি সদস্য ন্নানু প্রাং অংশগ্রহণ করেন। মেলায় নিরাপদ খাদ্যের উপকারিতা, অচাষকৃত শাক, ভেষজ উদ্ভিদ সংরক্ষণ, ব্যবহার নিয়ে নিয়ে আলোচনা সভা অনষ্ঠিত হয়।
আলোচনায় গঙ্গাধরদি গ্রামের কৃষক ন্নানু প্রামানিক বলেন, ‘আমরা চরের মানুষ কৃষি কাজের উপর আমাদের নির্ভর করে চলতে হয়। কৃষি আমাদের বেঁচে থাকার অন্যতম মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। চরের কৃষি বৈচিত্র্য যাতে টিকে থাকে সে কাজ আমাদের করতে হবে। আমাদের ফসল আমরা চাষ করব, আমরা বীজ রাখব, আমাদের ঘরে বীজ থাকবে, চাষ পদ্ধতি কৌশল আমাদের জানা থাকবে। তাহলে আমরা নিরাপদ খাদ্য খেতে পারব।’
আলোচনায় কৃষি উপসহকারী মাসুম আলী বলেন, ‘চরাঞ্চলে কৃষকদের উৎপাদিত শাকসবজি, গম, আউশ ধান, কালাই, মসলা জাতীয় অনেক ফসল রাসায়নিক সার বিষ ছাড়া কৃষকরা চাষ করছেন। ফলে আমরা যারা চরে বাস করছি বেশির ভাগ মানুষ নিরাপদ খাবার খেতে পারছি। জৈবসার, জৈব বালাই নাশক, ফেরোমিন ফাদ, আইপিএম চর্চার মাধ্যমে আমাদের ফসল উৎপাদনে গুরুত্ব দিতে হবে। ফলে একদিকে আমরা নিরাপদ খাদ্য গ্রহণ করতে পারব অপরদিকে উৎপাদন খরচ কমাতে পারব।’
বারসিক হরিরামপুর চরাঞ্চলে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত হোক এই জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এলাকায় গ্রাম পর্যায়ে সভা, সেমিনার, দিবস উৎযাপন, নিরাপদ খাদ্যর গ্রহণে বিলবোর্ড প্রদান, অভিজ্ঞতা বিনিময় সফর আয়োজনসহ নানান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে বারসিক।