পুকুর পুনঃখননের ফলে আমরা সবাই মিষ্টি পানি ব্যবহার করতে পারছি
বারসিকনিউজ ডেক্স
সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের আবাদ চন্ডিপুর ও চুনার গ্রামে অনেকগুলো সুপেয় পানির পুকুর ছিল। চুনা গ্রামের মানুষের সুপেয় পানি সংগ্রহের জন্য অনেক দুরে যেতে হতো, সেই কারণে চুনা গ্রামের মানুষ পুকুরের পানি পান করতেন তাঁরা। ভালোই চলছিল দিনকাল, কিন্তু প্রায় বছরে দুই-তিনটি ঘুর্ণিঝড় আঘাত হানে বলে এসব পুকুরের পানি পান অযোগ্য হয়ে পড়ে। কারণ গ্রামটি উপকূলীয় অঞ্চলের কাছাকাছি হওয়ায় প্রলয়কারী ঘুর্ণিঝড়ে বেঁড়িবাধগুলো ভেঙে লোকালয়ে প্রবেশ করে গ্রামের সুপেয় পানির পুকুরগুলো নষ্ট কওে এবং পানিকে দূষিত করে ফেলে।
অন্যদিকে অপরিকল্পিত লবণ পানির চিংড়ি ঘেরের কারণে সুপেয় পানির পুকুরগুলোতে লবণপানি প্রবেশ করে। এতে করে পুকুরের পানি লবণাক্ত হয়ে পড়ে যা পান করা যায় না। ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের আগে চুনা গ্রামে একটিমাত্র পুকুর ভালো ছিল। সেই পুকুরটির মালিক হান্নান গাইন। তবে বুলবুল ঘুর্ণিঝড়ের সময় সেই পুকুরটিতে গাছপালা পড়ে। এতে করে লবণপানি প্রবেশ করায় সেই পুকুরের পানি পানের জন্য অযোগ্য হয়ে পড়ে। এছাড়াও দীর্ঘ সময় খনন না করার ফলে পলিমাটি জমে ভরাট হয়ে গেছে।
হান্নান গাইনের একার পক্ষে পুকুরটি সুরক্ষা করা কষ্টসাধ্য কাজ। চুনা গ্রামের মানুষের একমাত্র সুপেয় পানি এই আধারকে সংস্কার করা জরুরি বলে মনে করেন ওই গ্রামের মানুষ। তাঁরা সম্মিলিতভাবে বারসিক’র কাছ থেকে সহায়তা দাবি করেন। বারসিক গ্রামের মানুষের চাহিদা বিবেচনা করে এই পুকুরটিকে সংস্কার করার জন্য সহযোগিতার হাত বাড়ায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সুপেয় পানির পুকুরটি খননের ব্যবস্থা করা হয়। বারসিক কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে চুনা, বনবিবিতলা এবং খাসকাটা গ্রামের ১৫ জন শ্রমিক ৯ দিন কাজ করে এই পুকুরটিকে সংস্কার করেন।
এই প্রসঙ্গে পুকুরের মালিক হান্নান বলেন, ‘বারসিক আমার এই পুকুরটি খনন করে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাই। আমার এই পুকুরটিতে শত শত পরিবার ব্যবহার করে। পুকুর পুনঃখননের ফলে আমরা সবাই মিষ্টি পানি ব্যবহার করতে পারছি ’ এলাকাবাসী ছাত্তার তরফদার বলেন, ‘পুকুরটি খনন করার ফলে আমরা এলাকাবাসী ব্যবহার করতে পারছি। এই পুকুরের পানি দিয়ে গবাদিপশু পালনে সহায়ক ভুমিকা পালন করছে। পুকুরের মিষ্টি পানি ব্যবহার করে সারাবছর বসতভিটায় মৌসুম ভিত্তিক সবজি চাষ করে পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা পূরণ হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘পুকুরটি পুনঃখনন করে পানি ব্যবহার উপযোগী করার ফলে চুনা, আবাদ চন্ডিপুর ও খাসকাটা গ্রামের ১০০টি পরিবার তাদের দৈনন্দিন কাজে পানি ব্যবহার করতে পারবেন। পুকুরের পানি ব্যবহার করার মাধ্যমে আন্তঃসম্পর্ক তৈরি হবে।’