জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণ জরুরি
ঢাকা থেকে নাজনীন নূর
জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত জরুরি। গতকাল বিশ^ খাদ্য দিবস উপলক্ষে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ও বারসিক কর্তৃক প্রেসক্লাবে আয়োজিত ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এই দাবি তুলে ধরেন।
পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. মো: জাহাঙ্গীর আলম, ধারষাপত্র পাঠ করেন বারসিকের সমন্বয়ক মো: জাহাঙ্গীর আলম, আলোচনা করেন পবার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুস সোবহান, বাংলাদেশ স্কাউটস জাতীয় কমিশনার আকতারুজ্জামান খান, নাসফের সাধারণ সম্পাদক মো: তৈয়ব আলী, বারসিক’র পরিচালক সৈয়দ আলী বিশ^াস, পবার সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জ্বল, মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্রের মহাসচিব মাহবুল হক, ডাবিøউবিবি ট্রস্ট এর প্রোগ্রাম মানেজার সৈয়দা অনন্যা রহমান, পুরান ঢাকা নাগরিক উদ্যোগের সভাপতি মো: নাজিমউদ্দিন, বানিপা এর সভাপতি প্রকৌ. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, বিডিক্লিক এর সভাপতি আমিনুল ইসলাম টুব্বুস, দেবীদাস ঘাট সমাজ কল্যাণ সংসদের সভাপতি মো: মুসা, বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলন এর প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো: হাসিবুল হক পুনম, মৃত্তিকা’র প্রোগ্রাম অফিসার খাদিজা খাতুন, বিডিক্লিক এর প্রধান সমন্বয়ক রোজিনা আক্তার, পবা এর সদস্য তোফায়েল আহম্মেদ, বারসিকের গবেষণা সহকারী সাবিনা নাঈম প্রমূখ।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তবে বিশিষ্ট কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. মো: জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘খাদ্যকে নিরাপদ রাখার জন্য ভেজাল প্রতিরোধে প্রচলিত আইনের প্রয়োগ বাড়াতে হবে। খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণ ল্যাব চালু করতে হবে। কোভিড থাকা সত্তে¡ও খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে এবং পুষ্টির মান বৃদ্ধি পেয়েছে। সারা পৃথিবীর চেয়ে বাংলাদেশের খাদ্যের উৎপাদন ভালো। কিন্তু খাদ্য উৎপাদনের পরিসংখ্যান একেক অধিদপ্তরে একেকরকম, এটা সমন্বয়ক করে সঠিক তথ্য বের করতে হবে।
সেমিনারে বক্তরা বলেন, ‘প্রতিটি এলাকায় কৃষক ক্লাব তৈরি করে নিরাপদ খাদ্য তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে। খাদ্যের সরকারি উদ্যোগে পরীক্ষা করে তার ফলাফল জনগণকে জানাতে হবে। খাদ্যকে নিরাপদ করতে খাদ্য উৎপাদন পদ্ধতি ও খাদ্যের উৎসস্থলকেই প্রথমত নিরাপদ করাটা জরুরি। তারপর থাকছে খাদ্য সরবরাহ, পরিবহন, বিপণন, মজুতকরণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও পরিবেশন। জমির মাটি থেকে খাবার থালা অবধি খাদ্য নিরাপদ হওয়া জরুরি। আমরা যেমন চাই নিরাপদ ভাবে খাবার উৎপাদন হোক, আবার ফরমালিন-কার্বাইড বা ক্ষতিকর কোনো উপাদান খাবারে মিশে থাকুক তাও চাইনা।
সেমিনারে বেশ কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয়। তার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো: খাদ্যে রাসায়নিক দ্রব্যাদি মিশানোর সাথে জড়িত এবং রাসায়নিক দ্রব্যাদিযুক্ত ও ভেজাল খাদ্য বিক্রয়কারীদের মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে দন্ড প্রদান অব্যাহত রাখা। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯, নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩ এবং ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৫ কঠোরভাবে বাস্তবায়ন এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা, জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে খাদ্যে বিষ বা ভেজালরোধে কোন রকম বৈষম্য বা রাজনৈতিক বিবেচনা ছাড়াই আইন প্রয়োগে সরকারের প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা, বিষ ও ভেজালমুক্ত খাদ্য নিশ্চিত করতে সরকারকে খাদ্যে বিষ ও ভেজাল মিশ্রণের উৎসমূল থেকে শুরু করে খুচরা বিক্রেতা পর্যায়ে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা, সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ রাসায়নিক পদার্থের আমদানিকারক ও ব্যবহারকারী এবং লেবেল ছাড়া বা মিথ্যা লেবেলের অধীন কীটনাশক বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা ইত্যাদি।