শিক্ষার্থীদের প্রকৃতি বাঁচানোর তাগিদ
নেত্রকোনা থেকে খাদিজা আক্তার
দুবাইতে জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৮ কে সামনে রেখে ৭০০ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে নেত্রকোনায় প্রকৃতি বাঁচানোর তাগিদ। ধনী দেশের মানুষের কর্মকান্ডের ফলে ও অধিকহারে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহারে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উত্তপ্ত হচ্ছে পৃথিবী। পৃথিবীর ধনী দেশদেশগুলো অধিক কার্বন নিঃসরণ করছে। তারা জলবায়ু চুক্তি মানছেনা। তারা পৃথিবীর জালবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছে। তাদের লোভ ও লাভের কারণে অধিক কার্বন নিঃসরণ হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ওজোন স্তর। জলবায়ু পরিবর্তনের বাংলাদেশে নেতিবাচক প্রভাবে বাড়ছে দুর্যোগ। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষি, পরিবেশ, প্রাণবৈচিত্র্য, বায়ু, পানি, মাটি, মানুষের জীবনযাত্রা। জলবায়ু উদ্বাস্তু হচ্ছে হাওর, পাহাড়, উপকূল ও সমতলের মানুষ।
নেত্রকোনা সদর উপজেলার লক্ষ্মীগঞ্জ ইউনিয়নের হাজী ফয়েজ উদ্দিন আকন্দ উচ্চবিদ্যালয়ের ৭০০ শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও যুবদের অংশগ্রহণে এক প্রকৃতি বন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে আজ ৬ নভেম্বর। শিক্ষাথীরা সমবেত হয়ে লাল কার্ড, প্লে-কার্ড, ফেস্টুন নিয়ে প্রতিবাদ জানায়। শিক্ষার্থীদের এই প্রতিবাদের মাধ্যমে বিশ্বকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, ‘পৃথিবী কার্বন দূষণকারী দেশ তোমরা থামো। আর দূষণ করে পৃথিবীকে বসবাসের অযোগ্য করে তোল না। আমাদের পৃথিবী একটাই।’
হাজী ফয়েজ উদ্দিন আকন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও লক্ষ্মীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.আজহারুল হক তুহিন শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে বিদ্যালয়ের সবুজ ক্যাম্পাসে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন শ্লোগান দিয়ে প্লেকার্ড প্রদর্শন করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সকল শিক্ষার্থী শিক্ষক আজ জলবায়ু ন্যায্যতার দাবি নিয়ে দাঁড়িয়েছি। দিন দিন জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে, আমরা নদী, জলাভূমি, গাছ, মাছ, প্রাণবৈচিত্র্যসহ প্রকৃতির সকল উপাদান হারিয়ে ফেলছি। প্রকৃতিকে নিজের মতো থাকতে দিচ্ছি না। ফলে নানা দুর্যোগের সম্মুখিন হচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘পৃথিবীর ধনী দেশের মানুষেরা তাদের কর্মকান্ডের মাধ্যমে আমাদের মতো দেশের ক্ষতি করছে। পরিবেশকে ভালো রাখতে হলে কার্বন দূষণ কমাতে হবে, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করতে হবে। আমরা চাই প্রতিটি মানুষ একটি সুন্দর পরিবেশ নিরাপদে বেঁচে থাকুক। আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য পৃথিবী আমরা রেখে যেতে কাজ করতে হবে”।
শিক্ষার্থীরা নানান রঙ্গের প্লেকার্ড ,ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে শ্লোগান তোলেন। শিক্ষার্থী ও যুবরা “কার্বন দুষণ থামাও, আমাদের বাঁচতে দাও”, “একটাই পৃথিবী, তোমাদের ভোগবিসালের কারণে বিলুপ্ত করোনা”, “ধনী দেশের মানুষ মিথ্যে বলছে”, “জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ছে”, “দেশে দেশে জলবায়ু উদ্বাস্ত মানুষ বাড়ছে”, “ওজোন স্তর নষ্ট করোনা, হারিয়ে যাবো আমরা”, “জীবাশ্ম জ¦ালানির ব্যবহার কমাও”, “আমরা চাই জলবায়ু ন্যায্যতা”, “জলবায়ু উদ্বাস্ততার জন্য ধনীদেশ দায়ী”, “জলবায়ু পরিবর্তনে বিলুপ্ত হচ্ছে প্রাণবৈচিত্র্য”, “জলবায়ু ন্যায্যতার জন্য জনমঞ্চ গড়ো, হাওর পাহাড় সমতলে জলবায়ু ন্যায্যতা নিশ্চিত করো, যুদ্ধ থামাও”, “অস্ত্র কারখানা বন্ধ করো, পাঠাগার গড়ো” “জলবায়ু পরিবর্তন বাড়ছে দুর্যোগ উদ্বাস্তু হচ্ছি আমরা”, “ধনী দেশের ভোগ বিলাস আমার দেশের সর্বনাশসহ তিন শতাধিক প্লেকার্ড, ফেস্টুন প্রদর্শন করেন।