বাড়ির আঙিনায় সবজি চাষে সফল জোহরা বেগম
আল-আমিন হোসেন, (প্রতাপনগর) আশাশুনি, সাতক্ষীরা
বাড়ির আঙিনায় ফুলকপি, লাউ, পুইশাক, পেঁপে, মেটে আলু, ওল, বেগুন, ঝাল, লালশাক, পালন শাকে ভরা। দেখে মনে হবে একটি খামার বাড়ি। এই সবজি ক্ষেতে কাজ করছেন একজন নারী। তাঁর হাতেই উৎপাদিত হচ্ছে এসব সবজি। সবজি উৎপাদনে ব্যবহার করছেন জৈব সার। এই সবজি পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বিক্রি করছেন। একজন নারী রাখছেন তার সংসারে অবদান।
আশাশুনি প্রতাপনগর ইউনিয়নের পরামানিক পাড়া গ্রামের জোহরা বেগম এই সবজি চাষ করছেন। স্বামী কারিমুজ্জামান ও তিন সন্তান নিয়ে তাঁর সুখের সংসার এখন। স্বামী দিনমজুরের কাজ করেন। আর জোহরা বেগম বাড়িতে সবজি চাষ, ছাগল পালন ও হাঁস-মুরগি পালন করেন। এগুলো করে জোহরা বেগম নিজ সংসারে রাখছে বড় অবদান।
জোহরা বেগমরা জলবায়ু পরিবর্তনের সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত। তাঁর গ্রাম আইলা, সিডর ও আম্পানের তলিয়ে যায়। দু’বছর আগেও তার বাড়ির আঙিনায় নোনা পানিতে তলিয়ে ছিলো। সবজি, ছাগল পালন ও মুরগি পালন ছিলো স্বপ্নের মতো। পানি সরে যাওয়ার পর ঘুরে দাঁড়ানো অনেক চেষ্টা করেছেন এবং সফলও হয়েছে। বিশেষ করে সবজি চাষে বেশি সফলতা দেখেছেন জোহরা বেগম।
তার এই সফলতার পেছনে বড় ভূমিকা রেখে বারসিক ও নেটজ বাংলাদেশের পরিবেশ প্রকল্প। প্রকল্প থেকে পাওয়া জলবায়ু সহনশীল কৃষি চর্চা প্রশিক্ষণ তাঁর বাড়ির আঙিনায় সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করেছে। প্রশিক্ষণ পাওয়ার পর প্রকল্প থেকে পাওয়া সবজির বীজ বাড়ির আঙিনায় রোপণ করে সফলতার মুখ দেখেন। তারপর জৈব সার তৈরি প্রশিক্ষণ পেয়ে সেটিও প্রয়োগ করেন তাঁর কৃষি কাজে।
জোহরা বেগম জানান, বারসিক ও নেটজ বাংলাদেশের পরিবেশ প্রকল্প থেকে পাওয়া কৃষি প্রশিক্ষণ তাঁর জীবন বদলে দিয়েছে। এখন তিনি পুরো কৃষাণী। বাড়ির আঙিনায় সবজি চাষ করে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বিক্রিও করছেন। প্রতিমাসে প্রায় ২ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করেন এবং প্রকল্প থেকে পাওয়া ছাগল ও মুরগি পালন করছেন। তার বর্তমানে ৫টি ছাগল ও ৬টি মুরগি রয়েছে। এখন তাঁর পরিবারে আর আগের মত অভাব নেই। জোহরা বেগম এখন তার এলাকায় কৃষিতে পরিচিত মুখ।