ঔষুধি কালো ধুতরা
তানোর, রাজশাহী অনিতা বর্মণ
ধুতরা নামে এই গাছটি আমাদের দেশে সবার কাছে পরিচিত। ভেষজ গুনাগুণের পাশাপাশি কালো ধুতরা গাছের সৌন্দর্য অত্যন্ত আর্কষণীয় ও মনোরম। বাংলাদেশের প্রায় সব জায়গায় অযত্নে অবহেলার মাঝেও ধুতরা গাছ জন্মাতে দেখা যায় । সাধারণত ভিজে স্যাঁত স্যাঁতে মাটিতে এই গাছ জম্মায়।
রাজশাহী জেলার, তানোর পৌরসভার গোকুল মথুরা গ্রামের শ্রী জিতেন্দ্র নাথ সূত্রধর (৫৬) বলেন, “কালো ধুতরার কিছু উপকারিতা সর্ম্পকে জানা যায়। রাস্তার ধারে, পতিত জমিতে, নদীর ধারে বনে জঙ্গলে ধুতরা গাছ আগে প্রায়ই চোখে পড়তো। কিন্তু এখন আর এই গাছ আর চোখে পড়েনা। ধুতরা গাছের শাখা প্রশাখা অগ্রভাগে ফুল ধরে, ফুল দেখতে লম্বাকৃতির। ধুতরা গাছের দু’টি প্রজাতি আমাদের দেশে চোখে পড়ে কালো ও সাদা ধুতরা। সাদা ধুতরা গাছের ফুলের রঙ সাদা এবং কালো ধুতরা গাছের ফুলের রঙ বেগুনি। ফল গোলাকার, ফলের গা ছোট ছোট কাঁটা আছে। কোনো পশুপাখি এই গাছের পাতা, ফুল ও ফল খায় না।”
ধুতরার মাধ্যমে নানা ধরনের রোগের চিকিৎসা গ্রাম অঞ্চলে হয়ে থাকে। এর মধ্যে বাত ব্যথায় কালো ধুতরার পাতার রস পরিমাণ মতো এবং পরিমাণ মতো আদা এক সাথে বেটে মিশ করে প্রতিদিন সকালে শরীরে মেখে এবং এরপর শুকিয়ে গেলে স্নান করে ধুয়ে ফেলতে হয়। এভাবে প্রতিদিন ব্যবহারে শরীর থেকে বাত ব্যথা ভালো হয়ে যায় বলে জানান শ্রী জিতেন্দ্র নাথ সূত্রধর। তিনি বলেন, “মেহরোগ (শারীরিক র্দুবলতা) থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এই কালো ধুতরা শেকড় থেকে। ধুতরা, উলোট কম্বল, বোনকাবাসি, তালমুল, শতমুল,অন্ততমুল এই সব গাছের শেকড় পরিমাণ মতো নিয়ে একত্রে বেটে শরবত করে খেলে শারীরিক র্দুবলতা ভালো হয়।”
এছাড়া দাঁতের ব্যথা দুর করতে ধুতরা গাছের মূলের রস দাঁেত লাগালে ব্যথা কমে যায়। অনেক দূর দূরান্ত থেকে মানুষ এসে এই কালো ধুতরা পাতা, শেকড়, ফল ও ফুল নিয়ে যায় ।
বর্তমানে কালো ধুতরা ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। আগের মত এখন আর চোখে পড়ে না। তাই গ্রামের প্রান্তিক কবিরাজ ও ব্যক্তিরা এই ধুতরা সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করার উপর জোর দাবি জানান।