বাল্য বিবাহ ও নারী নির্যাতন রোধে পরিবারকেই প্রধান ভূমিকা পালন করতে হবে
মানিকগঞ্জ থেকে মো. নজরুল ইসলাম ও আছিয়া আক্তার
গত ১৫ নভেম্বর ২০১৮ বারসিক’র উদ্যোগে এবং দাতা সংস্থা উইমেন্স ওয়ালর্ড ডে অফ প্রেয়ার জার্মান কমিটির সহযোগিতায় সিংগাইরে নারী নির্যাতন রোধে ধর্মীয় নেতা ও প্রশাসনের সাথে বাল্য বিবাহ নিরোধ আইন বিষয়ক সংলাপ ও মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে জাতীয় মহিলা সংস্থা সিংগাইর উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক শাহীন আক্তার এর সভাপতিত্ত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিংগাইর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ারা খাতুন, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন খেলাঘর আসর মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি অধ্যাপক জগদিশ চন্দ্র মালো, এ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমান মিলন, বারসিক সিংগাইর এলাকা সমন্বয়কারি শিমুল কুমার বিশ্বাস। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ পাঠ করেন বারসিক’র মো. নজরুল ইসলাম, কাজী মো. ইসমাইল হোসেন, পুরোহিত পরিমল চন্দ্র অধিকারি, বৃষ্ণ চ্যাটার্জি, ইউপি সদস্য মো. শাজাহান মিয়া, শহীদ রফিক যুব সেচ্ছাসেবক টিমের সদস্য সচিব মো. মিতাব হোসেন প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, ‘বাল্য বিবাহ বর্তমানে একটি সামাজিক ব্যাধি। এটি মাদকের চেয়ে কম নয়। সমাজে বিভিন্ন কারণে নারীরা বাল্য বিবাহের শিকার হয়ে থাকেন। এর অন্যতম কারণ হলো কন্যা সন্তানের প্রতি পিতামাতার অনাস্থা, ধর্মীয় কৃসংস্কার, শিক্ষার অভাব, পারিবারিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা, বয়স হলে যৌতুকের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া, যোগ্য ছেলের অভাব, বেকারত্ব ইত্যাদি।’ তারা আরও বলেন, ‘বাল্য বিবাহ ও নারী নির্যাতন রোধে পরিবারকেই প্রধান ভূমিকা পালন করতে হবে। তারপর সমাজ ও রাষ্ট্রকেও দেখতে হবে। সামাজিকভাবে সমস্যা সমাধান না হলে আইন প্রয়োগে বাধ্য করতে হবে। আইন প্রয়োগ করে সমাধান না করে নিজেদের সমস্যা নিজেকেই মোকাবিলা করাটাই ভালো। বর্তমান আইনে তর্ক বিতর্ক থাকলেও কেউ যেন আইনের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে যেতে না পারে সে ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, ‘বাল্য বিবাহকে না বলি, বাল্য বিবাহকে লাল কার্ড, পারিবারিক নির্যাতন আর নয়, নারীর শত্রু নারী নয়, ঘরে বাইরে নারী নির্যাতন বন্ধ করি, সকল প্রকার বৈষম্য রোধ করি” এই ধরনের স্লোগানকে প্রত্যয় করে গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক সিংগাইর রিসোর্স সেন্টার সিংগাইর পৌরসভা, বায়রা ও বলধারা ইউনিয়নসহ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে নারীর ক্ষমতায়ন ও সামাজিক ন্যায্যতা নিশ্চিতের লক্ষ্যে কাজ করে আসছে।