খরগোশ পালন করে স্বচ্ছল ফিডেল রিছিল

কলমাকান্দা নেত্রকোনা থেকে গুঞ্জন রেমা

নেত্রকানা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার লেংগুড়া ইউনিয়ন থেকে ৪ কিলোমিটার উত্তরে মেঘালয় পাহাড় ঘেঁষা একটি গ্রাম কালাপানি। এই গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে একটি পাহাড়ি ছড়া যার নাম কালাপানি ছড়া। কথিত আছে যে, এই ছড়ার পানি একসময় কালো দেখা যেত। এই কালো পানির কারণে এই গ্রামের নামকরণ করা হয়েছিলো কালাপানি। এই গ্রামে বাস করেন ৩০টি গারো আদিবাসী। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ভরা এই গ্রামের অনেকেই কৃষি কাজ করে জীবন ধারণ করেন। এই কালাপানি গ্রামেই বাস করেন ফিডেল রিছিল যিনি খরগোশ পালন করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। অন্যদেরকে অনুপ্রাণীত করেছেন কৃষিকাজের পাশাপাশি পশু পালনের জন্য।

rabit-1
ফিডেল রিছিল ২০১৩ সাল থেকে খরগোশ পালন করতে শুরু করেন। এ পর্যন্ত তিনি প্রতি জোড়া ৬০০-১০০০ টাকা দরে মোট ৪৬ জোড়া খরগোশ বিক্রি করেছেন বলে জানান। খরগোশ পালনের ক্ষেত্রে যতœবান হতে হয়। তাদের ঠিকমতো খাবার দিতে হয় বলে তিনি জানান। খরগোশের খাবার হিসেবে তিনি দুর্বা ঘাস, কাটা মান্দাল গাছের পাতা, মুলা, বাঁধাকপি, ভূট্টা, চাল, ভাত, গমের ভূষি ইত্যাদি ব্যবহার করেন। এসব খাবার কৃষিজমিতে থেকে সংগ্রহ করা যায় বলে স্বল্প খরচেই খরগোশ পালন করা যায় বলে তিনি জানান। অন্যদিকে এলাকায় খরগোশের চাহিদাও মোটামুটি ভালোই আছে। কেউ শখের বসে, কেউ আবার মাংসের জন্য খরগোশ কেনেন।

ফিডেল রিছিল জানান, প্রতিমাসে বাচ্চা দেওয়ার কারণে খরগোশের দ্রুত বংশবৃদ্ধি হয়। তবে বাচ্চা প্রসবের সময় হওয়ার আগে থেকেই পুরুষ খরগোশটিকে আলাদা করতে হয়। তা না হলে পুরুষ খরগোশটি বাচ্চাগুলো মেরে ফেলে। ফিডেল ছাড়াও গ্রামে আরো ১০ জন খরগোশ পালন করেন। ফিডেলের সাফল্য তাদেরকে অনুপ্রাণীত করে।
খরগোশের রোগবালাইয়ের এর মধ্যে রয়েছে পেটফুলা, দাউদ, জ¦র। এছাড়াও হঠাৎ করে মরে যাওয়ার প্রবণতাও দেখা যায়। এ অবস্থা দেখা দিলে ফিডেল রিছিল স্থানীয় বাজারের পশু ডাক্টারের পরামর্শে ঔষধ সেবন করান খরগোশগুলোকে। খরগোশ পালনের অভিজ্ঞতা থেকে ফিদেল রিছিল বলেন, “যদি খরগোশ রাখার ঘরটি পরিষ্কার রাখা যায় তাহলে রোগ বালাই কম হয়।”
খরগোশ পালন করে অবসর সময় যেমন কাটছে তেমনি আবার বাড়তি টাকাও আয় করতে পারছেন কালাপানি গ্রামের খরগোশ পালনকারীদের। এটি যদি ব্যবসায়িক ভিত্তিতে পালন করা যেত তবে ভালোই লাভবান হওয়া যেত বলে জানান আর একজন খরগোশ পালনকারী দায়ুদ রংদী।

happy wheels 2