পুকুর পুনঃখননে সুফল পাচ্ছেন গ্রামবাসী
সাতক্ষীরা থেকে বাবলু জোয়ারদার ও মননজয় মন্ডল
সাতক্ষীরার শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনী ও পদ্মপুকুর ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্তদের ভেতর জবযধনরষরঃধঃরড়হ ড়ভ ঈুপষড়হব ইঁষনঁষ চৎড়মৎধসসব নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। স্থানীয়দের মাধ্যমে ও ইউনিয়ন পরিষদের সমন্বয়ে বুলবুল প্রকল্পের সামগ্রিক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়। প্রথমে তালিকা প্রস্তুত পরে সেটা যাচাই বাছাই করে চুড়ান্ত তালিকা তৈরি করে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়। কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য সিএইচএস (মানবিক কর্মকান্ডে মূল আদর্শমানের নয়টি অঙ্গীকার) অনুসরণ করা হয়েছিল। বুলবুল প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন কমিটি, বারসিক মনিটরিং এবং ক্রয় কমিটির মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়ে সমগ্র কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছিল। উক্ত প্রকল্পের আওতায় পদ্মপুকুর ইউনিয়নের কামালকাটি গ্রামের অসীম কুমার মন্ডলের সুপেয় পানির পুকুরটি পুনঃখনন করা হয়। উক্ত পুকুরটি পুনঃখননের ফলে স্থানীয়দের কোন ধরনের প্রভাব পড়েছে বা তার ফলাফল কেমন সে বিষয়ে তথ্যানুসন্ধানের জন্য এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক ও কামালকাটি একতা যুব সংঘের আয়োজনে গতকাল কামালকাটি গ্রামে সুপেয় পানির পুকুর পুনঃখনন পরবর্তী অবস্থা বিষয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কৃষাণী মনোরমা রানী, অনিল কৃষ্ণ মন্ডল ও শরৎ চন্দ্র মন্ডল বলেন, ‘আমাদের এই এলাকার মানুষদের জন্য এই একটিমাত্র মিষ্টি পানির পুকুর। এই পুকরের পানি আমরা রান্না-বান্নœা, থাল বাসন ধোয়া, গরু ছাগলকে খাওয়ানো, কাপড় চোপড় ধোয়াসহ সামগ্রিক কৃষি কাজে ব্যবহার করি। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে নদীর বাঁধ ভেঙে আমাদের এলাকার সকল পুকুর লবণ পানিতে ডুবে যায়। পরে বারসিক’র সহযোগিতায় এটি পুনঃখনন করে ব্যবহার উপযোগি করায় মানুষের ব্যাপক উপকার হচ্ছে।
বারসিক’র আঞ্চলিক সমন্বয়কারী পার্থ সারথী পাল বলেন, ‘আমাদের বারসিক’র কাজ হল স্থানীয় জনউদ্যোগের সাথে থাকা। আপনাদের নিজেদের সমস্যা সমাধানে নিজেরাই ভূমিকা নেবেন, আমরা আপনাদের উন্নয়ন উদ্যোগের সহযাত্রী হিসেবে থাকতে চাই।’
অসিম কুমার মন্ডল বলেন, ‘আমাদের এলাকার ২৫০টি পরিবার প্রতিদিনের কাজে এই পুকুরের পানি ব্যবহার করেন। দীর্ঘ সময় এই পুকুরটি পুনঃখনন না করায় এবং ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াতে বারসিক ও স্থানীয়দের যৌথ উদ্যোগ ও সহযোগিতায় আমরা পুকুরটি পুনঃখনন করি। আমাদের মোট খরচ হয়েছিল একাশি হাজার পাঁচশ’ টাকা। এর মধ্যে বারসিক সহযোগিতা করেছিল একচল্লিশ হাজার পাঁচ শত টাকা। বারসিক’র সহযোগিতায় উক্ত পুকুরটি পুনঃখনন করতে পারায় এই এলাকার মানুষেরা নানা কাজে এই মিষ্টি পানি ব্যবহার করছেন।’
কামালকাটি একতা যুব সংঘের সভাপতি উত্তম কুমার মন্ডল পুকুর পুনঃখননের জন্য বারসিককে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তাদের এলাকার জন্য একটি পিএসএফ স্থাপনের সহযোগিতা চেয়ে সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
বারসিক কর্মকর্তা মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় উক্ত আলোচনা সভায় বুলবুল প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য রামকৃষ্ণ জোয়ারদার, মফিজুর রহমান, মননজয় মন্ডল, শেফালী বিবি ও রাবেয়া সুলতানা, বারসিক’র আঞ্চলিক সমন্বয়কারী পার্থ সারথী পাল, প্রোগ্রাম অফিসার বাবলু জোয়ারদার, বিশ^জিৎ মন্ডল, হিসাব রক্ষক বিধান মধু, কামালকাঠি একতা যুব সংঘের সভাপতি উত্তম কুমার মন্ডল, শিক্ষক অসিম কুমার মন্ডল ও স্থানীয় কৃষক কৃষাণী ও যুব প্রতিনিধিসহ ১০ জন নারী ও ২০ জন পুরুষসহ মোট ৩০ জন উপস্থিত ছিলেন।