বর্ণবৈষম্য ভুলে, সবাই এক হয়ে যাই
মানিকগঞ্জ থেকে কমল চন্দ্র দত্ত ও ঋতু রবি দাস
‘আসুন সবাই কাজ করি, বর্ণবৈষম্য বিলোপ করি’-এই শ্লোগানকে সামনে রেখে গতকাল রবিদাস পাড়া নারী উন্নয়ন সমিতি’র উদ্দ্যোগে এবং বারসিক’র’ সহযোগিতায় পালিত হলো বর্ণবৈষম্য বিলোপ দিবস। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বারসিক সমন্বয়কারী বিমল রায়, প্রোগ্রাম অফিসার রাশেদা আক্তার, নজরুল ইসলাম, সহযোগী প্রোগ্রাম অফিসার কমল চন্দ্র দত্ত, মাঠ সহায়ক রুমা আক্তার, শিবানী চক্রবর্ত্তী, ঋতু রবি দাস, রবিদাস পাড়ার আদিবাসী সমিতির সভাপতি দশরথ রবি দাস, ৬নং ওয়ার্ড এর কাউন্সিলর শায়েখ শিবলী এবং ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ড এর নারী কাউন্সিলর রাজিয়া সুলতানা।
কমল চন্দ্র দত্ত এবং ঋতু রবি দাস এর সঞ্চালনায় আলোচনায় ৬নং ওয়ার্ড এর কাউন্সিলর শায়েখ শিবলী বলেন, ‘বর্ণবৈষম্য বিলোপ দিবস আয়োজনের জন্য বারসিককে ধন্যবাদ। বর্ণবৈষম্য বিলোপ আমাদের সবাইকে মিলে করতে হবে। আমরা সবাই মিলে সমতার দেশ গড়তে চাই, যেখানে কোন জাতপাতের ভেদাভেদ থাকবেনা। আমি এই এলাকার মানুষের সমস্যাগুলোর সমাধান করব অতি শীঘ্রই। আমরা আপনাদের রেশন কার্ড দিব, ভিজিএফ কার্ড আসলে সেটাও দিব। ১০ টাকা কেজি চাল খেতে পারেন সেই জন্য আপনাদের কার্ড দিব।’
নারী উন্নয়ন সমিতি’র সংগঠনের সভাপতি সীমা রানি দাস বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ৬নং ওয়ার্ডে খাবার জলের সংকট দেখা দিচ্ছে। শীতজুড়েই এলাকার লোকজন রাত ২টা, ৩টার দিকে উঠে উঠে জল ভরেছে। সারাদিন পরিশ্রম করার পরে রাত জেগে আর খাবার জল ধরতে ইচ্ছা করেনা। আমাদের জনপ্রতিনিধিরা সমস্যার সমাধান না করলে কে করবে?’
৪,৫,৬ নং ওয়ার্ড এর নারী কাউন্সিলর বলেন, ‘এই গরমের দিন আসলে পানির সংকট হয় তবে আমরা অতি দ্রুতই সমস্যার সমাধান করার চেস্টা করব।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমাদের হাতে বয়স্ক ভাতা এবং বিধবা ভাতার কার্ড আসেনি। আসলে যারা পাওয়ার যোগ্য আমরা তাদের দেব।’
দশরথ রবি দাস বলেন, ‘আমাদের সম্প্রদায়ের জন্য একটা নির্দিষ্ট কাজের জায়গা নির্মাণ করে দিলে আমাদের অনেক উপকার হয়। আমাদের রবিদাস সম্প্রদায়ের ছেলে মেয়েদের জন্য শিক্ষাক্ষে্েত্র কোটার ব্যবস্থা রাখলে আমাদের সন্তানদের জন্য অনেক উপকার হয়। তারাও লেখাপড়ায় আগ্রহী হয়ে উঠবে। বারসিক সেই ২০০৯ সাল থেকে আমাদের পাশে আছে, আমাদের সন্তানদের শিক্ষার ক্ষেত্রে তাদের একটা বড় অবদান আছে।’
এর আগে দিনটির তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করেন নজরুল ইসলাম এবং বিমল রায়। নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের একটাই পরিচয় হওয়া উচিত আর সেটা হলো আমরা মানুষ জাতি। মানুষে মানুষে ভেদাভেদ আমরাই সৃষ্টি করি, আমরাই কালো মানুষকে হেয় করি এবং সুন্দরের পুজা করি। এগুলো করে শুধু নিজেকেই আমরা ছোট করি।’ বিমল রায় বলেন, ‘আজ থেকে প্রায় ১০-১২ বছর আগে থেকে বারসিক এখানে কাজ শুরু করে। তখনকার পরিবেশ এবং এখনকার পরিবেশ ভিন্ন। এখন আপনাদের এলাকায় শিক্ষার হার বেড়েছে এবং এই শিক্ষাই পারে বর্ণবৈষম্য দূর করতে। মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ভুলে যেতে।’