জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য আমরা দায়ি না
রাজশাহী অমৃত কুমার সরকার
বারসিক ও তালন্দ আনন্দ মোহন উচ্চ বিদ্যালয়ের যৌথ আয়োজনে জলবায়ুর মাত্রাতিরিক্ত পরিবর্তন রোধ ও জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে সম্প্রতি “জলবায়ুর মাত্রাতিরিক্ত পরিবর্তনের বিরুদ্ধে ‘স্কুল ধর্মঘট” অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে ২০০ স্কুল শিক্ষার্র্থী, শিক্ষক, উন্নয়নকর্মীসহ নানান পেশার ও শ্রেণীর মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
উক্ত আয়োজন বিষয়ে তালন্দ আনন্দ মোহন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আলতাব হোসেন বলেন, ‘ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্য জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনের ন্যায্যতার দাবিতে আমরা এই কর্মসূচির আয়োজন করেছি। আমরা জলবায়ু পরিবর্তনে খুব কম ভূমিকা পালন করলেও আমাদেরই ক্ষতি হচ্ছে বেশি। তাই আমার আমাদের এই ছোট্ট কর্মসূচির মাধ্যমে সারা বিশ্বক জানাতে চাই জলবায়ু পরিবর্তনে আমরা দায়ি নই।’
৯ম শ্রেণীর মোসাঃ শোভা আক্তার বলে, ‘আমাদের এ অঞ্চলে অনেক গরম, এখন আগের মতো বৃষ্টিও হয় না। খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। আমাদের ভবিষ্যৎ যেন জলবায়ুগত কারণে নষ্ট না হয় এ আহব্বান জানাতেই আমি এ কর্মসূচিতে যুক্ত হয়েছে।’ ৮ম শ্রেণীর অপর এক আদিবাসী ছাত্রী সীমা টুডু বলে, “আমাদের গ্রামের টিউবওয়েলগুলোতে আর পানি ওঠে না। আমরা অনেক দূূর থেকে পানি নিয়ে খাই। আগের থেকে অনেক বেশি গরম এখন। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যেন আমাদের নদী, পুকুর, বিলগুলো শুকিয়ে না যায়।’
জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে আলোচনার পর এই বিষয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে উক্ত বিষয়ে কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এরপর স্কুলের মাঠে সকল ছাত্র-শিক্ষক একসাথে হয়ে জলবায়ুর ন্যায্যতার দাবি জানান। এ বিষয়ে বাংলাদেশ রির্সোস সেন্টার ফর ইন্ডিজেনাস নলেজ (বারসিক) কর্মসূচি কর্মকর্তা জানান, জলবায়ু পরিবর্তন একটি বৈশ্বিক বিষয় হলেও বাংলাদেশ সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত। আমরা আমাদের কর্মসূচির মাধ্যমে সারা বিশ্বকে জানাতে চাই জলবায়ুর সুবিচার এখনই দরকার।
জলবায়ু পরিবর্তন একটি বৈশ্বিক বিষয় সেখানে বাংলাদেশের ভূমিকা খুব কম থাকলেও ক্ষতিগ্রস্ততার দিক থেকে বাংলাদেশ সবার আগে। জলবায়ুগত কারণে বাংলাদেশে সংকট দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনিয়মিত বৃষ্টিপাত, তাপদাহের ফলে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল আজ হাপিয়ে উঠেছে। বরেন্দ্র অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আজ সকল স্তরেই দেখা যাচ্ছে। বৃষ্টিহীনতা, মাত্রাতিরিক্ত তাপপ্রবাহ, পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়া, সুপেয় পানির অভাব এখন নৈমেত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর কারণে শীতের দৈর্ঘ্য যেমন কমেছে, তেমনই কমছে ভূগর্ভস্থ পানির রিজার্ভ।