গরীবের ডাক্তার
ভাঙ্গুড়া, পাবনা থেকে মো. মনিরুজ্জামান ফারুক:
‘গরীবের ডাক্তার’ বলা হয় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসককে। এ পদ্ধতিতে স্বল্প খরচে কার্যকরী চিকিৎসা সেবা পাওয়া যায় বলেই হয়তো এমন কথা মানুষের মুখে মুখে চলে এসেছে। এক সময় আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে এবং বৈজ্ঞানিক মহলে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতিকে অবৈজ্ঞানিক, আজগুবি আর হাতুড়ে চিকিৎসা হিসেবে গণ্য করা হতো। পরবর্তীতে কঠোর বৈজ্ঞানিক পর্যালোচনার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে যে, এই কতিপয় ফলাফলের পিছনে ছিল ক্রটিপূর্ণ গবেষণা পদ্ধতি ও কিছু গবেষকের পক্ষপাতদুষ্ট ফলাফল উপস্থাপন।
জানা গেছে, দেশে সরকারী-বেসরকারী মিলে ৫৪ টি হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল রয়েছে। সরকার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা সেবা বিকাশের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে দেশের ৯০টি সরকারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হোমিও চিকিৎসক নিয়োগ দিয়েছেন। চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি সরকারী এ সকল হাসপাতাল থেকেই রোগীদের বিনামূল্যে হোমিও ওষুধও সরবরাহ করা হচ্ছে। অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসার পাশাপাশি মানুষ এখন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতির দিকেও ঝুঁকছে। দিন দিন এ চিকিৎসা পদ্ধতি জনপ্রিয়ও হয়ে উঠছে। পুরাতন, জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসায় রীতিমতো হোমিও চিকিৎসকের শরণাপন্ন হচ্ছে মানুষ।
একটি বেসরকারী গবেষনার তথ্য মতে, দেশের প্রায় ৪০ ভাগ মানুষ এখন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা সেবা নেন। আর দেশে গত ১৫ বছরে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা নেওয়া লোকের সংখ্যা বেড়েছে অনন্ত চার গুণ। এ ব্যাপারে পাবনার আটঘরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার (হোমিওপ্যাথিক) ডাঃ জাকারিয়া খান মানিক বলেন, “হোমিওপ্যাথিক ওষুধের কোন পার্শ¦প্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে। চিকিৎসা ব্যয়ও খুব কম। স্বল্প আয়ের মানুষেরা সহজেই এ চিকিৎসা সেবা নিতে পারেন।” এ চিকিৎসা পদ্ধতির সেবা ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে অনন্ত প্রতিটি বিভাগীয় শহরে একটি করে হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল চালু করার প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। অভিজ্ঞ মহল মনে করেন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের যথাযথ মূল্যায়ন করলে দেশের স্বাস্থ্য সেবায় নতুন দিগন্তের সুচনা হতে পারে।