বারসিক জননেতৃত্ব উন্নয়ন কর্মসূচি জনমূল্যায়ন ও ভবিষ্যতের জন্য সুপারিশ
সাতক্ষীরা থেকে মননজয় মন্ডল
বারসিক উপকূলীয় এলাকায় সকাল জননেতৃত্বে উন্নয়ন প্রক্রিয়া প্রকল্পটি সফলভাবে তিনবছর অতিবাহিত করায় এক জনমূল্যায়ন সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ২৫ জুন বারসিক শ্যামনগর রিসোর্স সেন্টার কার্যালয়ে। ১৫ জন এবং অনলাইন জুম এ্যাপে এবং ১৫ জন অংশগ্রহণকারীদের উপস্থিতিতে জনমূল্যায়ন সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। বিদ্যমান করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি স্বাস্থ্য বিধি মেনে উক্ত সভাটি পরিচালিত হয়। সভায় উপস্থিত অংশগ্রহণকারীদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল তারা বারসিক’র কোনো কাজে কখনো যুক্ত হয়েছেন কিনা, বারসিকের কাজ সম্পর্কে জানেন কি না? সেসব কাজ এলাকার জনগোষ্ঠী এবং গ্রামীণ উন্নয়নে কোনো ভূমিকা রেখেছে কিনা? বারসিক’র কাজের মূল্যায়ণের পাশাপাশি করোনা ও আম্পান পরবর্তী সময়ে আরো কি কি কাজ করা যেতে পারে সেসব বিষয়ও তাদের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে সভায়।
অংশগ্রহণকারীরা বারসিক’র কাজের মূল্যায়ণের পাশিাপাশি ভবিষ্যতের জন্য কিছু পরামর্শ প্রদান করেন। শ্যামনগর উপজেলা জনসংগঠন সমন্বয় কেন্দ্রের সভাপতি শেখ সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে উক্ত সভাটি সঞ্চালনা করেন বারসিক’র আঞ্চলিক সমন্বয়কারী পার্থ সারথী পাল। উক্ত সভায় উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা শেখ সাইদুর রহমান, ইউপি চেয়ারম্যান ভবতোষ কুমার মন্ডল, বারসিক ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য শেখ সিরাজুল ইসলাম, রণজিৎ বর্মন, জাকীর হোসেন, কৌশল্যা মুন্ডা, শেফালী বিবি, মনিকা রানী, পার্থ সারথী পাল ও পাভেল পার্থ, ইউপি সদস্য, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য, শিক্ষক, বনবিভাগের প্রতিনিধি, সাংবাদিক, আদিবাসী মুন্ডা প্রতিনিধি, যুব প্রতিনিধি, জনসংগঠনের প্রতিনিধি, বারসিক ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য, বারসিক কর্মকর্তাসহ মোট ৩০ জন আলোচনায় অংশ নেন।
আলোচনায় অংশগ্রহনকারীগণ বারসিক কাজের সাথে নানাভাবে যুক্ত ছিলেন বলে উল্লেখ করেছেন। আলোচকরা জানান, গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক উপকূলীয় এলাকায় দীর্ঘ সময় ধরে উন্নয়নমূখি কাজ করে চলেছে। বারসিক’র কাজের ধারা ও প্রক্রিয়া ভিন্ন হওয়াতে উপকূলীয় এলাকায় বারসিকের যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। তাদের যে সকল গবেষণা কাজ রয়েছে, বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া, প্রান্তিক ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য ভালোবাসা, প্রাণবৈচিত্র্য সুরক্ষায় অবদান, কৃষি ও কৃষকের পাশে থাকা, বনজীবীদের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন, প্রাকৃতিক সম্পদের নিরপেক্ষ ব্যবহার, সমসাময়িক বিষয়াদি নিয়ে প্রচারণা চালানো ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানবতার সেবায় ঝাপিয়ে পড়াসহ বৈচিত্র্যপূর্ণ কাজের জন্য বারসিক আজ এলাকায় জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা শেখ সাহিদুর রহমান বলেন, ‘বারসিক’র কাজের সাথে ২০১৩ সালে আমি শ্যামনগর আসার পর থেকে যুক্ত। বারসিক’র অনেক প্রোগ্রামে যুক্ত হয়েছি। বারসিক যুবদের নিয়ে সমাজের নানা ধরনের উন্নয়ন কাজে যুক্ত হয়েছেন। বিশেষ করে সিডিও ইয়ুথ টিম ও সুন্দরবন স্টুডেন্টস সলিডারিটি টিমকে সাথে নিয়ে বারসিক সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডকে সমন্বয় করে খুব ভালো কাজ করে যাচ্ছে। ঘুর্ণিঝড় বুলবুল ও আম্পান এবং করোনা কালীন সময়ে বারসিক যুবদের নিয়ে যে সংগ্রাম করেছেন যেভাবে ভূমিকা রেখেছেন তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।’ ইউপি চেয়ারম্যান ভবতোষ কুমার মন্ডল বলেন, ‘বুলবুল বা আম্পানের সময় বারসিক এর অবদান অনেক। দুর্যোগের আগে মানুষকে সচেতন করা, মাইকিং করা, আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া, খাবার বিতরণ, কিংবা উদ্ধার/ সংষ্কার কাজে যুবদের ভুমিকা মনে রাখার মত। করোনা মোকাবেলায় সিডিও কিংবা এসএসএসটি বারসিক’র সহযোগিতা নিয়ে প্রচারণা চালানো পাশপাশি নানা ধরনের উপহার সামগ্রী বিতরণ করেছেণ মানুষের মাঝে।’
সভায় অংশগ্রহণকারী বারসিক’র কাজকে আরও বেগবান ও সাফল্যমন্ডিত করার জন্য তাদের স্ব স্ব অবস্থান থেকে নানান সুপারিশ প্রদান করেছেন।