প্রাণির নাম ইঁদুর
মো. মনিরুজ্জামান ফারুক, ভাঙ্গুড়া (পাবনা) থেকে:
‘ঘরের ইঁদুর, মাঠের ইঁদুর, ধ্বংস করে অন্ন’, কৃষিই সমৃদ্ধি, সবাই মিলে ইঁদুর মারি, ফসল রক্ষার জন্য’। ইঁদুর একটি স্তন্যপায়ী প্রাণি। এই প্রাণীটি মানুষের উপকারের চেয়ে অপকারই করে বেশি। কৃষি প্রধান বাংলাদেশের ক্ষেতের ফসল বিনষ্টকারি ক্ষতিকর প্রাণি হিসেবে আমরা ইঁদুরকে চিনে থাকি। শুধু ক্ষেতের ফসল নয় বৈদ্যুতিক তারসহ আমাদের ব্যবহৃত নানা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেটে নষ্ট করে এই ইঁদুর। এছাড়া সড়ক ও রেলনাইনে গর্ত করে তা ক্ষতিগ্রস্ত করে।
জানা গেছে, একজোড়া ইঁদুর বছরে ৩ হাজার ইঁদুর জন্ম দিতে সক্ষম। এরা গর্ভধারণের ১৮ থেকে ২২ দিনের মধ্যে বাচ্চা প্রসব করে এবং বাচ্চা প্রসবের ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পুনরায় গর্ভধারণ করে। ৩ মাসের মধ্যে বাচ্চা বড় হয়ে আবার বাচ্চা দিতে সক্ষম। ইঁদুর এমন এক প্রাণি যা কিনা যে কোন পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিয়ে দ্রুত বংশ বিস্তার করতে পারে।
কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, পৃথিবীতে প্রায় ১৭০০ প্রজাতির ইঁদুর রয়েছে। আর বাংলাদেশে ইঁদুরের প্রজাতির সংখ্যা ২২টি। একটি ইঁদুর বছরে ৫০ কেজি গুদামজাত শস্য নষ্ট করে। ইঁদুর প্রতিবছর দেশের ৪ হাজার কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ২০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য খায় এবং নষ্ট করে। এরা গর্তে ২০ কেজিরও বেশি খাদ্যশস্য মজুদ রাখতে পারে। এ প্রাণিটি নিজের শরীরের ওজনের এক দশমাংশ খাদ্য খেয়ে থাকে। আর ৫ থেকে ১০ গুণ খাবার নষ্ট করে ফেলে।
ইঁদুর শুধু খাদ্যশস্য নষ্ট করে তা হয়। প্লেগ, আমাশয়, জন্ডিশ, চর্মরোগসহ নানা ধরণের রোগের বিস্তার ঘটায়। কৃষিবিদদের মতে, রাসায়নিক ও অরাসায়নিক পদ্ধতিতে ইঁদুর দমন করা যায়। আমাদের দেশের কৃষকরা সাধারণত বাঁশ, কাঠ ও লোহার তৈরি কল ব্যবহার করে ইঁদুর দমন করে থাকেন। এছাড়াও ঘরোয়া উপায়ে ইঁদুরের মোকাবিলা করা যায়।