চরের কোন শিশু যেন শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত না হয়
হরিরামপৃুর, মানিকগঞ্জ থেকে মুকতার হোসেন
হরিরামপুর উপজেলার লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নে জয়পুর গ্রামে গড়ে তোলা হয়েছে জয়পুর আদর্শ শিক্ষা কেন্দ্র। জয়পুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক (৪৫) তাঁর নিজ বাড়িতে এই শিক্ষা কেন্দ্রটি চালু করেছেন। উক্ত বিদ্যালয়ে ১ম শ্রেণী থেকে তৃতীয় পর্যন্ত ৪৫ জন ছাত্র-ছাত্রী লেখাপড়া করে। শিক্ষা কেন্দ্রটিতে শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আব্দুর রাজ্জাকের কলেজ পড়ুয়া সুমি আক্তার, ছেলে জুনায়েত হোসেন, ছেলের বউ আয়শা আক্তার। গ্রামটিতে কোন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকায় নিজ গ্রাম থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকার কারণে অনেক শিশুই স্কুলে যেতে পারে না।
তাছাড়া বর্ষা মৌসুমে তিন মাস পানি থাকার কারণে স্কুলে যেতে পারে না অনেক শিক্ষার্তী। ফলে অনেক শিশুই শিক্ষা জীবন থেকে ঝরে পড়ে। স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘চরাঞ্চলে আর কোন শিশুরা যেন শিক্ষার আলো বঞ্চিত না হয়। লেখাপড়া করে যেন তাদের জীবনমান পরিবর্তন করতে পারে।’ আব্দুর রাজ্জাকের এই উদ্যোগকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁর পাশে দাঁড়ায় বারসিক। বারসিক ওই শিক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপকরণ দিয়ে সহায়তা করে। শিক্ষা উপকরণ হিসেবে বারসিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে খাতা, কলম, চক, ডাষ্টার, শিক্ষক হাজিরা, ছাত্র হাজিরা, রেজিষ্টার খাতা, খেলাধুলার জন্য ফুটবল তুলে দেয়।
স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘চরাঞ্চলের মানুষের আর পিছিয়ে থাকলে চলবে না, ঘরে ঘরে ছেলেমেয়েদের শিক্ষিত করে তুলতে হবে। চরের কোন শিশু যাতে শিক্ষা থেকে ঝরে না পড়ে সেজন্য এই শিক্ষা কেন্দ্র তৈরি করে দিয়েছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমার নিজ বাড়িতে বর্তমান স্কুলের কার্যক্রম চলমান আছে।’ অভিভাবক সদস্য সালমা বেগম বলেন, ‘ছোট ছেলে মেয়েরা সরকারি স্কুল দুরে হওয়ার অনেক বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারত না। বাড়ির নিকট শিক্ষা কেন্দ্র চালু হওয়ার কারণে আমাদের ছেলে মেয়েরা লেখাপড়া করার সুযোগ পাচ্ছে বলে আমরা আনন্দিত। বারসিক কর্মকর্তা বিমলরায় বলেন, স্কুলের ছোট কচিকাচা ছেলেমেয়েদের ভিতরে স্বপ্ন থাকতে হবে বড় হওয়ার। তার জন্য আগে প্রয়োজন লেখাপড়া শেখার।’