দিনে চলে অত্যন্ত অসহায় সুবিধাবঞ্চিত মানুষের খোঁজ, রাতে উপহার

বরেন্দ্র অঞ্চল থেকে শহিদুল ইসলাম

করোনা পরিস্থতিতে শহরের শ্রমজীবী মানুষের কাজ নেই, কর্ম নেই। কিছু প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে প্রয়োজনের তুলনায় কম হলেও কিছু খাদ্যসহ বিভিন্ন উপহার সামগ্রী পাচ্ছেন। তবুও এই বিশাল শহরের লাখ লাখ মানুষের ভিড়ে অনেকে আবার সেই উপহারটুকুও পাননা। বা কউে পাইলেও তা শেষ হবার ফলে অনাহারে দিন কাটে। এমন সব অভুক্ত বা অত্যন্ত অসহায় মানুষের খুঁজে খুজে বের করেন তরুণরা। রাতের বেলায় তাদের ঘরেই পৌঁছে দেন উপহার সামগ্রী। রাজশাহীর তরুণ সংগঠন HELP PEOPLE (হেল্প পিপল) এর মানবিক মনের তরুণরা করোনা মাহারীতে রাজশাহী শহরের এই কাজ করছেন। করোনা মহামারী শুরু থেকেই সংগঠনটির সদস্যরা করোনা প্রতিরোধে সচেতনতা, জীবাণু স্প্রে, অসহায় ও মূমূর্ষ রোগীর জন্য রক্তদান, লকডাউন সময়ে রিকশা চালক,দিন মুজুর,খেটে খাওয়া মানুষের মধ্যে খাদ্য ও ঔষধ সামগ্রী উপহার হিসেবে বিতরণ করছেন। এ পর্যন্ত তাঁরা ৫ হাজার অটো রিকসায় জীবাণুনাশক স্প্রে, ১ হাজার মানুষকে হ্যান্ড সেনিটাইজার ও পরিচ্ছন্ন হতে সহায়তা, এবং ৩ শতটি অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত পরিবারকে খাদ্য ও ঔষধ সহায়তা দিয়েছেন। করোনাকালিন সময়ে অসহায় ও মুমূর্ষ রোগীর জীবন বাঁচাতে এ পর্যন্ত ২০জন কে রক্ত দান করেছেন। করোনাকালে লকডাউনে তরুণরা দিনের মধ্যে অসহায় মানুষদের শহর এলাকায় খুঁজে খুঁজে তালিকা তৈরী করেন। একেবারেই অনেক সমস্যা, চলতে পাচ্ছে না, এমন মানুষকে তাঁরা রাতে উপহার পৌঁছে দিচ্ছেন।

অসহায় এবং অভৃুক্ত মানুষের খাবার ও নিত্য প্রয়োজনীয় তালিকার মধ্যে আছে ৫ কেজি চাল, ১কেজি ডাল, ১ কেজি ছোলা, ১ কেজি চিনি, ১ কেজি লবণ, ১ লিটার তেল, হাফ কেজি পরিমাণ ১ প্যাকেট মুড়ি, ১ কেজি আটা, সেমাই, বাচ্চার খাবার নুডলুসসহ প্রয়োজনীয় ঔষধও দিয়ে সহায়তা করছেন। শুরু থেকেই এই তরুণ স্বেচ্ছাসেবকদের নিজেদের পরিবারের এবং নিজেদের অর্থায়নে কাজগুলো করলেও পরে আবার চাহিদা বিবেচনায় নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে অর্থ সহযোগীতা নিয়ে চালান। আবার অনেকে ফেসবুকে তাঁদের কাজে অনুপ্রাণিত হয়ে মোবাইল ব্যাংক একাউন্ট ডপ মাধ্যমে তাদের সহায়তা করছেন। এ বিষয় সংগঠনটির সভাপতি আল রাশিদ রাহী বলেন, “মানুষের কষ্ট আর খুদার জ্বালা দেখে ঘরে থাকতে পারিনি আমরা। তাই নিজেরা এবং যারা সহযোগীতা করছে সেগুলো নিয়েই আমরা শহরের অসহায় এবং সুবিধাবঞ্চিত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়েিয়ছি।” তিনি আরো বলেন, “এই লকডাউনে যারা বের হতে পারছেনা, আন্তরিকতা আছে, অসহায় মানুষের উপকার করতে চান তারা আমাদের মাধ্যমেও করতে পারেন বা আমরা সত্যিকারেই অসহায় এবং সুবিধাবঞ্চিত মানুষের তালিকা করে দিবো, নিজে গিয়েও দিতে পারবেন।”

রাজশাহীর তারুণদের এই মহতি কাজে আমাদের সকলের সহযোগীতা করা উচিত। একই সাথে যাদের ইচ্ছা এবং আগ্রহ আছে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর, তাঁরা এই তরুণদের সাথে যোগাযোগ করে সহায়তা করতে পারেন।

happy wheels 2

Comments