দুর্যোগ মোকাবেলায় বৃক্ষপ্রেমিক আব্দুল হামিদের উদ্যোগ
নেত্রকোনা থেকে রুখসানা রুমি
জলবায়ু পরিবর্তনে বাড়ছে মানুষের জীবনঝুঁকি। নেত্রকোনা অঞ্চল প্রাকৃতিক দুর্যোগের অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত। বজ্রপাত প্রতিবছরই নেত্রকোনার সাধারণ জনগোষ্ঠীর জীবন কেড়ে নিচ্ছে। উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মৃত্যুর কারণে অনেক পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছে। এলাকায় নেই উচুঁ গাছ, তাল গাছ, সুপারি গাছ, নারিকেল গাছ, জারুল গাছ। নেই কোন বজ্রনিরোধক টাওয়ার। মানুষ খোলা মাঠে মাছ ধরতে যায়, ধান কাটতে যায়, হাওরে মানুষ খোলা আকাশের নীচে মাইলের পর মাইল হাঁটে নিজস্ব প্রয়োজনে। সঙ্গত কারণেই বজ্রঝড়ের সময় মানুষ বজ্রপাতে মারা যায়।
নেত্রকোনা অঞ্চলের এক মানবিক মানুষ, বৃক্ষপ্রেমিক কবিরাজ আব্দুল হামিদ। গত ১০ বছর ধরে বজ্রপাতের হাত থেকে রক্ষার জন্য তাল গাছ রোপণ করে যাচ্ছেন। তিন এ পর্যন্ত মোট ২৫ হাজারের অধিক তাল বীজ রোপণ করেছেন নেত্রকোনা বিভিন্ন অঞ্চলে। তিনি পাশাপাশি গ্রামের যুব সংগঠন, কৃষক সংগঠন, স্কুলের শিক্ষার্থীদেরকে সচেতন করছেন বৈঠকের মাধ্যমে, বক্তৃতার মাধ্যমে, স্কুলে ক্লাশের মাধ্যমে। এ বছর তিনি গ্রামে গ্রামে, শহরের বাসায়, ডাস্টবিনে খুঁজে খুঁজে তালবীজ সংগ্রহ করেছেন। নেত্রকোনার পাঁচটি রাস্তায় রোপণ করেছেন সংগৃহীত ৪ হাজার তাল বীজ। গতকাল এ বছরের শেষ তালবীজ রোপণ আলোচনা করেছেন নেত্রকোনা সদর উপজেলার দরুণবালি গ্রামের অক্সিজেন যুবসংগঠন কুসুমকলি কিশোরী সংগঠন ও রাখাল বন্ধু কৃষক সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে দরুণবালি গ্রামের হাওরের রাস্তায়।
আ: হামিদ কবিরাজ শুধু তালগাছই নয়; তিনি নেত্রকোনা অঞ্চলে হাজার হাজার ফলজ, ঔষধি, বনজ গাছ রোপণ করেছেন ও বিতরণ করেেেছন শিক্ষার্থী ও মানুষের কাছে। তিনি যেখানেই পরিবেশের ক্ষতি হতে দেখেছেন সেখানেই ঝাপিয়ে পড়েন রক্ষার জন্য। মগড়া নদী রক্ষা, শহরের পুকুর রক্ষা, জলাভ‚মি রক্ষা দুর্যোগের সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো ও মানসিক ভারসাম্যহীন পথমানুষের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন নিরলসভাবে। আমরা মানবিক ও বৃক্ষপ্রেমিক মানুষ আ: হামিদ কবিররাজের কাজকে সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই।