গ্রাম ও শহরের প্রান্তিক মানুষের জন্য জলবায়ু তহবিলের দাবি

রাজশাহী থেকে শহিদুল ইসলাম
তাপমাত্রা বেড়েছে, বেড়ে দুর্যোগ, বরেন্দ্র অঞ্চলের খরা এবং হঠাৎ অসময়ে অতিবৃষ্টির কারণে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। আদিবাসীসহ প্রান্তিক কৃষক ক্ষতির শিকার হচ্ছে। কিন্তু তাদের ক্ষতির দিকগুলো নিয়ে ভাবছেন না জাতীয় পর্যায়ের নীতিনির্ধারকগণ। কৃষকরা ক্ষতিপূরণ পায়না। অন্যদিকে নগরে বস্তিবাসীদের জন্য নিরাপদ বাসস্থানসহ কর্মসংস্থান দিনে দিনে নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে পড়ছে। আয় ব্যয়ের সাথে সমন্বয় করতে হিমশিম করতে হচ্ছে প্রান্তিক মানুষদের। বৈশি^ক যুদ্ধের প্রভাবসহ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আমাদের গ্রাম ও শহর পর্যায়েও পড়েছে। আমরা এই ক্ষতিপূরণের দাবি করছি। আমরা জলবায়ু তহবিলের সঠির ও ন্যায্যতা চাই।


রাজশাহী নগরের উপকন্ঠে পবা উপজেলার সুতাহাটি বাজারে গ্রাম ও শহরের মানুষের অংশগ্রহণে জলবাযু পরিবর্তনের জন্য আমরা দায়ী নয়, কিন্তু ক্ষতির শিকার আমরা কেন হবো, আমাদের ক্ষতিপূরণ চাই’ শীর্ষক অনুষ্ঠিত একটি মানববন্ধনে এই দাবি জানান প্রান্তিক মানুষেরা। উক্ত মানববন্ধনটি আয়োজন করে বরেন্দ্র অঞ্চলের যুবদের বৃহৎ ঐক্য বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরাম। এতে অংশগ্রহণ ও সংহতি জানায় স্বচ্ছলতা এসোসিয়েশন, যুব সংগঠন সূর্যকিরণ , উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক।

মানববন্ধনে বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরাম এর সাধারণ সম্পাদক ও আদিবাসী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সাবিত্রী হেমব্রম বলেন, ‘আদিবাসীরা জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে কারণে নানা ধরনের ক্ষতির শিকার হচ্ছে, তাঁদের ঐতিহ্যবাহী খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে, অনাবৃষ্টি, খরা এবং হঠাৎ অতিবৃষ্টির কারণে আদিবাসীসহ কৃষকদের জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে, কিন্তু তাদের ক্ষতিপুরণ দেওয়া হচ্ছেনা। তিনি আরও বলেন, ‘ধনী দেশগুলোকে আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য যে জলবায়ু তহবিল ন্যায্যতা তা দিতে হবে।’


বারসিক’র গবেষক মো: শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বরেন্দ্র অঞ্চলে যেভাবে দিনে দিনে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে আর খরা এবং পানি শুন্য দেখা দিচ্ছে তা নিয়ে এখনই যৌথ সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ না করলে আগামীতে আরো ভয়াবহ সংকট বাড়বে। এখানে জলবায়ু ও পানির ন্যায্যতার দিকগুলো নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘এসব পরিকল্পনা এবং উন্নয়নে অবশ্যই জনগোষ্ঠীর মতামত নিয়ে করতে হবে। উপর থেকে উন্নয়ন চাপিয়ে দিলে সেই উন্নয়ন জনগোষ্ঠীর উপকারের থেকে ক্ষতি বেশি হয়, যার উদাহরণ আমরা বিগত দশকে কার্যক্রমের ফলে পানির সংকট দেখতে পাচ্ছি বরেন্দ্র অঞ্চলে।’

সভায় বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরাম এর সভাপতি শাইখ তাসনিম জামাল বলেন, ‘আমরা জলবায়ু ন্যায্যতা চাই, ধনী দেশগুলোর কারণে আমরা ক্ষতির শিকার হচ্ছি, কিন্তু তাঁদের প্রতিশ্রুত জলবায়ু তহবিল আমাদের বাংলাদেশের না দেবার কারণে আমরা সেই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারিনা।’ মানববন্ধনে প্রান্তিক শিশু, কৃষক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কৃষক, নারী পুরুষসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

happy wheels 2

Comments