নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে ভূমিকা রাখছেন হোসনা বেগম
কলমাকান্দা নেত্রকোনা আল্পনা নাফাক
কলমাকান্দা উপজেলার খারনৈ ইউনিয়নের রানীগাও গ্রামের বাসিন্দা হোসনা বেগম। বয়স ৩৮ বছর। স্বামী ঢাকায় কোম্পানিতে চাকুরী করেন। তিনি দুই সন্তানের জননী। দু’ জনই মেয়ে সন্তান। বড় মেয়ে এই বছর এইচএসসি পরীক্ষার্থী। আর ছোট্ট মেয়ে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে।
হোসনা বেগম ২০১২ সাল থেকে বারসিক’র সাথে জড়িত। তিনি সংগঠনের সভানেত্রী। সংগঠনের সাথে জড়িত থাকায় তাকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহন করতে হয়েছে। তিনি শুধু বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রমেই অংশগ্রহণ করেছে তা নয়। সেই শিক্ষণীয় বিষয়গুলোকে সে তার বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করেছেন। হোসনা বেগম এর জায়গা জমি বেশি নেই। মাত্র ২৫ শতক। বসতবাড়ি চারপাশে যেটুকু খালি জায়গা পড়ে থাকতো সেগুলোকে তিনি বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি চাষ করে ব্যবহার করা শুরু করেন। প্রথমে নিজের চাহিদা পূরণের জন্য সবজি চাষ করতেন। এখন সে সমস্ত খালি জায়গা ব্যবহার করেছন। কারণ হিসেবে হোসনা বেগম বলেন, ‘আমার এই খালি জায়গা এমনি পড়ে থাকতো কোনো ধরনের চাষবাস করতাম না। কিন্তু এখন যে হারে রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার করতেছে শাকসবজিগুলোতে সেই শাকসবজি খাওয়া নিরাপদ না।’
তিনি বলেন, ‘নিরাপদ শাকসবজি খেতে হলে নিজেকে শাকসবজি চাষ করে খেতে হবে। এখন আমি নিজে আমার এই খালি জায়গায় সবসময়ই শাকসবজি ও দেশী ফল চাষ করি। নিজের উৎপাদিত শাকসবজির মজাই আলাদা। যেকোনো সময় খাওয়া যায় এবং প্রয়োজনে বিক্রি করা যায়। আত্মীয়স্বজনদের মধ্যেও বিতরণ করা যায়। পারিবারিকভাবে পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে ও বাজারে বিক্রি করে টাকা উপার্জন করা যায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘নারীদের আয়বর্ধনমুলক কাজের মধ্যে শাকসবজি চাষ একটি অন্যতম কাজ ও ব্যয়বিহীন কাজ। এই কাজে একটু শ্রম দিতে হয়।’
হোসনা বেগম বীজ সংরক্ষণ নিজেই করেন এবং প্রয়োজনে প্রতিবেশীদের কাছে বীজ বিনিময়ের মাধ্যমে বীজ সংগ্রহ করে চাষাবাদ করেন। তিনি বলেন, ‘শাকসবজি চাষ করে এখন পারিবারিকভাবে খরচ কমেছে এবং শাকসবজি বিক্রি করে টাকা উপার্জনও করতে পারতেছি। তাছাড়া এখন বাজারে শাকসবজি কদর বেশি। অন্যান্য ফসলের তুলনায় শাকসবজির দাম বেশি।’ তিনি বলেন, ‘নিজের উৎপাদিত শাকসবজি হয় নিরাপদ। কারণ আমি জৈব সার ও জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করি। আমি আমার প্রতিবশীদের নিরাপদভাবে শাকসবজি চাষ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করি। কারণ একা কোনোকিছু পরিবর্তন করা যায়না। সকলে মিলে পরিবর্তন করতে হবে।’