রক্তদানেই পরম তৃপ্তি
কুমিল্লা থেকে মো. মতিউর রহমান
‘রক্তদানেই পরম তৃপ্তি’ এ উক্তিটি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাসেবী রক্তদাতা সংগঠন ‘বন্ধু’র নিবেদিত এক স্বেচ্ছাসেবকের। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ঝাঁক তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থীরা মুমূর্ষ ব্যক্তির প্রয়োজনে রক্ত প্রদান করে থাকে। স্বপ্নচারী মেধাবীরাই গড়ে তুলেছে স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠন ‘বন্ধু’। প্রয়োজনে পাশে থাকার অঙ্গীকার সাধারণত বন্ধুরাই করে থাকে। এই চেতনা থেকেই এই সংগঠটির নাম ‘বন্ধু’।
এই সংগঠনটি বিনা মূল্যে মুমূর্ষ রোগীদের জন্য রক্ত সরবারহের কাজ করে থাকে। ‘বন্ধু’ সংগঠনটি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে ২০১৫ সালের ২৯ অক্টোবর। অনেক চড়াই-উতড়াই পেরিয়ে বর্তমান সময়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে অসহায় মানুষদের নিকট আস্থার জায়গায় পরিণত হয়েছে স্বেচ্ছাসেবী এ সংগঠনটি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৫শ’ ব্যাগ রক্ত বিভিন্ন মুমূর্ষ ব্যক্তিদের জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা করে দিয়েছে সংগঠনটি। এছাড়াও বর্তমানে সংগঠনটিতে ডোনার (স্বেচ্ছায় রক্তদানে ইচ্ছুক এমন ব্যক্তি) সংখ্যা রয়েছে প্রায় ২ হাজার। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসী বিভাগের একটি টিম ও সংগঠনটিতে বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ে কাজ করে থাকে।
সংগঠনটিতে বর্তমানে সভাপতির দায়িত্বপালন করছে ব্যাবস্থাপনা বিভাগের ৬ষ্ঠ ব্যাচের শিক্ষার্থী আইনুল নিশাত চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের ৭ম ব্যাচের শিক্ষার্থী মাসুম পারভেজ সবুজ। সংগঠনটির কর্মযজ্ঞ নিয়ে আলাপ হয় মাসুম পারভেজ সবুজের সাথে। তিনি বলেন, ‘নিজের শরীরের তাজা রক্ত অন্যের মাঝে বিলিয়ে দিয়ে যে আনন্দ পাই তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। এক ব্যাগ রক্তে যখন একজন মূমূর্ষ রোগী সুস্থ হয় সে ব্যক্তি হাসিমাখা মুখ দেখলে ভালো লাগার অনুভূতিটুকু ব্যক্ত করা সম্ভব না।’
অনেক সময় গভীর রাতেও জরুরি ভিত্তিতে রক্তদাতাকে নিয়ে মূমূর্ষ রোগীকে রক্ত দেওয়ার জন্য হাসপাতালে গিয়েছে এ সংগঠনটি। প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছে মানুষের প্রয়োজনে জরুরি ভিত্তিতে রক্ত পৌঁছে দেওয়ার।
এদিকে গত ১৭ এবং ১৮ অক্টোবর বিনা মূল্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫০০ শিক্ষার্থীর রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করেছে এ সংগঠনটি। আগামী ২৯ অক্টোবর সংগঠনটি ২য় বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে কর্মতৎপরতা শুরু করেছে রক্তদাতা এ সংগঠনটি।