জ্ঞান অর্জনের পবিত্র স্থান লাইব্রেরি
মানিকগঞ্জ থেকে এম আর লিটন
জ্ঞান অর্জনের জন্য লাইব্রেরির কোন বিকল্প নেই। পৃথিবীতে যত সফল ও জ্ঞানি মানুষ দেখতে পাই সবাই লাইব্রেরির মধ্যামে নিজেকে আলোকিত করেছেন। লাইব্রেরি নিয়ে কবিগুরু বলেছেন ‘মহাসমুদ্রের শত বৎসরের কল্লোল কেহ যদি এমন করিয়া বাঁধিয়া রাখিতে পারিত যে, ঘুমন্ত শিশুটির মতো চুপ করিয়া থাকিত, তবে সেই নীরব মহাশব্দের সহিত এই লাইব্রেরির তুলনা হইত’। একারণেই বলা যায় জ্ঞান অর্জনের পবিত্র স্থান হলো লাইব্রেরি।
এমন একটি লাইব্রেরি কথা বলছি, যাকে ঘিরে একটি শহরে প্রতিটি সাধারণ জনগণের স্বপ্ন এবং সংস্কারের দাবি ।
মানিকগঞ্জ শহরের বুকে অবস্থিত এবং শহরের একমাত্র পাবলিক লাইব্রেরি । শহরের প্রাণ কেন্দ্রে মুক্তিযোদ্ধা পৌর শিশু পার্কের পাশে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী লাইব্রেরিটি বর্তমানে অচল অবস্থায় প্রাণহীন প্রায়। কোন রকম টিকে আছে । অভ্যন্তরীণ কোন কার্যক্রম নেই । চরম অবহেলায় চলছে বই সংরক্ষণ ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ‘প্রবেশের কোনো নিজস্ব সড়ক বা সাইনবোর্ড নেই। জানালার কাচ ও প্লাস্টারগুলো খসে খসে পড়ছে। একটু বৃষ্টি হলেই ভিতরে পানি ঢুকে যায়। দুই তলা ভবনের নিচ তলা ভাড়া দেয়া হয়েছে দলিল লেখক ভ্যান্ডারদের কাছে। অত্যাধুনিক আসবাবপত্র না থাকায় লাইব্রেরির প্রায় জিনিসপত্রগুলোই বিকল হয়ে আছে। সাধারণ সম্পাদকের কক্ষে পরিত্যাক্ত অবস্থায় ১২টি চেয়ার কোনো রকম পড়ে আছে। এছাড়াও লাইব্রেরিটি মাকরোসার জালে আবদ্ধ আছে । ’
লাইব্রেরিতে বর্তমানে কোন কমিটি নেই । জানা গেছে, ২০০৪ সালে নির্বাচিত কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে । এরপর আর কোনো নির্বাচন বা নতুন কমিটি গঠন করা হয়নি। ফলে অভিভাবক শূন্য লাইব্রেরীটি এখন জরাজীর্ণ ।
দীর্ঘদিন হয় লাইব্রেরি নিজস্ব কোন সাইনবোর্ড নেই । যার ফলে প্রায় মানুষ এই লাইব্রেরি চিনে না। পাশ দিয়ে মানুষ চলাচল করলেও কেউ জানে না এখানে লাইব্রেরি অবস্থিত ।
তবু লাইব্রেরি নিয়ে স্বপ্ন দেথছেন শহরের নাগরিক ও সুশীল সমাজ । দাবি তুলেছেন লাইব্রেরি সংস্কারের ।
লাইব্রেরির একজন পাঠক সাংস্কৃতিক কর্মী ইকবাল হোসেন কচি বারসিক নিউজ’কে বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি করেছি লাইব্রেরিটি সংস্কারের । জ্ঞান-বিজ্ঞান, সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার জন্য এই লাইব্রেরি দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন ।”
সাংস্কৃতিক কর্মী মোস্তাফিজুর রহামান মামুন বারসিক নিউজ’কে বলেন, “জ্ঞান অর্জনের জন্য লাইব্রেরির কোন বিকল্প নেই । লাইব্রেরিটি দ্রুত সংস্কার করে নতুন প্রজন্মসহ সকলের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে । শহরের মানুষের জন্য ও আলোকিত মানুষ গঠনে লাইব্রেরি গুরুত্ব অনেক ।”