পৃথিবীটা পাখিদেরও
সিংগাইর মানিকগঞ্জ থেকে শাহীনুর রহমান
‘পাখি পরিবেশের বন্ধু, পাখি রক্ষায় সচেতন হই, পৃথিবীটা পাখিদেরও, পাখি হত্যা করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ, মুক্তপাখি বন্দী না করি’ নানামুখী স্লোগানের আলোকে পাখির নিরাপদ কৃত্রিম অভয়াশ্রম তৈরিতে হাঁড়ি বাঁধা, পাখি রক্ষায় সচেতনতামূলক র্যালি, মানব বন্ধন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠত হয়েছে সম্প্রতি। বারসিক’র সহযোগিতায় সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনয়িনের ছোট কালিয়াকৈর গ্রামে যুবদের নিয়ে সংগঠিত মানবকল্যাণ ফাউন্ডেশন, কৃষক শ্রমিক সমাজ সেবা সংঘ,ও সিংগাইর উপজেলা সবুজ সংহতি কার্যক্রমটি আয়োজন করে।
বারসিক কর্মকর্তা শাহীনুরর রহমানের সঞ্চালনায় মানবকল্যান ফাউন্ডেশন এর সভাপতি আবিদ হোসেন কাজল এর সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ইসলামি ব্যাংক কর্মকর্তা পাখি প্রেমিক শাহীনুর ইসলাম, কৃষক শ্রমিক সমাজ সেবা সংঘের সদস্য দারোগ আলী শিকদার, সদস্য মোঃ সুজন হোসেন, পাখি সংরক্ষণকারী মোঃ জুয়েল মিয়া, সবজু সংহতির সদস্য মুদ্দাসির হোসেন, বারসিক কর্মকর্তা শিমুল কুমার বিশ^াস প্রমুখ। এছাড়াও অনুষ্ঠানে দেড়শতাধিক স্থানীয় কৃষক ও যুবপ্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনায় আবিদ হোন কাজল বলেন, ‘পৃথীবীটা পাখিদেরও। কিন্তুু পাখির জন্য নিরাপদ প্রাকৃতিক আবাস্থল নষ্ট হচ্ছে। মানুষের ভোগ বিলাস ও অপরিকল্পিত উন্নয়নের মাধ্যমে যত্রতত্র বৃক্ষ নিধন করছে । মানুষের শখ পূরণের জন্য জন্য অবাধে পাখি শিকার করছে। নির্বিচারে পাখি হত্যা করছে। পাখি হত্যাকরা দন্ডনীয় অপরাধ। প্রতিটি প্রাণই একে অপরের পারষ্পারিক নির্ভরশলিতার মধ্য দিয়ে টিকে থাকে। আমরা প্রতিটি প্রাণের টিকে থাকার জন্য সুস্থ পরিবেশ তৈরি করতে চাই। আমাদের এই কাজের
মধ্য দিয়ে গ্রামের মানুষকে সচেতন কররার পাশাপাশি পাখি রক্ষায় কিছু উদ্যোগী মানুষ তৈরি করতে চাই।
পাখি সংরক্ষণের উদ্যোক্তা জুয়েল হোসেন বলেন, ‘আমি একজন হোটেল ব্যবসায়ী। আমার দোকানের সামনে শালিক, ঘুঘু, চরুই পাখি বসে। আমি নিজ দায়িত্ব থেকে প্রতিদিনি পাখির খাবার দিই। কেউ যেন পাখি না মারে তার জন্য মানুষকে সচেতন করি।’ কৃষক দারোগ আলী শিকদার বলেন, ‘পাখি আমাদের কৃষকের বন্ধু, কৃষিজমিতে গাছের ডাল পুতে রাখলে পাখি সেই ডালে বসে এবং ক্ষতিকর পোকা খেয়ে কৃষকের উপকার করে থাকে। এতে ফসলের পোকামাকড় আক্রমণ হলে রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় না। পরিবেশ ভালো থাকে, কৃষকের উৎপাদন খরচ কম হয়। শাহীনুর ইসলাম বলেন, ‘পাখি আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। কিন্তু দিন দিন বিভিন্ন ধরনের পাখি বিলুপ্ত হচ্ছে। বর্তমান সময়ে বড় বড় গাছ নিধনের ফলে পাখির নিরাপদ আবস্থল হারিয়েছে এবং খাদ্য সংকট তৈরি হচ্ছে। পাখির ডিম ফুটানো ও স্বাভাবিক প্রজনন ব্যাহত হচ্ছে। তাই পখির প্রতি ভালোবাসা থেকেই পাখির কৃত্রিম আবাস্থল তৈরি করা উচিত।
বারসিক কর্মকর্তা শিমুল কুমার বিশ^াস বলেন, ‘পরিবেশ রক্ষায় পাখিদের যেমন ভূমিকা আছে তেমন পাখিদের সুরক্ষায়ও প্রয়োজন। তাদের জন্য বাসযোগ্য পরিবেশ তৈরি করতে হবে। পাখি রক্ষায় আমাদের যুব সমাজের মাধ্যমেই জননেতৃত্ব তৈরি করতে হবে। জনগোষ্ঠীর মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমেই পাখির প্রতি দায়িত্ববোধ তৈরি হবে।’