বৃক্ষই আমাদের প্রাণ
মানিকগঞ্জ থেকে গাজী শাহাদত হোসেন বাদল ও কমল দত্ত
প্রতিটি জীবের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত পরিবেশ। বাংলাদেশে এক সময় গাছপালায় পরিবেষ্টিত ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ বসবাসের উপযুক্ত পরিবেশ বিরাজমান ছিল। কালক্রমে স্বার্থান্বেসী মহলের নির্বিচারে বৃক্ষ নিধনের ফলে বংলাদেশ দিন দিন তার প্রাকৃতিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে। এ প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিশ্ব পরিবেশ দিবস-২০১৮ উপলক্ষে ব্যাপকভাবে গাছ লাগানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
তারই ধারাবাহিকতায় আজ (১৬ জুলাই) বারসিক’র অনুপ্রেরণায় মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার মিতরা গ্রামের মনিদাস পাড়ার মা সমিতির সদস্যদের উদ্যোগে ও গ্রামের অন্যান্য লোকজনের সহযোগিতায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। কর্মসূচির শুরুতেই বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বিমল রায় বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “বৃক্ষই আমাদের প্রাণ, বৃক্ষ পরিবেশে যে অক্সিজেন ছাড়ে তা গ্রহণ করেই আমরা বেঁচে থাকি। এছাড়া বৃক্ষ পাখির আবাস স্থল। পাখি যেমন পরিবেশের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে তেমনি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বিভিন্ন ভাবে অবদান রাখে। তাই আমাদের প্রত্যেকেরই গাছ লাগাতে হবে এবং গাছের যত্ন নিতে হবে।”
বিশিষ্ট সমাসেবক এ্যাডভোকেট দীপক কুমার ঘোষ আলোচনায় বলেন, “বৃক্ষ শুধু অক্সিজেন প্রদানের মাধ্যমেই আমাদের প্রাণ রক্ষা করে না, বৃক্ষ বজ্রপাতে মৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে আমাদের সহায়তা করে। তাল গাছ ও খেজুর গাছ বজ্রপাত প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। তাই আমাদের বেশি বেশি তাল গাছ ও খেজুর গাছ লাগাতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “বৃক্ষ আমাদের আয়ের উৎস ক্ষেত্রও। বৃক্ষ থেকে আমরা যে ফলমূল ও কাঠ পাই তা আমাদের পুষ্টি, জ্বালানি ও আসবাবপত্রের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদ্ন রাখে। কাজেই নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য মনে করে আমাদের প্রত্যেককেই বৃক্ষ রোপণ করতে হবে এবং কেউ বৃক্ষ দিলে তা সযত্নে রোপণ ও পরিচর্যা করতে হবে।”
আলোচনা শেষে মিতরা মনিদাস পাড়া সার্বজনীন শিব মন্দির প্রাঙ্গনে ২টি কৃষ্ণচূড়া চারা ও রাস্তার দুই পাশে খেজুরের বীজ বপন করা হয়। বৃক্ষরোপণ কর্মসূচীতে মা সমিতির সদস্যবৃন্দ, মিতরা গ্রামের অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ, বিশিষ্ট সমাসেবক এ্যাডভোকেট দীপক কুমার ঘোষ, বারসিক কর্মকর্তা বিমল রায়, গাজী শাহাদত হোসেন বাদল ও কমল দত্তসহ প্রায় ৬০ জন উপস্থিত ছিলেন।
কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী এলাকাবাসীরা বলেন, “শুধু পরিবেশ দিবস উপলক্ষে নয়, বছরের বিভিন্ন সময়ে নিজস্ব উদ্যোগে আমাদের বিভিন্ন ধরণের গাছ লাগাতে হবে। তাহলে আমাদের এলাকাটি সবুজায়িত এলাকায় পরিণত হবে।”