নিরাপদ সবজি চাষে ভূমিকা রাখছে জামালপুর বস্তিবাসী
রাজশাহী থেকে ব্রজেন্দ্র নাথ
রাজশাহী শহরের চন্দ্রিমা থানার ২৬নং ওয়ার্ডের ভদ্রার পার্শে রেল লাইনের ধারে এই জামালপুর বস্তি। এই বস্তিতে পরিবারের সংখ্যা ১৫০টি এবং সদস্য সংখ্যা প্রায় ৬৫০জন। এই বস্তির বাসিন্দারা বিভিন্ন জায়গা থেকে কেউ আত্মীয়সূত্রে এসেছেন আবার কেউ কাজের সন্ধানে এসে দীর্ঘ দিন ধরে বসবাস করছেন। তবে এখানে যারা বসবাস করছেন তারা সবাই রেললাইনের ধারে পড়ে থাকা ২০ ফিট করে জায়গার মাঝে ছোট ছোট টিনের বেড়া দিয়ে একটি করে ঘর তৈরী করেছেন। ঘরের পাশে সীমিত পরিসরে জায়গা আছে। তাদের চাহিদা অনুযায়ী বাড়ির পাশে সবজি চাষ করার মতো জায়গা নেই। সে ক্ষেত্রে জামালপুর বাস্তুহারা নারী উন্নয়ন সংগঠনের সদস্যরা তাদের চাহিদা অনুযায়ী বাড়ির পার্শে ক্যারেট পদ্ধতি সবজি চাষ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বস্তিবাসীদের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিকভাবে ২০টি পরিবারে একটি করে ক্যারেট ৪ কেজি ভার্মি কম্পোস্ট সার এবং সবজির চারা (বেগুন মরিচ লাউ ও মি্িট কুমড়া) বিতরণ করে বারসিক। এই ২০টি পরিবারের মধ্যে ১৫টি পরিবারের মরিচ, লাউ, ও বেগুন চারাগুলো টিকে আছে। মোঃ সেন্টু আলী(৩৬) বলেন, বারসিক’র মাধ্যমে আমি একটি ক্যারেট ৪ কেজি ভার্মি কম্পোস্ট সার এবং ১০টি বেগুন চারা সহায়তা পেয়েছিলাম সেই ক্যারেটে ২টি বেগুন চারা এবং মাটির টবে ২টি চারা বাকি ৬টি বেগুন চারা ক্যারেটের আশে পাশে লাগিয়েছি। এখন আমার ১০টি বেগুন গাছ টিকে আছে। আমি প্রায় একমাস ধরে এই ১০টি গাছ থেকে বেগুন খাছি।’ তাতে করে একমাস ধরে বেগুন কিনতে হয়নি। আমি এই বেগুন গুলোর বীজ সংরক্ষণ করবো।’
অন্যদিকে মোসা: শান্তি বেগম বলেন, ‘আমি ও বারসিক রাজশাহী রির্সোস সেন্টারের সহায়তায় একটি ক্যারেট ও কেজি ভার্মি কম্পোস্ট সার পেয়েছি। সেই ক্যারেটে ২টি লাউগাছ লাগিয়েছি। সেই লাউগাছ থেকে ১৫টি লাউ খেয়েছি এবং ৪টি লাউ প্রতিবেশিদেরকে দিয়েছি । এই লাউ বাজারে ৩০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এই লাউ গাছ শুধু আমাকে সবজিই দেইনি। দিয়েছে এই আষাঢের খরার শীতল ঘর, যা এই প্রচন্ড গরমও তাপের হাত থেকে রক্ষা করেছে। তাতে করে পরিবারের সবাই আরামে ঘুমাতে পারছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাড়ির পার্শে সবজি চাষ করলে কতভাবে আমরা উপকৃত হই সেটা কেউ কখনো চিন্তা ভাবনা করেও দেখেনি । আমাদের সবজি চাষের উপকারিতাগুলো জেনে পাশের বাড়ির মানুষেরা সবজি চাষ করছেন।’
মো: সামাদ আলীও ক্যারেটের মাধ্যমে বেগুন ও মরিচ চাষ করে কিছুটা হলেও পরিবারের ব্যয়ের জায়গাটুকু লাঘব করতে পেরেছেন। তিনি বস্তিবাসীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমরা সকলে বাড়ির পার্শে নিরাপদ সবজি চাষ করি। সুস্থ, সবল জীবন গড়ি। তিনি বেগুনের বীজ করার জন্য একটি বেগুনকে বীজ হিসেবে গাছেই সংগ্রহ করে রেখেছেন।