কলমিশাক চাষে সফল রফিকুল ইসলাম

কলমাকান্দা থেকে গুঞ্জন রেমা
কলমাকান্দা উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের ভেলুয়াতলী গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম। পেশায় একজন কৃষক। একসময় ধানের মৌসুমে ধানের ব্যবসা করতেন। বিভিন্ন গ্রাম থেকে ধান কিনে তা ধান ভাঙ্গার মিলে নিয়ে বিক্রি করতেন। ধান ব্যবসা করা খুবই কষ্টকর তাই একসময় ধান ব্যবসা ছেড়ে দেন। শুরু করেন শাকসব্জি চাষ। বাড়ির আশপাশে থাকা জমিতে ধান কাটার পর চাষ করেন রবি মৌসুমে বিভিন্ন ধরনের শাকসব্জি।


একদিন বাজারে গিয়ে দেখেন এক লোক কলমিশাক বিক্রি করছেন। সেটা দেখে তার কাছ থেকে কলমি চাষের সব কৌশল জেনে নেন। তারপর ওই কৃষকের পরামর্শ অনুসারে কলমির লতা নিয়ে এসে বাড়ির আঙ্গিনায় রোপন করেন। তারপর চৈত্রমাসের প্রথম দিকে মাটি প্রস্তুত করে কিছু জায়গায় পরীক্ষামূলক কলমিশাক চাষ করেন। প্রথম বছর তিনি ভালো টাকা আয় করেন কলমিশাক বিক্রি করে। তারপর থেকে শুরু করেন এই কলমিশাক চাষের। প্রায় ১০ বছর যাবৎ তিনি বর্ষকালে কলমিশাক বিক্রি করছেন।


১২ শতাংশ জমিতে রবি মৌসুমে তিনি আলু রোপণ করেন। যখন আলু তোলা শেষ হয়। ওই ১২ শতাংশ জমিতে রোপণ করেন কলমিলতা। কলমিলতা খুব কম সময়ের মধ্যেই বিক্রির উপযোগী হয় বলে জানান তিনি। বৈশাখ মাসের শুরু থেকে কলমিশাক বিক্রি শুরু করে তা শেষ হয় কার্তিক মাসে। এভাবে বছরে তিনি প্রায় ৭ মাস কলমি শাক বিক্রি করতে পারেন। প্রতি সপ্তাহে দুটি বাজারে ৪ বারে ১০০০ মোঠা কলমিশাক নিয়ে যান। প্রতি মোঠা বিক্রি করেন ৫ টাকা দরে। এভাবে তিনি প্রতি মাসে প্রায় ২৫ হাজার টাকা আয় করেন। তিনি বলেন, ‘এইডা হইলো বিনা পুঞ্জির ব্যবসা কোন ধরণের পুঞ্জি খাটাইতে হয় না।’ কলমি শাক চাষের জন্য তিনি প্রচুর পরিমাণে গোবর সার ব্যবহার করেন। ফলে তার উৎপাদন খরচ কম হয় বলে জানান। তার দেখাদেখি আরো ৪ জন কৃষক তার কাছ থেকে কলমির চারা নিয়ে রোপণ করে এখন তাঁরাও বাজারে কলমিশাক বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, ‘আগের ধানের ব্যবসার চেয়ে এখন এই কৃষিকাজ করে অনেক ভালো আছি। ধানের ব্যবসায় অনেক কষ্ট করতে হতো কিন্তু কৃষি কাজে আমার পরিবারের সবাই আমাকে সহযোগিতা করে ফলে কষ্ট কম হয়।’

happy wheels 2

Comments