খরা সহনশীল নয়া ফসল কাসাভার ভালো ফলনের আশা কৃষকদের
বরেন্দ্র অঞ্চল থেকে রায়হান কবির রঞ্জু
বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত খরাপ্রবণ বরেন্দ্র অঞ্চলে খরাসহনশীল নয়া ফসল কাসাভার পরীক্ষামূলক চাষে ভালো ফলাফল প্রত্যাশা করছেন স্থানীয় কৃষকরা। অধিক খরা প্রবণ উঁচু বরেন্দ্র অঞ্চল হিসেবে পরিচিত চাঁপাইনবাগঞ্জ জেলার নাচোল উপজেলার খরিবোনা গ্রামের সাত জাতের কাসাভার পরীক্ষামূলক চাষ করছেন কৃষকরা। উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক’র সহযোগীতায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এই পরীক্ষামূলক চাষের যাত্রা শুরু হয়। এ ছাড়াও বারসিক রাজশাহীর তানোর উপজেলার কানাপুকুর গ্রামে স্থানীয়ভাবে কাসাভা দেশি একটি জাতের বীজ বিনিময়ে সহায়তা করে থাকে রাজশাহীর তানোর উপজেলার কানাপুকুর গ্রামে।
চাঁপাইনবাগঞ্জ জেলার নাচোল উপজেলার কসবা ইউনিয়নের খড়িবোনা গ্রামের পরীক্ষমূলক এই কাসাভা চাষে প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে ভূমিকা পালন করছেন বারসিক’র কৃষি গবেষক রায়হার কবির রঞ্জু। বিগত ১১ ফেব্রুয়ারি নেত্রকোনা থেকে সংগ্রহ করা সাত জাতের কাসাভার মধ্যে আছে দেশি বিলাতি, ফিলিপিনি, মেঘালয়া, দেশি, বিদ্যাসুন্দরী, নাগড়া ও হানেম জাত। প্রত্যেকটি জাতই আলাদা বৈশিষ্ট্য। খড়িবোনা গ্রামের কৃষক ঐক্যের কৃষকদের প্রত্যক্ষ তত্ত্ববধানে কার্যক্রমটি পরিচালিত হচ্ছে।
উক্ত কাসাভা ফসলের পরীক্ষামূলক কার্যক্রমে প্রাথমিক ফলাফল নিরুপণ করেন খড়িবোনা কৃষক ঐক্যের কৃষক কৃষাণীরা। রোপণের প্রায় ২৪০ দিন পর পাওয়া যায় দেশি একটি জাত থেকে ১ কেজি কাসাভা উত্তলন করে। এলাকার ১৫ জন নারী পুরুষ কৃষকে নিয়ে স্বাধ যাচাই এর জন্য রান্না করা হয়। রান্না করা কাসাভা খেয়ে গিনি বেগম (৩৮) রিনা বেগম (২৮) কৃষক মনিরুল (৩৫) সহ ১৫ কৃষকেই কাচাকলা রান্নার স্বাদ অনুভব করেন । সকলে এর স্বাদ পেয়ে আগামীতে বাড়ি বাড়ি এটি চাষ করার পরিকল্পনার কথা জানান।
উল্লেখ্য, কাসাভা অধিক খরা এবং পানি ছাড়াও চাষ সম্ভব। বরেন্দ্র অঞ্চল খরা প্রবণ হওয়ায় এখানে পানি সাশ্রয়ী ও খরা সহনশীল পরীক্ষামূলক কাসাভার চাষ করা হয়। কাসাভার গাছ গরু ছাগল বা গবাদি পশু না খাবার কারণে এটি জমি আইলেও জৈব ঘিরা হিসেবে চাষ করা সম্ভব। আবার বাড়িতে পরিত্যক্ত বা অনাবাদি জমিতে এটি চাষ করা সম্ভব। কাসাভার তরকারি ছাড়াও এটি পাউডার করে রুটিসহ নানা ধরনের মজাদার রেসিপি তৈরি করা যায়। খরা প্রবণ বরেন্দ্র অঞ্চলে খরাসহনশীল কাসাভার চাষ কৃষকদের মধ্যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।