সবজি আবাদ করে স্বাবলম্বী তরুণ কৃষক রফিকুল
ঘিওর, মানিকগঞ্জ হতে সুবীর কুমার সরকার
নিবিড় পদ্ধতি ব্যবহার করে মৌসুমে দেশী জাতের উন্নতি সবজি পরিকল্পিত আবাদ করে একজন কৃষক লাভবান হতে পারেন। হাইব্রিড কৃষির সম্প্রসারণ ঘটলেও কৃষক তাঁর লোকায়ত জ্ঞান ও কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আবাদে সফলতা আনতে সক্ষম। ঘিওর উপজেলার নালী ইউনিয়নের গাংডুবী নতুন পাড়ার তরুণ কৃষক মো: রফিকুল ইসলাম রফিক (৩০) ৩০ শতাংশ জমিজুড়ে শুধুমাত্র দেশী উন্নত জাতের টমেটো, শসা, করলা,মরিচ ও বটবটি চাষ করে এমন সফলতা এনেছেন।
সমৃদ্ধ কৃষক রফিকুল ইসলাম সফলতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এলাকার বেশ কয়েকজন কৃষকের সবজি চাষে আগ্রহ বাড়ছে। তরুণ কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, বসতবাড়ির পাশে দু’ফসলি জমি কটে (লিজ) নেন । বর্ষাকালে জমি পরিষ্কার করে জমিতে গোবর ও কচুরিপানা প্রয়োগ করে জমি প্রস্তুত করেন তিনি। বারসিক ও কৃষি অফিসের পরামর্শে ৩০ শতাংশ জমিতে ৩৫ হাজার টাকা ব্যয়ে দেশী জাতের সবজি উন্নতভাবে আবাদ করেন। বাজারে সবজির চাহিদাও প্রচুর।
কৃষক রফিকুল ইসলাম সবজির আবাদে জৈবসার ও জৈববালাই ব্যবহার করেন যা নিজেই বাড়িতে প্রস্তুত করেন। তিনি ছয় মাসে শসা থেকে ৪০ হাজার টাকা ও টমেটো বিক্রি করে ৩৫ হাজার টাকা আয় করছেন। ক্ষেতের ভেতর মৌসুমে করলা, মরিচ, বরবটির আবাদ ভালো হয়েছে। কৃষক রফিক মনে করছেন এখান হতে ৭০-৮০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন। কেবল সবজি চাষ করে রফিক এখন আর্থিকভাবে স্বচ্ছল।
এ বিষয়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো: শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে জমিতে যে কেউ সবজির আবাদ করে রফিকের মত লাভবান হতে পারেন। এ পদ্ধতিতে আগাছা কম হয়, জমিতে রস থাকে কৃষকের খরচ কম হয়। সবজির আবাদ দিয়ে এ কৃষক স্বাবলম্বী হয়েছেন। এ কৃষকের সবজির চাষে সফলতা দেখে এলাকার বেশ কয়েকজন কৃষক সবজি চাষের দিকে ঝুঁকছেন।
তরুণ কৃষক রফিক বলেন, “আমাদের কৃষি থেকে দেশী উন্নত জাত হারিয়ে যাচ্ছে। হাইব্রিড কৃষির আবাদ বাড়ছে। দেশী জাতও ভালো ফলন দেয় ভেবেই সবজির আবাদ করছি। সবজির চাষের গুণেই আমি আর্থিকভাবে খুব ভালো আছি।” তিনি আরও বলেন, ‘আমার সবজি আবাদের সফলতা দেখে এলাকার আরও কয়েকজন কৃষক আমার কাছ থেকে চারা সংগ্রহ করেছেন। আমি প্রতিবছর বাড়িতে সবজির চারা উৎপাদন করি, বাড়িতে সবজির বীজ রাখি বারসিক’র মাধ্যমে আমার বাড়িতে একটা কৃষক বীজ বাড়ি আছে। আমার ফসল ঘরে উঠলে ভালো বীজগুলো বীজঘরে কৌটা ও ড্রামে যতœ করে রাখি।’ রফিককে দেখে কেল্লাই, গাংডুবী, শোলধারা গ্রামের ৪ জন কৃষক আগামীতে মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষ করার পরিকল্পনা নেন।