ঘিওর, মানিকগঞ্জ থেকে সুবীর কুমার সরকার
তৃণমূল পর্যায় আইনগত সেবা এবং এডিআর বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও আইনি পরামর্শ প্রদান বিষয়ক সেমিনার সম্প্রতি ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী ইউনিয়ন পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বানিয়াজুরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস আর আনছারী বিল্টুর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার (সিনিয়র সহকারী জজ) সুবর্ণা সেঁজুতি, সভায় বানিয়াজুরী ইউনিয়ন লিগ্যাল এইড কমিটির সকল সদস্য, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, বারসিক কর্মী, ইউপি সদস্যসহ সেমিনারে ৬০ জন অংশগ্রহণ করেন।

বারসিক’র আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বিমল রায়ের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিনিয়র সহকারী জজ ও জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার সুর্বণা সেঁজুতি বলেন, ‘সরকার বিনা মূল্যে সরকারি খরচে গরীব অসহায় মানুষের জন্য আইনি সহায়তা দিয়ে থাকে। যারা গরিব অসহায়, যাদের কেস চালানোর মত সামর্থ্য নেই তাদের জন্য সরকার এই সহায়তা করে থাকে। অনেকসময় একজন উকিলের সাথে পরামর্শ করার প্রয়োজন হয় কিন্তু টাকার অভাবে আপনি কোনো উকিলের কাছে যেতে পারেন না। কারণ উকিলের কাছে পরামর্শ করতে গেলেই আপনাকে টাকা গুণতে হবে। তখন আপনি লিগ্যাল এইড অফিসে আসবেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘এমন অনেক সমস্যা আছে যে সমস্যা স্থানীয় মাতব্বর বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের পক্ষে সমাধান করা সম্ভব নয় তখন আপনি লিগ্যাল এইড অফিসে আসবেন। আমরা আপনার সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা করবো।’ সেমিনারে অংশগ্রহণ কারীদের মধ্যে উন্মক্ত আলোচনায় আইনি পরামর্শ প্রদান করেন।

সভাপতির বক্তব্যে বানিয়াজুরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস আর আনছারী বিল্টু বলেন, “সরকারি আইনি সহায়তা বিষয়ে আমার ধারণা ছিল না। তৃণমূল মানুষের কাছে সরকারি আইনি সহায়তা বিষয়ে জানানোর জন্য সিনিয়র সহকারী জজ স্যার আজ আমাদের মাঝে এসেছেন। সরকারি আইনি সহায়তা গরীব মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য এটা সরকারের একটা ভালো উদ্যোগ। অসহায় গরিব মানুষ সেবা পাবে। আমরা আমাদের পরিষদ থেকে সরকারি আইনি সেবা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সব ধরণের সহযোগিতা করব। বারসিককে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এমন একটি আয়োজনে আমাদের সহয়োগিতা করার জন্য।

এর আগে আলোচনার শুরতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন বারসিক’র প্রোগ্রাম অফিসার রাশেদা আক্তার। তিনি বলেন, ‘শুধু কেস পরিচালনা নয় যে কোনো ধরণের আইনি পরার্মশ ও বিরোধ নিষ্পত্তির কাজও সংস্থাটি করে থাকে। বারসিক মানিকগঞ্জ জেলায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার নিয়ে কাজ করে। সরকারি আইনি সহায়তা পাওয়াও মানুষের অধিকারের মধ্যে পড়ে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বারসিক জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির সদস্য হিসেবে সরকারি আইনি সহায়তা প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজের সমন্বয় করে যাচ্ছে। যারা আইনি সহায়তা পাওয়ার যোগ্য তারা লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে আইনি সহায়তা পাচ্ছে। লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে তিন মাসের মধ্যে বিরোধ মীমাংসা ও ক্ষতিপূরণ আদায় করা সম্ভব হয়েছে এমন অনেক উদাহরণ আমাদের রয়েছে।’