এখন মৃদু কুয়াশা; বাতাসে শীতের হিম হিম স্পর্শ
মানিকগঞ্জ থেকে এম.আর.লিটন
প্রকৃতিতে জানান দিচ্ছে শীতের আগমন। চলছে নভেম্বর মাস। এ মাসের শুরুতেই শীতের আবহ শুরু হয়। শীতের আগের ঋতুটি হচ্ছে হেমন্ত। প্রকৃতিতে চলে বর্ষার বিদায় আর শীতের আগমনের প্রস্তুতি। বাতাসের শুষ্কতা আর ছিটেফোটা বৃষ্টিতে শীত অনুভূতি এখন মৃদু কুয়াশা; বাতাসে শীতের হিম হিম স্পর্শ। কুয়াশার আঁচল সরিয়ে শিশিরবিন্দু মুক্তো দানার মতো দ্যুতি ছড়াতে শুরু করেছে ভোরের নরম রোদে। এদিকে, প্রকৃতির এই রূপ পরিবর্তনের প্রভাব পড়েছে সারাদেশের জনজীবনে।
শীতের আগমনী বার্তা বয়ে নিয়ে আসছে শীতের হিমেল হাওয়া। এর প্রভাব থেকে রক্ষার্থে সাধারণ মানুষ ভিড় করছে লেপ-তোষকের দোকানে। তাই এসব দোকানের কারিগররা ও এখন ব্যস্ত লেপ-তোষক তৈরির কাজে। শহর ছাড়া ও বিভিন্ন উপজেলা এমনকি গ্রাম-গঞ্জের লেপ-তোষকের দোকানগুলোতে ভিড় করছেন সাধারণ ক্রেতারা। শীত আসার আগেই তারা সাধ্যমত প্রয়োজন অনুসারে গরম লেপ-তোষক তৈরি করে নেয়। একারণেই অন্যান্য সময়ের চেয়ে এসময় লেপ-তোষকের দোকানগুলোতে ভিড় বেড়ে যায়। অনেক গ্রামে গৃহিণীরা পুরাতন লেপ-তোষক মেরামত করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
জমজমাটও হয়ে উঠছে শীতের পোশাকের মার্কেটগুলো। বড় বড় পোশাকের পাইকারি মার্কেটে চলছে প্রস্তুতির ধুম। শীত এখনো বেশি না পড়া সত্ত্বেও ক্রেতাদের ভিড় দেখা যায় মার্কেটগুলোয়। বিশেষ করে এখন পাইকারি বিক্রি হচ্ছে বেশি। খুচরা ক্রেতাও মিলছে তবে কম। তবে ব্যবসায়ীরা আগের জমানো কাপড় এখন কম দামে ছেড়ে দিচ্ছেন। ফলে এখন যারা শীতের পোশাক কিনছেন তারা কম দামে কিনতে পারছেন। আসন্ন শীতকে কেন্দ্র করে দোকানগুলোয় প্রতিদিনই উঠছে নতুন নতুন শীতের কাপড়। পাওয়া যাচ্ছে কম্বল, উলের তৈরি সোয়েটার, ব্লেজার, টুপি, কাপড়ের জুতা, কেটস, জ্যাকেট, ট্রাউজার, গরম কাপড়ের তৈরি প্যান্ট, চাদরসহ নানা রকমের গরম কাপড়।
আর শীত আসে যেন ফুলের ভেলায় চড়ে। নানারকম বাহারি ফুলে ছেয়ে যায় প্রকৃতি। খুব সহজেই বাসার আশপাশে, ফ্ল্যাটের বারান্দায় বা ছাদে অল্প স্থানে চাষ করা যায় শীতকালীন ফুলের। শীতের ফুলের মধ্যে গাদা, ডালিয়া ও চন্দ্রমল্লিকা অন্যতম। এছাড়া কসমস, পপি, গাজানিয়া, স্যালভিয়া, ডায়ান্থাস, ক্যালেন্ডুলা, পিটুনিয়া, ডেইজি, ভারবেনা, হেলিক্রিসাম, অ্যান্টিরিনাম, ন্যাস্টারশিয়াম, লুপিন, কারনেশন, প্যানজি, অ্যাস্টার ইত্যাদি ফুল ফোটে।
ঋতুবৈচিত্রের ধারায় প্রকৃতিতে ফোঁটায় ফোঁটায় শিশির বিন্দু গায়ে জড়িয়ে আসে শীত। আর শীতের সঙ্গে সম্পর্ক খেঁজুর রসের। হেমন্তকালেই শুরু হয় গাছিদের তোড়জোড়। রস আহরণে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন তারা। ইতোমধ্যেই গ্রামাঞ্চলে গাছিরা খেঁজুর গাছ থেকে রস নামানোর কাজে নেমে পড়েছেন।
শীত মানেই ঘরে ঘরে পিঠা খাওয়ার ধুম। ভাপা পিঠা, দুধ চিতুই, চন্দ্রপুলি, পাটিসাপটা ও নকশি পিঠা এরকম নানা ধরনের পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে ।
ইতিমধ্যেই আমাদের ত্বক শীতের প্রভাব জানান দেয়া শুরু করে দিয়েছে। বড়দের ত্বকের পাশাপাশি শীতের সময় ছোটদের ত্বকেরও দরকার বিশেষ যতœ। শীতের সময় শিশুদের ত্বকের যতœ না নিলে ত্বক হয়ে ওঠে শুষ্ক ও রুক্ষ। এসময়ে শিশুদের মসৃণ ত্বকও হয়ে ওঠে অমসৃণ। তাই এ সময়ে শিশুদের বাড়তি যতœ করা উচিত।