মহিষ পালনে কৃষকের মুখে হাসি
মানিকগঞ্জ থেকে নজরুল ইসলাম ও গাজী বাদল
সাধারণত আমরা গরু, মহিষ, ঘোড়া, ভেড়া ও ছাগলকে গবাদিপশু বলে থাকি যা গৃহে পালন করা যায়। সনাতন ধর্ম মতে, গবাদি পশু হলো ঘরের লক্ষ্মী। আদিকাল হতে গরু ও মহিষ কৃষিকাজের প্রধান উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কোন কোন অঞ্চলে গরুর বিকল্প হিসেবে মহিষ পালন করা হতো। বিশেষত ভারী মাল বহন করা, আখের রস থেকে চিনি ও গুর তৈরিতে সহায়তা, কৃষিকাজে হালচাষ, ফসল মাড়াইসহ নানাবিধ কাজে ব্যবহার করা হতো গরু ও মহিষকে। মহিষ যে শুধু গাড়ি টানে তাই নয়, এর দুধ গরুর দুধের চেয়েও অনেক শক্তিশালী! মহিষের মাংস সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। মহিষের গোবর ভালো জৈব সার। মানিকগঞ্জের হরিরামপুর চরাঞ্চলে মহিষ পালন সবচেয়ে সুবিধাজনক। কারণ মহিষ প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকতে পারে এবং রোগব্যাধি নেই বললেই চলে। মহিষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও অনেক বেশি।
মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার লেছড়াগঞ্জ চর এলাকায় কৃষকেরা মহিষ পালনের দিকে ঝুঁ^কছেন। মহিষ পালনে গরুর চেয়ে ঝামেলা কম। তরুণ কৃষক মো. উজ্জল মিয়া বলেন, “আমি মহিষ পালনে অনেক আনন্দিত। আমার মহিষ পালন দেখে চরে আরো কয়েকটি পরিবারে মহিষ পালন শুরু করছে। আমিও যুবকদেরকে উৎসাহিত করছি।” তিনি আরও বলেন, “মহিষ পালনে সরকারি কোন ঋণ নেইনি এবং উপজেলা প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের সাথে যোগাযোগ থাকলেও কোন সহযোগিতা পাইনি।” মহিষ পালনে সরকারি সহযোগিতা থাকলে চরাঞ্চলে মহিষ পালনে রয়েছে প্রচুর সম্ভাবনা এবং অর্থনৈতিকভাবে পরিবারে সচ্ছলতা ফিরে আসবে বলে তিনি মনে করেন।
উজ্জ্বল মিয়া জানান, বারসিক কর্মকর্তা মুক্তার হোসেন এর মাধ্যমে উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর এর আয়োজনে গবাদিপশুর উপর প্রশিক্ষণের সুযোগ পান এবং গবাদি পশু পালনে আগের চেয়ে আরো বেশি দক্ষ হয়ে উঠেন। তিনি বর্তমানে ৪টি মহিষ পালন করছেন, যা ক্রয়মুল্য আড়াই লাখ টাকা। বিগত বছরে দুটি মহিষ বিক্রি করেন ২ লাখ ৬০ হাজার টাকায়।