সাঁথিয়ায় হাঁস পালন করে ভাগ্যের চাকা ঘুরালেন শুকুর
জালাল উদ্দিন সাঁথিয়া (পাবনা) থেকে
শ্রম, মেধা আর যৎসামান্য পুঁজির সফল সম্মিলন ঘটিয়ে পাবনার সাঁথিয়ায় হাঁস পালন করে ভাগ্যের পরিবর্তন করলেন উপজেলার জোড়গাছা গ্রামের মৃত ওমেদ আলীর ছেলে যুবক আব্দুস শুকুর (৪৫)। হাঁস পালন করেও যে, ভাগ্যের চাকা ঘুরানো যায় শুকুর অল্প দিনেই বুঝিয়ে দিলেন এলাকাবাসীকে।
শুকুর জানান, পেশায় তিনি আগে বিলে মাছ ধরে বিক্রি করে সংসার চালাতেন। এ পেশায় থেকে যখন সংসার চালানো কষ্ট হচ্ছিল এবং অভাব অনটন পিছু ছাড়ছিলনা, ঠিক সেই মুর্হূতে আজ থেকে প্রায় ৬ বছর আগে জেলার চাটমোহর বিলে এক মহিলার হাঁস দেখে তার হাঁস পালনের আগ্রহ জন্মে। মাত্র ৬ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ২৫ টাকা দরে ২৫০টি কোরিয়ান ও পাকিস্তানি জাতের হাঁসের বাচ্চা কিনে পালন শুরু করেন। বর্তমানে তার হাঁসের সংখ্যা প্রায় ৬ শত। যার মূল্য প্রায় ২ লাখ টাকা।
শুকুরের দেওয়া তথ্য মতে, প্রতিদিন গড়ে তার প্রায় ৩ হাজার টাকার ডিম বিক্রি হয়। একটি পূর্ণ বয়স্ক হাঁস বিক্রি হয় ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়। হাঁসের পেছনে ঔষধ, ধান কিনে খাওয়ানো, কর্মচারী (রাখাল) খরচসহ অন্যান্য খরচ বাদে বছরে কয়েক লাখ টাকা তার আয় হয়। তিনি আরও জানান, হাঁসগুলো তিনি বর্ষা মৌসুমে মুক্তাহার বিল, সোনাই বিল ও ধলাই বিল সহ বিভিন্ন বিলে চরায়ে বেড়ান। এলাকার বিলের পানি কমে গেলে বাঘাবাড়ী যমুনা নদীতে হাঁসগুলো নিয়ে যান।
হাঁস পালনের কিছু দুঃখেরও স্মৃতি আছে শুকুরের তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে এ প্রতিনিধিকে জানান, ৪ বছর আগে কে বা কারা শত্রুতা করে তার প্রায় ২ শত হাঁস বিষ খাইয়ে মেরে ফেলে। শুকুরের মাঠে কোন জমি নেই, বর্তমানে হাঁস পালনের মাধ্যমেই ৫ জনের সংসার চলছে। ছেলে পাবনা এডওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে অনার্সে, একটি মেয়ে জোড়গাছা ডিগ্রী কলেজে একাদ্বশ শ্রেণীতে, অপর মেয়েটি ছোন্দহ স্কুলে দশম শ্রেণীতে লেখাপড়া করছে। তাদের পড়ার খরচও বহন করতে হয় এ থেকেই। শুকুরের ইচ্ছা সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ নিয়ে এবং সরকারি ও বে-সরকারী সুযোগ সুবিধা পেলে বেশি করে হাঁস পালন করবেন এবং বেকার যুবকদের হাঁস পালনে উদ্বুদ্ধ করবেন।