চন্দ্রডিঙ্গায় বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস উদ্যাপন
নেত্রকোনা থেকে অর্পণা ঘাগ্রা, গুঞ্জন রেমা, খায়রুল ইসলাম অপু
মাটির যত্ন থেকেই শুরু হোক পৃথিবীর সুরক্ষা এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে কলমাকান্দা উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের চন্দ্রডিঙ্গা গ্রামে বাঁধ রক্ষা কৃষক সংগঠনের উদ্যোগে বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস উদযাপন করা হয়েছে। পাহাড়ি পাদদেশে অবস্থিত এই গ্রামে বালি, পাথুরে, বেলে দোয়াস, এটেল মাটি রয়েছে। মাটির ধরন অনুসারে এখানে কৃষক ফসল ফলায়। বিগত কয়েক বছর যাবৎ পাহাড়ি ঢলের সাথে আসা পাহাড়ি বালিতে এই অঞ্চলের কৃষি জমি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই আজ মৃত্তিকা দিবসে কৃষকগণ মাটির পূর্বের ও বর্তমানের মাটির অবস্থা সম্পর্কে পর্যালোচনা করেছেন।
পাহাড়ি ছড়া ও ফসলী মাঠ পরিদর্শন করে কৃষক সুনিল মারাক যুব সংগঠনের সদস্যদের এবং বর্তমান প্রজন্মকে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিবেশের মাটি সম্পর্কে ধারণা প্রদান করেছেন। কোন ধরনের মাটিতে কি ধরনের ফসল ফলাতে হবে এবং কি ধরনের যত্ন নিতে হবে সেই সম্পর্কে ধারণা প্রদান করেছেন এবং যুবদেরকে মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন।
এই প্রসঙ্গে কৃষাণী বেনুকা ম্রং বলেন, “আমার জমির মাটি বালি। এই বালি মাটিতেই আমি ফসল ফলায় অনেক কষ্ট করে। বালি মাটিতে ফসল উৎপাদনের জন্য আমি জৈব সার ও গোবর ব্যবহার করি। আমি চাই বালি মাটিকে উর্বর করতে।”
কৃষাণী সাবিনা রেমা বলেন, “আমার জমিটি পাহাড়ি বালিতে ভরাট হয়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে মাটি সরিয়ে এইবার আমন মৌসুমে ধান উৎপাদন করেছিলাম। কিন্তু বেশি পরিমাণে সার দেওয়ায় ধান গাছ পুরে গিয়েছিল। যার কারণে ফসল পাই নাই। তাই জমিতে অধিক মাত্রায় রাসায়নিক সার ব্যবহার করা উচিত নয় এতে মাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।”
কৃষক হাসমত মিয়া বলেন, “যে মাটিতে কৃষক ফসল ফলাইতেছে সেই মাটি কৃষকই নষ্ট করতেছে। আজকাল প্রতিযোগিতামূলকভাবে রাসায়নিক সার বিষ কৃষি জমিতে ব্যবহার করতাছে। আমরাই মাটি নষ্ট করার জন্য দায়ী। মাটি ভালো রাখার জন্য সবাইকে আগাইয়া আসতে হইব। ”
যুব সংগঠনের সদস্য অন্তর হাজং বলেন, “মানুষের যেমন সুস্বাস্থ্যের দরকার তেমনি মাটির স্বাস্থ্যর ভালো রাখা দরকার। আজকের এই দিবসটি উদ্যাপনের মাধ্যমে মাটির স্বাস্থ্য নিয়ে ভাবনা তৈরি করেছে। মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যুবরা ভূমিকা রাখতে পারে।”