খাসিদের জীবন-জীবিকা রক্ষার উদ্যোগ নিন
সিলভানুস লামিন
এক
খাসি আদিবাসীরা বাংলাদেশের পাহাড়ি ও বন এলাকায় বাস করতে পছন্দ করেন। কারণ তাদের জীবিকা প্রকৃতিনির্ভর। প্রকৃতি ছাড়া খাসিদের অস্তিত্ব কল্পনাই করা যায় না। প্রকৃতিই তাদের জীবন রক্ষার একমাত্র অবলম্বন! প্রকৃতি তথা পাহাড়, বন বা জঙ্গল ব্যবস্থাপনায় খাসিরা খুবই দক্ষ। বলতে পারি, বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় যেসব পাহাড়, বন রয়েছে সেগুলো আজও টিকে আছে শুধুমাত্র খাসি আদিবাসীদের কল্যাণে। খাসিরা গাছ লালন-পালন করেন। কারণ তাদের পানচাষ গাছকেন্দ্রিক। গাছ না থাকলে খাসিদের কৃষিকাজ বলতে গেলে প্রায় অচল। তাই প্রয়োজনের তাগিদেই তারা নানান ধরনের গাছ রোপণ, প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া গাছ পরিচর্যা ও সংরক্ষণ করেন। আমার বেশ কয়েকজন সহপাঠী ও সহকর্মীগণ খাসিদের গ্রামে গেছেন কয়েকবার। খাসিদের এলাকার পরিবেশ, সবুজ সমারোহ এবং পাহাড় দেখে তারা বিমোহিত হয়েছেন এবং এখনও সুযোগ পেলেই সেখানে যাওয়ার চেষ্টা করেন। খাসিদের সহজ সরলতা তাদেরকে এখনও বেশ টানে। অন্যদিকে কৃষি চর্চার ক্ষেত্রে খাসিরা ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা ব্যবহার করেন। বাংলাদেশে প্রায় ৯৯ ভাগ খাসি পান চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। পান চাষ প্রক্রিয়ায় খাসিরা কখনও রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করেন না। তারা স্থায়িত্বশীল কৃষিব্যবস্থা অনুসরণ করেন যেখানে চাষবাস প্রক্রিয়ায় জৈব সার ব্যবহার করেন মাটির স্বাস্থ্যকে সুস্থ রাখার জন্য। এছাড়া পরিবেশ ও প্রকৃতি যাতে ‘সহিংসতার’ শিকার না হয় সেজন্য তারা পানচাষের জমিতে পান ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক উদ্ভিদ (দেশীয় প্রজাতির গাছ, বেত, তেরা বেট, কলা, গুল্ম, ঘাস,) লালনপালন করেন। খাসিদের পান জুমে তাই এখনও অসংখ্য দেশী ও নাম না জানা গাছপালা, বিভিন্ন পশু-পাখি, হরেক রকমের লতা জাতীয় উদ্ভিদ ইত্যাদি দেখা যায়। তাদের পান বাগান বা জুম এলাকায় যাওয়ার সময় অসংখ্য প্রজাতির পাখির কলকাকলি শোনা যায় এখনও। বেঁচে থাকার তাগিদেই খাসিরা প্রকৃতিঘনিষ্ঠ এই কৃষিব্যবস্থা পরিচালনা করে আসছেন। একজন খাসি মানুষ জন্মের পর থেকে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে তার হাতেখড়ি হয়। কারণ জন্মের পর সে যে কৃষিব্যবস্থার সাথে পরিচিত হয় সেই কৃষিব্যবস্থাই তাকে শিখিয়ে দেয় কীভাবে প্রকৃতির কোন ‘ক্ষতি’ না করে ফসল উৎপাদন করা যায়; জীবিকা নির্বাহের অবলম্বন হিসেবে প্রকৃতির সম্পদের স্থায়িত্বশীল ব্যবহার করতে হয়।
দুই
বাংলাদেশের সংবিধান সবার জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার কথা বলেছে এবং সবার মৌলিক অধিকার লাভের কথা ওই সংবিধানে বলা হয়েছে। মৌলিক অধিকার যদি খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা হয়ে থাকে তাহলে খাসিদের এলাকা পর্যবেক্ষণ করলে এর বাস্তবতা বড়ই করুণ দেখা যাবে। খাসিদের গ্রামে কোন সরকারি হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মাত্র দু’একটি গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে!) ও অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠান নেই যেখানে সুযোগ-সুধিবা লাভ করতে পারে। খাসি শিশুদেরকে তাই শিক্ষার জন্য মিশনারিজ কিংবা এনজিও পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওপর নির্ভর করতে হয়। শিক্ষার প্রাথমিক গ-ি পেরোনার পর মাধ্যমিকের জন্য তাদেরকে শহরে আসতে হয় যেখানে আবাসন সমস্যা প্রকট। মিশনারিজ পরিচালিত হোস্টেলের সংখ্যাও সীমিত। এছাড়া প্রাইভেট হোস্টেলগুলোর ফিও অনেক বেশি। তাই কেবলমাত্র মোটামুটি স্বচ্ছল পারিবারের পক্ষেই তাদের শিশুদেরকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করাতে পারেন। ফলে প্রাথমিক থেকেই খাসি শিশুদের শিক্ষায় ঝরে পড়ার হার অনেক বেশি। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকেও ঝরে পড়ার হার উল্লেখ করার মতো। ফলশ্রুতিতে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে খাসি শিক্ষার্থীর সংখ্যা খুবই কম। উচ্চ শিক্ষিত খাসি শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম হওয়ায় তারা তাদের অধিকার, মানবাধিকার নিয়ে খুব একটা সচেতন নয়। তাই নানান ক্ষেত্রেই তারা বঞ্চনা ও শোষণের শিকার হচ্ছেন। এসব অন্যায়, অন্যায্যতা এবং বঞ্চনা নিয়ে কথা বলার মতো বিশ্বাসযোগ্য ও সঠিক নেতৃত্বও গড়ে উঠতে পারেনি। ফলে নিজের অধিকার, চাহিদা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা আদায়ের ক্ষেত্রেও খাসিরা অন্যের ওপর নির্ভরশীল!
তিন
খাসিদের এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা চিত্রও খুবই ভয়াবহ। সরকারি ও বেসরকারি কোন স্বাস্থ্যসেবামূলক প্রতিষ্ঠান নেই। ইউনিয়ন কিংবা উপজেলা পর্যায়ে যেসব স্বাস্থ্যসেবামূলক প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তা বা প্রতিনিধিরা কদাচিৎ খাসিদের এলাকায় যান স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য। ফলে অসুখ-বিসুখে তাই খাসিদেরকে অনেক পথ পাড়ি দিয়ে শহরে আসতে হয়। সেখানেও কিন্তু তারা নানান প্রতারণার শিকার হন অনেক সময়। স্বচ্ছল পরিবারের পক্ষে যদিওবা শহরের ভালো মানের চিকিৎসকদের কাছে সেবা কিনতে পারেন কিন্তু দরিদ্র পরিবারের পক্ষে খুবই কঠিন। দরিদ্ররা তাই হাতুড়ে ডাক্তার কখনওবা অনভিজ্ঞ প্যারাম্যাডিক এর উপর নির্ভর করতে হয় চিকিৎসার জন্য। অনেকসময় ভুল ওষুধ কিংবা প্রয়োজনের অতিরিক্ত ডোজের কারণে রোগীর অবস্থা নাজুক হয়। এরকম অনেক উদাহরণ খাসিদের এলাকায় পাওয়া যায়। অন্যদিকে খাসিদের এলাকার ভৌত যোগাযোগ অবস্থা ও ব্যবস্থাও খুবই শোচনীয়! তাই গর্ভবতী নারী কিংবা মুমূর্ষ রোগীদের নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া অনেকসময় খুবই সমস্যা হয় নাজুক যোগাযোগ অবস্থা ও ব্যবস্থার কারণে। বর্ষাকালে এই যোগাযোগ অবস্থা আরও অবনতি হয়। নাজুক যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অবস্থার কারণে খাসিরা সরকারের ‘সামাজিক সুরক্ষা বলয়ে’র সুফল থেকেও বঞ্চিত। এছাড়া উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদে নানান ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। কিন্তু এসব সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে খাসিরা খুব একটা জানেন না; জানলেও এসব সুযোগ-সুবিধাগুলোতে তাদের প্রবেশাধিকার বলতে গেলে নেই। তাই খাসিদের মধ্যে খুব কম সংখ্যক ব্যক্তি রয়েছেন যারা বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতাসহ অন্যান্য ভাতাগুলো পান। এছাড়া কৃষিকাজের জন্য সরকারের যেসব সুযোগ-সুবিধা তথা সার, বীজ কিংবা ঋণ ব্যবস্থা করেছে সেগুলোতে তাদের কোন অভিগম্যতা নেই। তাই সাধারণত দৃষ্টিতে খাসিদের অবস্থা ভালো মনে হলেও তাদের প্রকৃত সামাজিক ও অর্থনৈতিক চিত্র খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়।
চার
বাংলাদেশের অন্যান্য আদিবাসীদের মতো খাসিরাও নানাভাবে নির্যাতন, শোষণ ও হয়রানির শিকার। জীবনের প্রতিটি পদে মানুষ কর্তৃক সৃষ্ট সমস্যা ও বিভিন্ন প্রতিকূলতার সঙ্গে সংগ্রাম করেই তাঁরা জীবন পথে এগিয়ে চলেন। একটি খাসি শিশু জন্মের পর থেকে নানা বঞ্চনা, শোষণ, হয়রানি ও নির্যাতনের মুখোমুখি হতে হয়। তাই শৈশব থেকে খাসিরা এসব শোষণ, প্রতারণা ও বঞ্চনার সাথে আপোষ করেই জীবন-জীবিকা পরিচালনা করে আসছেন। এসব অন্যায় ও শোষণের বিরুদ্ধে খাসিরা যে সোচ্চার হয়নি তা নয়; বরং অনেকবারই তারা তাদের ‘কণ্ঠস্বর’ স্থানীয় প্রশাসন ও জাতীয় নেতৃত্বের কাছে পৌছানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু রাষ্ট্রব্যবস্থার সিস্টেম বা প্রক্রিয়া শক্তিশালী ও প্রভাবশালীদের দ্বারা পরিচালিত হয়। দুর্বল বা কম শিক্ষিত খাসিদের পক্ষে এই সিস্টেমকে চ্যালেঞ্জ করা সত্যি দুরহ কাজ। ফলশ্রুতিতে আদিবাসিন্দা কিংবা দেশের নাগরিক হওয়ার পরও খাসিরা খুব একটা ভালো নেই। এক সময়ে পাহাড়ে শুধু খাসিদের জীবিকা নির্বাহ বিষয়ক অনুশীলন দেখা গেলেও আজ এ পাহাড়ে ভূমিখেকো, প্রভাবশালী এবং পরিবেশ বিনাশকারীদের অহরহ বিচরণ, দখলদারিত্ব এবং ক্ষমতা চর্চা দেখা গেছে। লোভী ও প্রভাবশালী মহলের লোলুপ দৃষ্টি এখন এই খাসিদের ভূমির দিকে। তাই তো দেখা গেছে, সম্প্রতি মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলায় অবস্থিত ইছাছড়া, নুনছড়া, গুছাছড়া, ঝিমাই এবং বড়লেখার আগাড়, বনাখালাসহ আরও অনেক পুঞ্জিতে হামলা চালানো হয়েছে। এসব খাসিপুঞ্জির পানের লতা, গাছসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংস করা হয়েছে। এছাড়া ভয় দেখিয়ে এবং ভুয়া দলিল করে সহজ সরল খাসিদের ভূমি ও সম্পদ হাতিয়ে নেওয়ার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রভাবশালীরা। অনেকক্ষেত্রে দেখা যায়, প্রভাবশালীদের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা খাসিদের পান বাগানের পান গাছ, বাড়িঘর, গির্জা, মুদির দোকান ভাঙচুর করেছে। তাদের একটায় উদ্দেশ্য, খাসিদের জমি দখল করা এবং খাসিদের দীর্ঘ বছরের লালনপালন করা গাছগুলো কেটে মুনাফা অর্জন করা! এছাড়া খাসিদের এলাকায় কিছু খাসি বিদ্বেষী সাংবাদিক ও মানুষ রয়েছে যারা তাদের নিজস্ব বা ক্রয়কৃত পত্রিকায় বা চ্যানেলে খাসিদের বিরুদ্ধে পরিবেশ নষ্ট করার অভিযোগ করেছেন, তাদের পত্রিকায় বা চ্যানেলে কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে এই বিষয়গুলো প্রকাশ করে খাসিদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। তাদের অভিযোগ খাসিরা পরিবেশ নষ্ট করছেন, গাছ কাটছেন এবং টিলা কেটে পরিবেশ বিনষ্ট করছেন। তবে এ অভিযোগের যে কোন ভিত্তি নেই সেটি খাসিদের গ্রামে গেলেই বুঝা যাবে। খাসিরা যে এলাকায় থাকেন সেই এলাকার বন, পরিবেশ, গাছপালাসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদান যথেষ্ট ভালো আছে।
পাঁচ
বাংলাদেশ ১৯৭২ সালে আইএলও কনভেনশনে অনুস্বাক্ষর করেছে। ILO convention এর ঈ-১৬৯ C-169 Indigenous and Tribal Peoples Convention ১৯৮৯ -এর ১৪নং অনুচ্ছেদের (১)-এ বলা হয়েছে, ‘এসব জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যগতভাবে আয়ত্তকৃত জমির মালিকানার অধিকার ও ঐতিহ্যগতভাবে দখলীস্বত্বের স্বীকৃতি দিতে হবে। অধিকন্তু, ঐতিহ্যগতভাবে ব্যবহারকৃত জমি যা, তাদের জীবনযাপন এবং ঐতিহ্যবাহী কার্যক্রমে ব্যবহার করতো সেগুলো রক্ষা করার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’ অনুচ্ছেদ ১৪ (২) এ বলা হয়েছে, সরকার এসব জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যগতভাবে আয়ত্তকৃত ভূমি চিহ্নিতকরণ এবং তাদের মালিকানার অধিকার ও দখলীস্বত্বে কার্যকরী নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বিধান করবে।’ তবে সরকারের অনুসাক্ষরিত এই কনভেনশনে এসব বিষয় থাকলেও খাসিসহ অন্য আদিবাসীদের জমি-মাটি, বসতভিটা, সম্পদ এবং গ্রাম দখল করার প্রক্রিয়া এখনও কমেনি বরং দিনকে দিন আরও বেড়ে যাচ্ছে। খাসিরা তাদের জীবন দিয়ে অনেকবার বনকে রক্ষা করেছেন এবং রক্ষা করে যাবেন। খাসি ছাড়াও অন্যান্য আদিবাসীরাও তাদের জীবন বির্সজন দিয়েছেন অসংখ্যবার বনকে তথা বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদানকে রক্ষা করার জন্য। কিন্তু দুঃখের সাথেই বলতে হয় যে, দেশের বিভিন্ন ধরনের পর্যটন কাঠামো আদিবাসীদের এলাকাতেই বেশি গড়ে তোলা হয়েছে। ইকোপার্ক, পর্যটন অবকাঠামো করার জন্য সরকারসহ প্রভাবশালীমহল আদিবাসীদের এলাকাকে বেছে নিয়েছে অনেকবার (মাধবকু-, মধুপুর, সম্প্রতি পার্বত্যের চিম্বুক)। অথচ বন রক্ষা ও ব্যবস্থাপনায় সবচে’ বেশি দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে খাসিসহ অন্যান্য আদিবাসীরাই। তাই তো দেখা গেছে, বাংলাদেশে যে এলাকায় এখনও বন ও প্রাকৃতিক পরিবেশ রয়েছে সেখানেই রয়েছে আদিবাসীদের আবাসস্থল। আদিবাসীরা ওই এলাকা থেকে চলে গেলে কিংবা উচ্ছেদ হলে সেই এলাকায় গড়ে ওঠা এসব বন ও প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই বনসহ প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণ ও পরিচর্যার জন্য খাসিসহ অন্যান্য আদিবাসীদের সরকারি সহায়তা, স্বীকৃতি ও পৃষ্ঠপোষকতা করা উচিত। এছাড়া আদিবাসীদের প্রথাগত ভূমি অধিকারকেও স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। কারণ খাসিসহ অন্যান্য আদিবাসীরা বাঁচলে এ দেশের অবশিষ্ট বনাঞ্চলও বাঁচবে, বাঁচবে বন, প্রকৃতি ও পরিবেশ। এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের বিশেষ দৃষ্টি আর্কষণ করছি। খাসিদের পানচাষ ও বন সংরক্ষণ সম্পর্কে সরকারের মাননীয় বন ও পরিবেশমন্ত্রী ভালোভাবেই জানার কথা। সম্প্রতি তিনি খাসি নেতাদের সাথে আলোচনায় বসেছেন এবং নানান আশ্বাস দিয়েছেন। আশা করছি তিনি তাঁর দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবেন। এছাড়া স্থানীয় প্রশাসনসহ ঢাকা থেকে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণ আক্রান্ত খাসি এলাকার পরিদর্শন করেছেন এবং বিষয়গুলো সুরাহা করার জন্য বিভিন্ন পত্রিকায় সুপারিশ করেছেন। আমরা আশাবাদী পরিবেশবান্ধব জীবিকা পরিচালানকারী খাসিদের এসব সমস্যা সমাধানে সরকার আন্তরিক হবে এবং সুরক্ষিত হবে খাসিদের জীবন ও জীবিকা।