উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার শ্যামনগরের পানখালী আশ্রয়ন প্রকল্প পরিদর্শন
সাতক্ষীরার, শ্যামনগর থেকে বিশ^জিৎ মন্ডল
জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে সবচেয়ে হুমকির সম্মুখীন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চল। প্রাকৃতিক দুর্যোগে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, নদী ভাঙন, ঘূর্ণিঝড়, লবণাক্ততা, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস এ অঞ্চলের নিত্যসঙ্গী। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে উপকূলীয় এলাকার কয়েকটি ইউনিয়নের জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ঘরছাড়া হতে হয় প্রাণবৈচিত্র্যনির্ভর অনেক মানুষকে। দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে কতিপয় মানুষ বাস্তুভিটায় ফিরে গেলেও ফিরতে পারেননি অনেকে। তারা কেউ কেউ আশ্রয় নিয়েছেন পাশ্ববর্তী গ্রামের খাস ভূমিতে, কাজের সন্ধানে কেউ চলে গেছেন শহরে, কেউবা বাইরে। আবার কেউ আছে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে সরকারি খাস জমিতে গড়ে ওঠা পূনর্বাসন কেন্দ্রে। প্রাকৃতিক দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত বসতভিটা বিচ্ছিন্ন প্রাণবৈচিত্র্যনির্ভর তেমনি এক পুনর্বাসন কেন্দ্র বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের পানখালী গ্রামের আশ্রয়ন প্রকল্প।
দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়াতে আশ্রয়ন প্রকল্পের অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। ঘর ও স্যানিটেশন ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। বৃষ্টি হলে ঘরগুলোতে পানি পড়ে। আশ্রয়ন জনগোষ্ঠী তাদের সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে ধারাবাহিকভাবে প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আজ ২৩ আগস্ট (বুধবার) শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরেজমিনে পানখালী আশ্রয়ন প্রকল্পের জনগোষ্ঠীর কর্মউদ্যোগ পরিদর্শন ও আশ্রয়ন জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে মতবিনিময় করেন।
পানখালী আশ্রয়ন প্রকল্পের জনগোষ্ঠীর আয়োজনের এবং বারসিক সহযোগিতায় মতবিনিময় সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আক্তার হোসেন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তকবায়ন কর্মকর্তা শাহিনুল ইসলাম ও বারসিক কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভায় আশ্রয়ন জনগোষ্ঠীরা তাদের ঘর, স্যানিটেশন, পুকুর, ফলজ গাছসহ নানান সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
তাদের কথা প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা বলেন, ‘আশ্রয়ন প্রকল্প এখন তো আপনাদের। এটি ভালো রাখার দায়িত্বও আপনাদের। আপনাদের বাড়িঘর তো আর অন্য কেউ ঠিক করে দেবে না। আপনারা এখানে যে ৫টি বেডে ৫০ জন বাস করেন প্রত্যেক বেডে আলাদা আলাদা কমিটি তৈরি করবেন। আর সেই কমিটির দায়িত্ব থাকবে এই ঘর সংস্কার করা। আমরা প্রশাসন থেকে ঘর ও স্যানিটেশন সংস্কারের জন্য একটি প্রস্তাবনা পাঠিয়েছিলাম সেটি কতটা করতে পারবো বা কিভাবে করতে পারবো তা পরে জানাবো। সাথে বসবাসকারী সকলেই নিজের নামে দলিল তৈরি করে নেবেন। আর এ দলিল তৈরিতে প্রশাসন থেকে সহায়তা করা হবে। সবশেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশ্রয়ন জনগোষ্ঠীর সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন।