নিজের সংসার নিজেকেই সুন্দর করে রাখতে হবে
সিংগাইর মানিকগঞ্জ থেকে রিনা আক্তার
একটি সুন্দর সাজানো সংসার সবার কাম্য। কিন্তু চাইলে কি আর সব মিলে? সংসার সুখের হয় তখনই যখন সংসারে আয় রোজগার ভালো থাকে। পরিবারের প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে না পারলে পরিবার জীবন দুর্বিসহ হয়ে ওঠে। এমনই এক পরিবার সিংগাইর উপজেলার আঙ্গারিয়া গ্রামে স্বরসতীর সংসার।
স্বরসতী সিদ্ধা (৪২) স্বামী বিষ্ণু সিদ্ধা (৪৭)। বিষ্ণু পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রি। এক ছেলে বিশাল সিদ্ধা ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র, মেয়ে পূর্ণিমা সিদ্ধা ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী। এই চার জনের সংসার তাদের।
স্বরসতী শুধু নামেই নয়, কাজকর্মে জ্ঞানেগুণে পরিপূর্ণ একজন নারী। তাঁর স্বামী কাজে তেমন আগ্রহী না থাকায় বাড়ির আঙ্গিনায় ২টা গরু, বেশ কিছু মুরগি লালন পালন করেন তিনি। তারপর যেটুকু সময় পান তিনি কাগজ দিয়ে বাজির খোল বানান। সিংগাইরে পুকুরপাড়া নামক গ্রাম থেকে এক বাজি ব্যবসায়ী কাগজ দিয়ে যান এই বাজির খোল তৈরি করার জন্য। এই খোল বানাতে যে আঠা লাগে তাও তিনি নিজ হাতে তৈরি করেন। আঠা বানাতে লাগে ময়দা, তুত। ১০০০ খোল বানালে ৫০ টাকা পান তিনি। তিনি কাজের ফাঁকে প্রতিদিন ১০০০টি করে খোল বানাতে পারেন। বাজির এ খোল বানানোর কাজে সহায়তা করেন তার ছেলে এবং মেয়ে।
প্রতিমাসে খোল বানিয়ে প্রতিমাসে তিনি বাড়তি ১৫০০ টাকা আয় করেন, যা তাঁর পারিবারিক কাজে বেশ কাজে লাগে।
স্বরসতী বলেন, ‘নিজের সংসার নিজেকেই সুন্দর করে রাখতে হবে। তাই শুধু স্বামীর উপর নির্ভরশীল না হয়ে তাঁর সহযোগী হয়ে কাজ করতে হবে। সবাই যদি আমার মত কাজ করে তাহলে কারও সংসারে অভাব থাকবে না। সুখী পরিবার গড়ে উঠবে ঘরে ঘরে।’
স্বরসতীর স্বামী ঠিকমত কাজ না করায় সংসার চালাতে হিমসিম খেতে হতো তাকে। সন্তানদের পড়াশোনার খরচসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের চাহিদা মেটাতে বেশ বেগ পেতে হতো। তবে নিজ উদ্যোগে আয়বর্ধনমূলক কাজে নিজেকে নিয়োজিত করে তিনি কিছু বাড়তি আয় করতে পারায় সুন্দর মত সংসার ও ছেলেমেয়ের পড়ালেখার খরচ চালাতে সক্ষম হয়েছেন। তার এ কাজ দেখে আশপাশের অনেক নারী উৎসাহিত হচ্ছেন এবং স্বামীর পাশাপাশি আয়মূলক বিভিন্ন কাজ করছেন।