লোকায়ত পদ্ধতিতে সবজি চাষ করছেন কৃষক আক্কাস আলী
রাজশাহী থেকে সুলতানা খাতুন
বরেন্দ্র অঞ্চল খরা প্রবণ অঞ্চল। এ অঞ্চলে শীতকালে যেমন প্রচন্ড শীত গরমে তেমনি প্রখর খরা। তবে প্রতিবছরের তুলনায় এবারেএ অঞ্চলে তীব্র তাপদাহ ও খরা বেশি। রাজশাহী অঞ্চলের পবা উপজেলা সবজি চাষের অন্যতম স্থান। এসব স্থানে সবজি ব্যাপক হারে চাষাবাদ করা হয়। দর্শন পাড়া ইউনিয়ন এখন সবজি ব্যাপক হারে চাষাবাদ হচ্ছে। সবজি ব্যাপক দাম ও চাহিদা থাকায় গ্রাম অঞ্চলে বাড়িসহ কৃষি জমিতে সবজি চাষে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। এর মধ্যে দিয়ে প্রাণবৈচিত্র্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
দর্শনপাড়া ইউনিয়নের কুপাকান্দি একটি গ্রাম। এ গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল। এই গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ আক্কাস আলী বিগত দশ বছর থেকে বাড়ির পাশে নিজে জৈব সার ও কুইক কম্পোস্ট দিয়ে মৌসুমকালীন সবজি যেমন কলমি শাক, করলা, বেগুন, মরিচ, লাউ, মিষ্টি কুমড়াসহ আরো বিভিন্ন রকম সবজি চাষ করেছেন। তার সবজি বাগানে বেগুন মরিচ থাকা সত্ত্বেও তিনি আবার বেগুন মরিচ গাছ লাগিয়েছেন যেন তার সবজি বাগান ফাঁকা না থাকে। আগেরটা নষ্ট হতে না হতে নতুন গাছ তৈরি হয়ে যায়।
এই প্রসঙ্গে আক্কাস আলী বলেন, ‘আমি তীব্র তাপের কারণে গাছ লাগিয়ে কচু পাতা দিয়ে ঢেকে রাখি। এভাবে তিন দিন সকালে ঢাকবো ও রাত্রে তুলে দিব। তাহলে সবজি গাছগুলো নষ্ট হয়ে যাবেনা। তিনদিন পরে গাছগুলো শেকড় গজানো শুরু করবে। এছাড়া আমি করলা ও পটলের বাহানের নিচে কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে রেখেছি যাতে বাহানের নিচে মাটি নরম থাকে। তাহলে ঘনঘন গাছের গোড়ায় পানি দেওয়া লাগবেনা। গাছটা ভালো থাকবে।’
আক্কাস আলীর কৃষিকাজ দেখে গ্রামের অনেক নারী পুরুষ উৎসাহিত হচ্ছেন। তিনি সবজি চাষ করে বাড়ির পাশাপাশি প্রতিবেশীদের সাথে বিনামূল্যে বিনিময় করে থাকেন এবং তিনি নিজে তার বাহান থেকে লাউ মিষ্টি কুমড়া বীজ সংরক্ষণ করেছেন। অন্যদিকে তার বাড়িতে পরিবেশবান্ধব চুলাতে রান্না করা হয়। তার বাড়ির সামনে একটি পুকুর আছে। তিনি সে পুকুরের একধারে কচু শাক লাগিয়েছেন। সেখান থেকে তার পরিবারসহ পাড়ার অন্যরা শাক তুলে খান। তার এমন কৃষি চর্চা দেখে গ্রামের তরুণ জনগোষ্ঠীরা উৎসাহিত হচ্ছে।