কত কাজের-কত গুণের কুস্তরী!
নাচোল, চাপাই নবাবগঞ্জ থেকে অনিতা বর্মন
বাংলাদেশের মাঠে-ঘাটে, বনে-জঙ্গলে, পথের পাশে বা বসতবাড়ির আশপাশে, রাস্তার পাশে বা খাদের আনাচে কানাচে অযতেœ-অবহেলায় কতোনা ঔষধি গুণ সম্পন্ন উদ্ভিদ রয়েছে যার খবর আমরা অনেকেই রাখিনা। কোন প্রকার যতœ পরিচর্যা ছাড়াই প্রকৃতিতে জম্মানো এসব অপরিচিত বা পরিচিত উদ্ভিদের রয়েছে বহু পুষ্টি ও ঔষধি গুণ। কোন কোন সময় এগুলো আগাছা হিসেবেও ক্ষেতে জন্মায় । এর মধ্যে কোন কোন উদ্ভিদের পাতা, ফল-মূল, শাকসবজি হিসেবে খাওয়া হয়, আবার কোনটি ব্যবহৃত হতে পারে ফসলের ক্ষেতে পোকা দমনসহ নানান কাজে। এমনই একটি উদ্ভিদ হলো কুস্তরী গ্রাম্য ভাষায় যাকে বন ঢেঁড়স বলে।
নাচোল উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নে পশ্চিম নেজামপুর গ্রামের শ্রী ভবানি চন্দ্র বর্মনের তথ্য অনুযায়ী, কুস্তরী খুবই উপকারি একটি গাছ। সচারচর এই গাছটি জঙ্গলে বেশি দেখা যায়। তবে আগের তুলনায় এই গাছ আর তেমন একটা দেখা যায় না। এই গাছটি প্রায় ৪/৫ ফুট লম্বা হয়ে থাকে। পাতাগুলো খাচ কাটা, ফুলটি কুমড়ো ফুলের মত হলুদ রঙয়ের, ফল মোটা মোটা ঠিক যেন ঢেড়স এর মতন।
তিনি বলেন,“এই গাছের ফল তরকারি হিসেবে ভেজে রান্না করে গ্রামের হিন্দু ও মুসলিমসহ সকলেই খায় এবং এর স্বাদও মিষ্টি। তবে শুধু ফল না এই গাছের ডাল পালা, পাতাও বিশেষ কাজে লাগে। মানুষ শারীরিক র্দুবলতা সাড়াতে এই গাছের পাতা ও ডাল ভিজিয়ে রস খেয়ে থাকে। গাছের ডালপালা শুকিয়ে টুকরো টুকরো করে কেটে গুড় তৈরির কাজে লাগে। যারা গুড় তৈরি করেন তারা এই গাছটি ব্যবহার করেন। গাছের টুকরো ডালগুলো না দিলে গুড়ের রঙ ভালো হয় না, গুড় দানা বাঁধে না ।”
তিনি জানান, তাদের এলাকায় অনেক সময় দেখা যায় শীতলাই, নন্দনগাছি এলাকার লোক এসে এই গাছগুলো খুঁজে বেড়ান আর সন্ধান পেলে কেটে নিয়ে যান। তারা এই গাছগুলো কেটে নিয়ে গিয়ে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে থাকেন বলে জানান ।
শ্রী ভবানি চন্দ্র বর্মন বলেন,“ আমাদের আশপাশে এমন অনেক জানা অজানা গাছ আছে, উদ্ভিদ আছে তা আমরা ব্যবহার করি না। তবে আমরা সবাই যদি একটু সজাগ হয়ে এই সব উদ্ভিদ নষ্ট না করে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করি তাহলে আমাদের আশে পাশে পড়ে থাকা উদ্ভিদগুলোর ব্যবহার আমাদের ভবিষৎ প্রজন্মও জানতে পারবে এবং অন্যদেরও জানাতে পারবে।”