বরেন্দ্র অঞ্চলে জলাভূমির সংরক্ষণ প্রয়োজন

রাজশাহী থেকে ইসমত জেরিন:

বরেন্দ্র অঞ্চলের গোদাগাড়ী উপজেলার গোগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের বুক চিরে বয়ে গেছে খাড়িটি।  সবাই তাকে গোগ্রাম খাড়ি নামেই ডাকে। এই খাড়ির পানি দিয়ে কৃষকরা ফসল ফলান, মৎসজীবীরা দেশীয় সুস্বাদু মাছ আহরণ করেন। বিভিন্ন জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণীর আবাসস্থল এই খাড়ি। কিন্তু কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে এই খাড়ির প্রাণ অর্থাৎ জলের প্রবাহ ও গভীরতা। জলের অভাবে সংকটাপন্ন  খাড়ির প্রাণবৈচিত্র্য, ব্যাহত হচ্ছে কৃষি উৎপাদন।

Jolavumi dibos

এই জলাভূমিগুলো সংরক্ষণের দাবিতে গত ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ গোদাগাড়ী উপজেলার গোগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের বড়শীপাড়া গ্রামের আলোর পথে তরুণ সংঘের যুবকরা মিলে বিশ্ব জলাভূমি দিবস উদযাপন করে ।অনুষ্ঠানে কৃষক মো. হাসান হাবিব বলেন, “এই খাড়িতে ৩০ বছর আগে ১৫ কেজি ওজনের চিতল মাছ পাওয়া গেছে কিন্তু আজ দেশীয় ছোট ছোট মাছ ছাড়া কিছুই পাওয়া যায় না, এমনকি সেচের জন্য প্রয়োজনে অনেক এলাকায় একটু পানিও পাওয়া যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে গোগ্রাম এলাকার খাড়ির মতো জলাভূমিগুলোর সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।

আমরা জানি, বরেন্দ্র অঞ্চল খরা প্রবণ অঞ্চল। জলাভূমিগুলো খরার প্রভাব কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে তাই এই জলাভূমিগুলো রক্ষার জন্য সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে উদ্যোগ নিতে হবে এবং এইJolavumi dibos (3) কাজে তরুণদেরকে এগিয়ে আসতে হবে ।

অনুষ্ঠানে আগত অতিথিরা বলেন, “মানব শরীরে রক্ত প্রবাহ ঠিক রাখতে যেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ধমনী। কোনো কারণবশত যদি ধমনী অকার্যকর হয়ে যায় তাহলে যেমন মানুষকে বাঁচিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে, তেমনি বাংলাদেশের প্রাণের আধার হলো নদ, নদী ও জলাভূমি। যদি এইগুলো হারিয়ে যেতে থাকে তবে বাংলাদেশের অর্থনীতি, সংস্কৃতি, পরিবেশ, প্রতিবেশকে টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।”

আলোর পথে তরুণ সংঘের সদস্যদের পক্ষ থেকে সভাপতি মো. হালিম খাড়ির পানি দূষণ রোধ ও মা মাছ নিধন রোধ কল্পে ক্যাম্পেইন করার ঘোষণা দেন এবং এলাকার পরিস্থিতি বিবেচনায় এলাকা এই জলাভূমিগুলোর পুনঃখনন ও সংরক্ষণের দাবি জানায়।

happy wheels 2

Comments