নিশ্চয়ই অতীতের চেয়ে ভবিষ্যৎ ভালো হবে
নেত্রকোণা থেকে ইছহাক উদ্দীন
প্রতিবছরের ন্যায় নেত্রকোণায় এবারও উদযাপিত হলো ১ অক্টোবর ২০১৭ আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় “ভবিষ্যৎ অগ্রসরেঃ সমাজে প্রবীণদের দক্ষতা, অবদান এবং অংশগ্রহণ নিশ্চিত করুন।” দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে দিনব্যাপি বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। কর্মসুচির মধ্যে ছিল র্যালি, আলোচনা সভা, রচনা প্রতিযোগিতা, প্রবীণদের দক্ষতা ও অবদানের উপর স্মৃতিচারণ, মমতাময়ী পুরস্কার ও প্রীতিভোজ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক ড. মো. মুশফিকুর রহমান। আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক খালিদ হোসেন, সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মতিয়র রহমান খান, ডা. আব্দুল হামিদ খান, সহকারী পরিচালক সমাজসেবা অধিদপ্তর। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রবীণ ও নবীন, সাংবাদিক, শিক্ষার্থী দরিদ্র কৃষক-কৃষাণীও উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক ড. মুশফিকুর রহমানের নেতৃত্বে একটি র্যালি পাবলিক হলের সামনে থেকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এসে শেষ হয়। সম্মেলন কক্ষে ডা. আব্দুল হামিদ সাহেবের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ড. মুশফিকুর রহমান, মতিয়র রহমান খান, খালিদ হোসেন, খন্দকার রাইসা সামাদ, সাংবাদিক শ্যামলেন্দু পাল, মোখলেছুর রহমান, মনোয়ারা হামিদ, গাজি মোজাম্মেল হক টুকু, সায়েদুর রহমান, আব্দুল ওয়াহেদ, অধ্যাপক মতিন্দ্র সরকার, মমতাময়ী প্রমূখ। আলোচনায় প্রবীণদের বিনোদন কেন্দ্র ও হাসপাতাল করার দাবির প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক মহোদয় বলেন, “যদি কোন জমিদাতা পাওয়া যায়; তবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবকাঠামো তৈরির জন্য সহযোগিতা প্রদান করা হবে।” পরবর্তীতে অনুষ্ঠানের সময়ই একজন জমি দাতাও পাওয়া যায়। সরেজমিনে পর্যবেক্ষণের পর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মতিয়র রহমান খান, চেম্বারের অব কর্মাসের সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ, প্রবীণ হিতৈষী সংঘের সাধারণ সম্পাদক সায়েদুর রহমান প্রমুখ প্রবীণরা তারা স্মৃতিচারণা করেন। তারা কিভাবে বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান যেমন-নেত্রকোণা উচ্চ বিদ্যালয়, নেত্রকোণা বালিকা বিদ্যালয়, নেত্রকোণা শিশু শিক্ষালয়, কচিকাচা বিদ্যানিকেতন, চক্ষু হাসপাতাল, ডায়াবেটিস সমিতি, কলেজ, মাদ্রাসা তৈরি করেছেন তার গল্প শোনান উপস্থিত সবাইকে। পাশপাশি তারা নতুন প্রজন্মকে সমাজসেবামূলক কাজে আরো বেশি বেশি অর্ন্তভূক্ত করার প্রাণান্তকর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, “যে কয়টা দিন বেঁচে থাকবো অন্তত সমাজের জন্য কিছু করে যাব।”
দিনকে দিন আমাদের চারপাশের প্রবীণরা বিভিন্ন ভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। অবহেলা, লাঞ্চনা, বঞ্চনা তো তাদের নিত্য দিনের। আবার নারী প্রবীণরা আরো বেশি মানবেতর জীবনযাপন করছে। সেক্ষেত্রে, নতুন প্রজন্মকে আরো বেশি এগিয়ে আসতে হবে। বিভিন্ন মহলে প্রবীণ বিষয়টিকে সামনে তুলে সবাইকে সচেতন হতে হবে। অন্তত নিজের জন্য কিছু করে যাই। বিশ্বাস নিয়ে কাজ করি “নিশ্চয়ই অতীতের চেয়ে ভবিষ্যত ভালো হবে।”