সচেতনতায় হলো সমস্যা সমাধানের উপায়
সাতক্ষীরার শ্যামনগর থেকে বিশ্বজিৎ মন্ডল
উপকূলীয় এলাকায় বারসিক’র উদ্যোগে ধারাবাহিক কর্মসূচির আলোকে সম্প্রতি হায়বাতপুর উপজেলা জনসংগঠন সমন্বয় কমিটি কার্যালয়ে উপকূলীয় পেশাজীবী জনসংগঠনসমূহের চলমান কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা ও মুল্যায়ন বিষয়ক ত্রৈমাসিক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় উপজেলা জনসংগঠন সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও বারসিক কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ মন্ডলের সঞ্চালনায় এবং আঞ্চলিক সমন্বয়কারী পার্থ সারথী পালের শুভেচ্ছা বক্তব্যে ও পরিচিতির মাধ্যমে সভার সুচনা হয়। সভায় প্রত্যেক পেশাজীবী জনসংগঠনের প্রতিনিধিরা তাদের চলমান কাজের অগ্রগ্রতি উপস্থাপন করেন। চলমান কর্মসূচিতে তাদের উদ্যোগ এবং কি কি বাধা তৈরি হচ্ছে এবং সে সকল বাধা অতিক্রম করতে কি ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা যায় তা পারস্পারিক আলোচনার মাধ্যমে বর্ণনা করেন।
সভায় উপকূলীয় এলাকায় ঘটে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে যে ক্ষয় ক্ষতি হয় সে সম্পর্কে জানা এবং বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সহায়তার জন্য জরুরি ভিত্তিতে সহায়তার জন্য ডিয়াকোনিয়া সহায়তা করার কথা জানান এবং সেটি শুধু মাত্র বুড়িগোয়ালিনী ও পদ্মপুকুর ইউনিয়নে করা হবে। তার জন্য জনসংগঠনের সকলের সহায়তা করার কথা জানানো হয়। সভায় পেশাজীবী ২৯টি সংগঠনের প্রতিনিধি, উপজেলা জনসংগঠন সমন্বয় কমিটির প্রতিনিধি, বারসিক কর্মকর্তা, স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি এবং বারসিক’র ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যসহ মোট ৪০ জন অংশগ্রহণ করেন।
সভায় অংশগ্রহণকারী জাওয়াখালী কৃষি নারী সংগঠনের সভানেত্রী নাজমুন্নাহার বলেন, ‘আমরা এখানে নতুন ও পুরাতন সংগঠনের প্রতিনিধিরা আছি। আমরা সবাই সবার কাজ সম্পর্কে ধারণা পাচ্ছি। আমরা আমাদের নিজেদের প্রয়োজনে সংগঠন তৈরি করেছি। এছাড়াও পুরাতন যেসব সংগঠন আছে তাদের অনুপ্রেরণায় আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। প্রত্যেক সংগঠনের ছোট বড় নানা ধরনের সমস্যা আছে আমরা সকলের পরামর্শ তা সমাধান করার চেষ্টা করবো। এর জন্য আমাদের আরো আন্তরিক হতে হবে।’
কৈখালী কৃষক সংগঠনের সভাপতি মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা সংগঠনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক সম্পদ টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছি। কৈখালীতে স্থানীয় মৎস্য ব্যাংক আছে সেটাকে টিকিয়ে রাখা এবং সম্প্রসারণের জন্য প্রশাসনের সহায়তা দরকার। কোন সংগঠন যদি স্থানীয় মৎস্য ব্যাংক করতে চায় সেখানে আমরা স্থানীয় মাছ দিয়ে সহায়তা করবো।’
অংশগ্রহণকারী নাজমা বেগম, রোজিনা বেগমরা জানান, তারা যে এলাকায় বাস করেন সেখানে সবসময় নানান ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ লেগে থাকে। বিগত সময় ঘূর্ণিঝড় ফনি ও বুলবুলের কারণে তাদের ফসলের ও গাছপালায় ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। আমরা সংগঠনের মাধ্যমে বীজ সংরক্ষণ রাখেন কিন্তু বুলবুলের কারণে বীজ হারিয়ে গেছে। সব ফসলের ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। এখন তাদের বীজ দরকার। বীজ পেলে তারা আবার বীজ সংরক্ষণ করতে পারবো।’
উপজেলা জনসংগঠন সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কুমুদ রঞ্জন গায়েন ও ইউপি সদস্য দেলোয়ারা বেগম বলেন, ‘আমাদের এখন প্রধান কাজ হবে প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ রাখা। এখন বিভিন্ন ধরনের ভাতার কার্ডগুলো তৈরি হচ্ছে কারো কোন সমস্যা হলে আমাদেরকে বলা আমরা একত্রিত হয়ে তা প্রশাসনকে জানাবো। এছাড়াও খাল পুনঃখনন, জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, পাইপ স্থাপন, সুপেয় পানির পুকুর ও পিএসএফ সংস্কার, সংগঠনের রেজিেিস্ট্রশন, সংগঠনের প্রয়োজনীয় তথ্যাদি হালনাগাদকরণ, বিভিন্ন ভাতা কার্ড প্রাপ্তি, শীত বস্ত্র সহায়তা, লবণ পানি অপসারণ, বনায়ন তৈরি, বেড়িবাঁধ সংস্কার করা এই যে সমস্যাগুলো উঠে এসেছে তা কারো একার পক্ষে সমাধান করা সম্ভব নয়।’